বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কলকাতা ভ্রমণের স্বাদ-বেস্বাদ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪৯:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
  • ৩৯ Time View
সম্পাদকীয়
এটাই আমার কলকাতা  ভ্রমণের  প্রথম অভিজ্ঞতা তথা দেশের বাহিরে ঘুরতে যাওয়া। ইন্ডিয়ার ভিসাটা করেছিলাম নিতান্তই চিকিৎসার জন্য। পাশা পাশি দেশটি দেখা এবং তাদের কৃষ্টিকালচার সমপেের্ক জানার আগ্রহ থেকেই। যদিও সমাজবিজ্ঞানের একজন শিক্ষক হিসাবে তাদের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত আছি বহু আগে থেকেই। তবুও বাস্তব অভিঙ্গতাটা হাত ছাড়া করতে চাইনি কিছুতেই। আমাদের ৮ জনের একটা টুরকোম্পানী আছে সুযোগ পেলেই ছুটে যাই দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। পেশায় সবাই শিক্ষক। বলতে পারেন ভ্রমন পিঁঁপাসুু তারুন্য নির্ভর একটা চমৎকার দল। বয়সে আমি দুই এক বছরের বড় হলেও মিশে যাই বন্ধুর মতই। যেন একই পরিবারের সদস্য আমরা। সুখে-দু:খে সর্বদাই একে অপরের পাশাপাশি থাকার চেষ্টা করি সারাক্ষণ।
 তবে এসবের নেতৃত্বে অবশ্য থাকেন বি সি এস এস সরকারী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাসিবুল ইসলাম মিলন এবং খুবজীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আনিসুর রহমান। এবারের ভ্রমনে অনান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন গুরুদাসপুর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.জাহাঙ্গর আলম মিঠু, গোলাম মোসÍফা কামাল বিএসসি সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম,বুুলবুল আহাম্মেদ,নাজমুল ইসলাম,আছাদুজ্জান প্রমুখ্য। যাই হোক প্রথমেই বলে নেই  কলকাতায় খুব গরম পরেছিল। তাই অভিজ্ঞতাটা ছিল খুবই বাজে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমনিতেই  গরম সহ্য করতে পারিনা,তার উপর কলকাতার গরমটা ছিল অসহনীয়। ভ্রমনে সফর সংঙ্গী ছিলাম আমরা ৭ জন। প্রধান শিক্ষক ট্রপি বাই অবশ্য ব্যক্তিগত কাজের কারনে যেতে পারেনী আমাদের সাথে।
 যা হোক আমরা সিদ্ধানÍ নিয়েছিলাম ট্রেনে করে যাবো কলকাতায়। যথারীতি সরকারী জোহা কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান মাধব স্যার এবং গনিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজুর রহমান স্যার নাটোর  থেকে সরাসরি কলকাতা যাওয়া জন্য একজন ভদ্রলোকের সাহায্যে টিকেট কেটে ফেললেন। পাসপোর্টে “গেঁদে  বর্ডার উল্লেখ করা ছিলো। তাই গেঁদে বন্দর দিয়েই কলকাতা যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। অতপর সিদ্ধান্ত মোতাবেক নাটোর রেলষ্টেশান কাউন্টার থেকে কলকাতায় যাওযার জন্য টিকিট কনফার্ম করি।
যথারীতি  রাত ১১ টায় ট্রেন ছেড়ে দিলো কলকাতার উদ্দেশ্যে। ভালোই লাগছিল ট্রেন  ভ্র্রমনটি। স্টপেজ ছিল খুব কম। একদম ভোর ৫ টায় চুুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্টেশানে পৌছাল। সেখানে একটা হোষ্টেল ভাড়া নিলাম তিন ঘন্টার জন্য। জাস্ট বিশ্রাম এবং ফ্রেশ হবার জন্য। অতপর বর্ডার পার হবার যাবতীয় প্রস্তুুতি নিয়ে নিলাম।
 প্রথম ভ্রমন হওয়ার কারণে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দাড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষন। অতপর মাধব স্যার বললেন  ইমিগ্রেশান ও কাষ্টমস করাতে হবে। অবশ্য স্যারের ওখানে যাবার অভিজ্ঞা আগে থেকেই আছে। যাহোক পাসপোর্ট  থেকে দেওয়া ৭ টি ফরম নিয়ে পূরন করলাম। এবং সেগুলো নিয়ে লাইন ধরে ইমিগ্রিশন অফিসার এর হাতে দিলাম। তিনি আমাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি করেন ? আমি বললাম শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করি। তিনি আমার একটা ছবি তুললো এবং একটা সিল মেরে দিলো। ব্যাস কাজ শেষ। বাংলাদেশ এর সীমানা পেরিয়ে ইন্ডিয়া চলে গেলাম হেটে হেটে। ইন্ডিয়া যাওয়ার পর সর্বপ্রথম লাইন ধরে দুইজন পুুলিশ অফিসার পাসপোর্ট চেক করলো সবার।
চেকিং শেষে আবার সিরিয়াল ধরলাম ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে। তিনি পাসপোর্ট চেক করে একটা সীল মেরে দিলো। যাতে করে আমরা নিরাপদে ইন্ডিয়া ঘুরে বেড়াতে পারি। ইন্ডিয়া পৌছানোর পর পেয়ারলেস হাসপাতালের পাশেই বঙ্গবন্ধু গেস্ট হাউজে উঠলাম। হোস্টেলটা বেশ ভালোই লেগেছিলো। মাত্র দুই হাজার টাকায় ডাবল বেডের দুইটা রুম নিলাম। এর পর গোসল করে ফ্রেশ হয়ে পেয়ারলেস হাসপাতালে গেলাম। চিকিৎসার প্রস্তুতি নিতেই শুরু হলো প্রচন্ড বৃষ্টি। রিসিপশানে বসা একজন সুন্দরী মহিলা আমাকে বলেলন, দাদা আপনারা নিশ্চই বাংলাদেশ থেকে আসলেন? বললাম হুম। ভদ্র মহিলা টি হেসে বলেলন বাহ! আপনারা শান্তির বার্তা নিয়ে আসলেন, অনেকদিন যাবৎ বৃষ্টি নেই। আপনারা আসলেন বৃষ্টিও শুরু হলো। যাহোক হাসপাতালের কাজ সাময়িক শেষ করে বেড়িয়ে পরলাম কেনা কাটা করতে প্রথমে বিগ বাজার অতপর নিউ মার্কেট সহ বেশ কিছু বাজারে ইচ্ছেমত কেনাকাটা করলাম। একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি দশ হাজার টাকার শপিং করলে তিন হাজার টাকা মূল্যের ব্যাগ ফ্রি কথাটি অবশ্য আনিস স্যারই আমাকে জানান। শুনেই আনিস স্যারের পিছু নিলাম। যথারিীতি কেনাকাটাও শেষ করলাম। অবশেষে ঘোড়ার ডিম ৩শ টাকার ১টা ব্যাগ ফ্রি। হায়রে কপাল পরে জানলাম কুড়ি হাজার  টাকার জিনিস কিনলে ঐ ব্যগ ফ্রি। পরে দোকান্দারকে কিছু না বলে আনিস স্যারের সাথে বাগযুদ্ধ শেষ করে হোস্টেলে ফিরলাম। পরের দিন গেলাম  হাওরা ব্রীজ। সারা দিন অসাধারন একটা সময় কাটালাম। আবারও কেনাকাটা ১টা প্যান্ট কিনলে আরেকটা ফ্রি সুন্দর দেখে দুইটা প্যান্ট নিলাম। এবার দায়িত্বটা দিলাম কামাাল ভাগিনার হাতে হুম যা হবার তাই হলো কিনলাম নতুন প্যান্ট গেস্ট হাউজে এসে দেখি পশ্চিমাদের ড্রেস তার মানে দুইটা ছেড়া তালি যুক্ত ফাটা প্যান্ট। যাই হোক ভাগিনা হিসাবে মাপ করেদিলাম। দেখলাম এখানেও বাংলাদেশের প্রভাব কিছুটা রয়েগেছে।
কলকাতার  রাস্তা ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর জ্যামজটও  মুক্ত । সাতদিনে এক সেকেন্ডের জন্যও বিদুৎ বিছিন্ন হয়নী। সবই ঠিকঠাক ছিল। দুএকজন বাটপার ছাড়া কোন চোর ডাকাত চোখে পড়েনি। ওদের দেশ প্রেম দেখে আমি অভিভুত হয়েছি। পৃথিবীতে এমন দেশ প্রেমিক জনসাধারন আর কয়টি দেশে আছে আামার জানা নেই। প্রবল দেশ প্রেম আছে ওদের মধ্যে। দেশ বা জাতি বিরোধী কোন কথা বললেই খবর আছে।
তবুও বলি কি, যদি সংস্কৃতি দেখার জন্য ভারতে যান তবে ঠিক আছে। কারণ ওই দেশ ঘুড়লে নাকি গোটা পৃথিবীর সাংস্কৃতির দেখা মিলবে। যদি ভালো লাগার জন্য যান তবে আমি বলবো বাংলাদেশটা আগে ঘুরে ঘুরে দেখুন। কলকাতার মানুষ বাংলাদেশের মানুষর চেয়েও জঘন্য এখানকার অধিকাংশ লোক বদমেজাজী বেয়াদপ ট্ইাপের বাংলাদেশের মানুষের অতিথীয়তা  আর তাদের ব্যবহার রাতদিন পার্থক্য। বাংলাদেশ অনেক সুন্দর একটা দেশ। সেটা কলকাতা গিয়ে অনুভব করেছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা আমার কাছে মনে  হয়েছে সেটা হলো খাবার দাবারের। ওখানকার খাবারের সাথে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না একেবারেই। এক হোটেলে বললাম খাসি দিতে। কিযে দিলো ঠিক বুঝতে উঠতে পারলাম না। সেই মাংসে কামড় দেওয়ার পর দুই দিন শুধু জয়টিপস খেয়ে ছিলাম। উপায় ছিলো না। আমরা গরমের কারনে দূরে কোথাও যাই নাই। নয়তো ভালো লাগলে কাশমির, দার্জির্লি অবশ্যই যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো। সব মিলিয়ে ভ্রমন আমার মন মতো হয়নি। মনকে বুঝ দিলাম  প্রথমবারের মত কলকাতা এসেছি। মশা আর ছাড়পোকাদের না হয় একটু ফ্রী খাবার দিয়ে গেলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম দাদাদের দেশে মনে হয় আমরা বড্ড বেমানান।
প্রভাষক  মো.মাজেম আলী মলিন বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান) রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজ, সভাপতি গুরুদাসপুর মডেল প্রেসক্লাব, প্রকাশক ও সম্পাদক দৈনিক বনলতা,চেয়ারম্যান বনলতা টিভি গুরুদাসপপুর,নাটোর।

Tag :
Popular Post

গরমে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

কলকাতা ভ্রমণের স্বাদ-বেস্বাদ

Update Time : ০১:৪৯:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
সম্পাদকীয়
এটাই আমার কলকাতা  ভ্রমণের  প্রথম অভিজ্ঞতা তথা দেশের বাহিরে ঘুরতে যাওয়া। ইন্ডিয়ার ভিসাটা করেছিলাম নিতান্তই চিকিৎসার জন্য। পাশা পাশি দেশটি দেখা এবং তাদের কৃষ্টিকালচার সমপেের্ক জানার আগ্রহ থেকেই। যদিও সমাজবিজ্ঞানের একজন শিক্ষক হিসাবে তাদের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত আছি বহু আগে থেকেই। তবুও বাস্তব অভিঙ্গতাটা হাত ছাড়া করতে চাইনি কিছুতেই। আমাদের ৮ জনের একটা টুরকোম্পানী আছে সুযোগ পেলেই ছুটে যাই দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। পেশায় সবাই শিক্ষক। বলতে পারেন ভ্রমন পিঁঁপাসুু তারুন্য নির্ভর একটা চমৎকার দল। বয়সে আমি দুই এক বছরের বড় হলেও মিশে যাই বন্ধুর মতই। যেন একই পরিবারের সদস্য আমরা। সুখে-দু:খে সর্বদাই একে অপরের পাশাপাশি থাকার চেষ্টা করি সারাক্ষণ।
 তবে এসবের নেতৃত্বে অবশ্য থাকেন বি সি এস এস সরকারী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাসিবুল ইসলাম মিলন এবং খুবজীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আনিসুর রহমান। এবারের ভ্রমনে অনান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন গুরুদাসপুর সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.জাহাঙ্গর আলম মিঠু, গোলাম মোসÍফা কামাল বিএসসি সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম,বুুলবুল আহাম্মেদ,নাজমুল ইসলাম,আছাদুজ্জান প্রমুখ্য। যাই হোক প্রথমেই বলে নেই  কলকাতায় খুব গরম পরেছিল। তাই অভিজ্ঞতাটা ছিল খুবই বাজে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমনিতেই  গরম সহ্য করতে পারিনা,তার উপর কলকাতার গরমটা ছিল অসহনীয়। ভ্রমনে সফর সংঙ্গী ছিলাম আমরা ৭ জন। প্রধান শিক্ষক ট্রপি বাই অবশ্য ব্যক্তিগত কাজের কারনে যেতে পারেনী আমাদের সাথে।
 যা হোক আমরা সিদ্ধানÍ নিয়েছিলাম ট্রেনে করে যাবো কলকাতায়। যথারীতি সরকারী জোহা কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান মাধব স্যার এবং গনিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজুর রহমান স্যার নাটোর  থেকে সরাসরি কলকাতা যাওয়া জন্য একজন ভদ্রলোকের সাহায্যে টিকেট কেটে ফেললেন। পাসপোর্টে “গেঁদে  বর্ডার উল্লেখ করা ছিলো। তাই গেঁদে বন্দর দিয়েই কলকাতা যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। অতপর সিদ্ধান্ত মোতাবেক নাটোর রেলষ্টেশান কাউন্টার থেকে কলকাতায় যাওযার জন্য টিকিট কনফার্ম করি।
যথারীতি  রাত ১১ টায় ট্রেন ছেড়ে দিলো কলকাতার উদ্দেশ্যে। ভালোই লাগছিল ট্রেন  ভ্র্রমনটি। স্টপেজ ছিল খুব কম। একদম ভোর ৫ টায় চুুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্টেশানে পৌছাল। সেখানে একটা হোষ্টেল ভাড়া নিলাম তিন ঘন্টার জন্য। জাস্ট বিশ্রাম এবং ফ্রেশ হবার জন্য। অতপর বর্ডার পার হবার যাবতীয় প্রস্তুুতি নিয়ে নিলাম।
 প্রথম ভ্রমন হওয়ার কারণে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দাড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষন। অতপর মাধব স্যার বললেন  ইমিগ্রেশান ও কাষ্টমস করাতে হবে। অবশ্য স্যারের ওখানে যাবার অভিজ্ঞা আগে থেকেই আছে। যাহোক পাসপোর্ট  থেকে দেওয়া ৭ টি ফরম নিয়ে পূরন করলাম। এবং সেগুলো নিয়ে লাইন ধরে ইমিগ্রিশন অফিসার এর হাতে দিলাম। তিনি আমাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি করেন ? আমি বললাম শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করি। তিনি আমার একটা ছবি তুললো এবং একটা সিল মেরে দিলো। ব্যাস কাজ শেষ। বাংলাদেশ এর সীমানা পেরিয়ে ইন্ডিয়া চলে গেলাম হেটে হেটে। ইন্ডিয়া যাওয়ার পর সর্বপ্রথম লাইন ধরে দুইজন পুুলিশ অফিসার পাসপোর্ট চেক করলো সবার।
চেকিং শেষে আবার সিরিয়াল ধরলাম ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে। তিনি পাসপোর্ট চেক করে একটা সীল মেরে দিলো। যাতে করে আমরা নিরাপদে ইন্ডিয়া ঘুরে বেড়াতে পারি। ইন্ডিয়া পৌছানোর পর পেয়ারলেস হাসপাতালের পাশেই বঙ্গবন্ধু গেস্ট হাউজে উঠলাম। হোস্টেলটা বেশ ভালোই লেগেছিলো। মাত্র দুই হাজার টাকায় ডাবল বেডের দুইটা রুম নিলাম। এর পর গোসল করে ফ্রেশ হয়ে পেয়ারলেস হাসপাতালে গেলাম। চিকিৎসার প্রস্তুতি নিতেই শুরু হলো প্রচন্ড বৃষ্টি। রিসিপশানে বসা একজন সুন্দরী মহিলা আমাকে বলেলন, দাদা আপনারা নিশ্চই বাংলাদেশ থেকে আসলেন? বললাম হুম। ভদ্র মহিলা টি হেসে বলেলন বাহ! আপনারা শান্তির বার্তা নিয়ে আসলেন, অনেকদিন যাবৎ বৃষ্টি নেই। আপনারা আসলেন বৃষ্টিও শুরু হলো। যাহোক হাসপাতালের কাজ সাময়িক শেষ করে বেড়িয়ে পরলাম কেনা কাটা করতে প্রথমে বিগ বাজার অতপর নিউ মার্কেট সহ বেশ কিছু বাজারে ইচ্ছেমত কেনাকাটা করলাম। একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি দশ হাজার টাকার শপিং করলে তিন হাজার টাকা মূল্যের ব্যাগ ফ্রি কথাটি অবশ্য আনিস স্যারই আমাকে জানান। শুনেই আনিস স্যারের পিছু নিলাম। যথারিীতি কেনাকাটাও শেষ করলাম। অবশেষে ঘোড়ার ডিম ৩শ টাকার ১টা ব্যাগ ফ্রি। হায়রে কপাল পরে জানলাম কুড়ি হাজার  টাকার জিনিস কিনলে ঐ ব্যগ ফ্রি। পরে দোকান্দারকে কিছু না বলে আনিস স্যারের সাথে বাগযুদ্ধ শেষ করে হোস্টেলে ফিরলাম। পরের দিন গেলাম  হাওরা ব্রীজ। সারা দিন অসাধারন একটা সময় কাটালাম। আবারও কেনাকাটা ১টা প্যান্ট কিনলে আরেকটা ফ্রি সুন্দর দেখে দুইটা প্যান্ট নিলাম। এবার দায়িত্বটা দিলাম কামাাল ভাগিনার হাতে হুম যা হবার তাই হলো কিনলাম নতুন প্যান্ট গেস্ট হাউজে এসে দেখি পশ্চিমাদের ড্রেস তার মানে দুইটা ছেড়া তালি যুক্ত ফাটা প্যান্ট। যাই হোক ভাগিনা হিসাবে মাপ করেদিলাম। দেখলাম এখানেও বাংলাদেশের প্রভাব কিছুটা রয়েগেছে।
কলকাতার  রাস্তা ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর জ্যামজটও  মুক্ত । সাতদিনে এক সেকেন্ডের জন্যও বিদুৎ বিছিন্ন হয়নী। সবই ঠিকঠাক ছিল। দুএকজন বাটপার ছাড়া কোন চোর ডাকাত চোখে পড়েনি। ওদের দেশ প্রেম দেখে আমি অভিভুত হয়েছি। পৃথিবীতে এমন দেশ প্রেমিক জনসাধারন আর কয়টি দেশে আছে আামার জানা নেই। প্রবল দেশ প্রেম আছে ওদের মধ্যে। দেশ বা জাতি বিরোধী কোন কথা বললেই খবর আছে।
তবুও বলি কি, যদি সংস্কৃতি দেখার জন্য ভারতে যান তবে ঠিক আছে। কারণ ওই দেশ ঘুড়লে নাকি গোটা পৃথিবীর সাংস্কৃতির দেখা মিলবে। যদি ভালো লাগার জন্য যান তবে আমি বলবো বাংলাদেশটা আগে ঘুরে ঘুরে দেখুন। কলকাতার মানুষ বাংলাদেশের মানুষর চেয়েও জঘন্য এখানকার অধিকাংশ লোক বদমেজাজী বেয়াদপ ট্ইাপের বাংলাদেশের মানুষের অতিথীয়তা  আর তাদের ব্যবহার রাতদিন পার্থক্য। বাংলাদেশ অনেক সুন্দর একটা দেশ। সেটা কলকাতা গিয়ে অনুভব করেছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা আমার কাছে মনে  হয়েছে সেটা হলো খাবার দাবারের। ওখানকার খাবারের সাথে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না একেবারেই। এক হোটেলে বললাম খাসি দিতে। কিযে দিলো ঠিক বুঝতে উঠতে পারলাম না। সেই মাংসে কামড় দেওয়ার পর দুই দিন শুধু জয়টিপস খেয়ে ছিলাম। উপায় ছিলো না। আমরা গরমের কারনে দূরে কোথাও যাই নাই। নয়তো ভালো লাগলে কাশমির, দার্জির্লি অবশ্যই যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো। সব মিলিয়ে ভ্রমন আমার মন মতো হয়নি। মনকে বুঝ দিলাম  প্রথমবারের মত কলকাতা এসেছি। মশা আর ছাড়পোকাদের না হয় একটু ফ্রী খাবার দিয়ে গেলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম দাদাদের দেশে মনে হয় আমরা বড্ড বেমানান।
প্রভাষক  মো.মাজেম আলী মলিন বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান) রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজ, সভাপতি গুরুদাসপুর মডেল প্রেসক্লাব, প্রকাশক ও সম্পাদক দৈনিক বনলতা,চেয়ারম্যান বনলতা টিভি গুরুদাসপপুর,নাটোর।