শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“আমার প্রিয় ক্যাম্পাস”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:২২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
  • ১৫৭ Time View

মাশরুবা আক্তার

 উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষ। সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা আর ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচয় হওয়ার এক স্মরণীয় দিন। অনেক উৎফুল্লতার সাথে অতিবাহিত হচ্ছিল একেকটি দিন। লিখতে গিয়ে বারবার হারিয়ে যাচ্ছিলাম সেই স্বর্ণালী দিনের পৃষ্ঠায়। আবার যদি ফিরে পেতাম সেই বর্ণীল দিনগুলো?

নাহ্ তাই কি আর ফিরে পাওয়া যায়। যেটা যায় তাকে আর কথনোই ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। এটা যে প্রকৃতির খেলা। যাহোক আজ যা লিখতে বসেছি জীবনের সেই বাঁধহীন, চঞ্চলতা, স্বর্ণে মোড়ানো আমার কলেজ স্মৃতি। আমার বর্ণীল শিক্ষা জীবনের একটা অংশ কেটেছিল গুরুদাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজে।

আমি পেয়েছিলাম শিক্ষকদের অতুলনীয় ভালবাসা, উৎসাহ, সহযোগিতা আর অনুপ্রেরনা। আজ আমার কলম চাইছে আমার প্রতিটি প্রিয় শিক্ষকের কথা লিখতে। জীবনের প্রথম লেখা তাই লিখতে গিয়ে সব কিছু গুলিয়ে ফেলছি বারবার। আজ লিখতে যা”্ছি সেই কলেজ নিয়ে যে কলেজের স্মৃতি আমায় পেছন থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে সারাক্ষণ। যে কলেজের ইট-পাথরের মায়ায় আজো বাঁধা পরে আছে এই মন। সেই কলেজের  আমার প্রিয় শিক্ষকগুলো সদা হাস্যজ্জো¡ল, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিমনা, সমাজের, কলেজের নতুন কিম্বা পুরনো হাজারো শিক্ষার্থীর প্রিয় শিক্ষক গুলোর কথা আজ মনে পরছে শত-সহস্র বার।

কথাটি অবশ্য সবারই জানা একটি বৃক্ষের চারা রোপনের পর যথেষ্ট যতেœর মাধ্যমেই তা একসময় বড় হয়। তেমনি এই কলেজের প্রতিটি দায়িত্বশীল শিক্ষকের ভালবাসা ও নিষ্ঠায় কলেজের প্রতিটি কাজ গুছিয়ে সঠিকভাবে পালন করে এ কলেজটিকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টায় সফল হওয়ার চেষ্টা করছেন আমার শিক্ষকেরা। প্রতিটি শিক্ষকই ঠিকমত পাঠদান,খেলাধুলা, বির্তকঅনুষ্ঠান,বিনোদন, ভালবাসা,দোয়া আর আশির্বাদ দিয়ে পরিপূর্ণতা দান করেছেন আমার শিক্ষা জীবনকে। তাদের অবদান অপরিসীম। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন তাদের স্থান আমার হৃদয়ে সম্মান আর শ্রদ্ধার সাথে চিরদিনই একইভাবে অটুট থাকবে।

হয়তো সময়ের প্রবাহমান স্রোতের অতলে একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে জীবনের অনিন্দ্য সুন্দর দিনগুলো। স্মৃতির এ্যালবাম ভারী হচ্ছে জীবন থেকে বিয়োগ হওয়া স্বর্ণালী দিনগুলো দিয়ে। জীবনের বহুরৈখিক পথে শিক্ষাজীবন এক সমুজ্জ্বল অধ্যায়। সময়ের পরিক্রমায় হয়তো জীবনের প্রেক্ষাপট বদলায় তবু রয়ে যায় কিছু সাদা-কালো স্মৃতি হৃদয়পটে। সময় যেন এক প্রবাহমান মহাসমুদ্র। পৃথিবী নামক গ্রহে সবচেয়ে নিষ্ঠুর জিনিস হল “সময়”।সময়ের অতলে এক সময় সবকিছুই হারিয়ে যাবে পরে রবে শুধুই স্মৃতি আর কিছু বিস্মৃতি। কথা গুলো যখন লিখছিলাম তখন মনের অজান্তেই চোখের কোনে শত অশ্রুকণার আনাগোনা টের পেলাম। সেই প্রিয় কলেজ ভবন, হোস্টেল, বর্ণীল ফুলের বাগানটা বারবার আমায় হাত ছানি দিয়ে ডাকছিল মনের কণে শত প্রশ্ন তোমরা কি সত্যি ভুলে গেছে আমায়? নাকি আমার শুন্যতায় বিষন্নতায় স্থবির হয়ে আছে? নাকি কি তোমরাও অতীতকে ভেবে গুমরে গুমরে কাঁদস সকলের অগোচরে?

“হে আমার স্বপ্নের রাজমহল, হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার ক্যাম্পাস, আমার স্মৃতির পৃষ্ঠায় এক স্বর্ণালী অধ্যায়। বেঁচে থাক শত সহস্র বছর আপন মহিমায় আর রং ছড়াতে থাক চলনবিলের পিছিয়ে পরা নারী উচ্চ শিক্ষার বাতিঘর হিসাবে।”

লেখক-মাশরুবা  অনার্স তৃতীয় বর্ষ

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা সরকারি অনার্স কলেজ।

 বনপাড়া, নাটোর।

Tag :

“আমার প্রিয় ক্যাম্পাস”

Update Time : ০৩:২২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০

মাশরুবা আক্তার

 উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষ। সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা আর ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচয় হওয়ার এক স্মরণীয় দিন। অনেক উৎফুল্লতার সাথে অতিবাহিত হচ্ছিল একেকটি দিন। লিখতে গিয়ে বারবার হারিয়ে যাচ্ছিলাম সেই স্বর্ণালী দিনের পৃষ্ঠায়। আবার যদি ফিরে পেতাম সেই বর্ণীল দিনগুলো?

নাহ্ তাই কি আর ফিরে পাওয়া যায়। যেটা যায় তাকে আর কথনোই ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। এটা যে প্রকৃতির খেলা। যাহোক আজ যা লিখতে বসেছি জীবনের সেই বাঁধহীন, চঞ্চলতা, স্বর্ণে মোড়ানো আমার কলেজ স্মৃতি। আমার বর্ণীল শিক্ষা জীবনের একটা অংশ কেটেছিল গুরুদাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজে।

আমি পেয়েছিলাম শিক্ষকদের অতুলনীয় ভালবাসা, উৎসাহ, সহযোগিতা আর অনুপ্রেরনা। আজ আমার কলম চাইছে আমার প্রতিটি প্রিয় শিক্ষকের কথা লিখতে। জীবনের প্রথম লেখা তাই লিখতে গিয়ে সব কিছু গুলিয়ে ফেলছি বারবার। আজ লিখতে যা”্ছি সেই কলেজ নিয়ে যে কলেজের স্মৃতি আমায় পেছন থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে সারাক্ষণ। যে কলেজের ইট-পাথরের মায়ায় আজো বাঁধা পরে আছে এই মন। সেই কলেজের  আমার প্রিয় শিক্ষকগুলো সদা হাস্যজ্জো¡ল, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিমনা, সমাজের, কলেজের নতুন কিম্বা পুরনো হাজারো শিক্ষার্থীর প্রিয় শিক্ষক গুলোর কথা আজ মনে পরছে শত-সহস্র বার।

কথাটি অবশ্য সবারই জানা একটি বৃক্ষের চারা রোপনের পর যথেষ্ট যতেœর মাধ্যমেই তা একসময় বড় হয়। তেমনি এই কলেজের প্রতিটি দায়িত্বশীল শিক্ষকের ভালবাসা ও নিষ্ঠায় কলেজের প্রতিটি কাজ গুছিয়ে সঠিকভাবে পালন করে এ কলেজটিকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টায় সফল হওয়ার চেষ্টা করছেন আমার শিক্ষকেরা। প্রতিটি শিক্ষকই ঠিকমত পাঠদান,খেলাধুলা, বির্তকঅনুষ্ঠান,বিনোদন, ভালবাসা,দোয়া আর আশির্বাদ দিয়ে পরিপূর্ণতা দান করেছেন আমার শিক্ষা জীবনকে। তাদের অবদান অপরিসীম। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন তাদের স্থান আমার হৃদয়ে সম্মান আর শ্রদ্ধার সাথে চিরদিনই একইভাবে অটুট থাকবে।

হয়তো সময়ের প্রবাহমান স্রোতের অতলে একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে জীবনের অনিন্দ্য সুন্দর দিনগুলো। স্মৃতির এ্যালবাম ভারী হচ্ছে জীবন থেকে বিয়োগ হওয়া স্বর্ণালী দিনগুলো দিয়ে। জীবনের বহুরৈখিক পথে শিক্ষাজীবন এক সমুজ্জ্বল অধ্যায়। সময়ের পরিক্রমায় হয়তো জীবনের প্রেক্ষাপট বদলায় তবু রয়ে যায় কিছু সাদা-কালো স্মৃতি হৃদয়পটে। সময় যেন এক প্রবাহমান মহাসমুদ্র। পৃথিবী নামক গ্রহে সবচেয়ে নিষ্ঠুর জিনিস হল “সময়”।সময়ের অতলে এক সময় সবকিছুই হারিয়ে যাবে পরে রবে শুধুই স্মৃতি আর কিছু বিস্মৃতি। কথা গুলো যখন লিখছিলাম তখন মনের অজান্তেই চোখের কোনে শত অশ্রুকণার আনাগোনা টের পেলাম। সেই প্রিয় কলেজ ভবন, হোস্টেল, বর্ণীল ফুলের বাগানটা বারবার আমায় হাত ছানি দিয়ে ডাকছিল মনের কণে শত প্রশ্ন তোমরা কি সত্যি ভুলে গেছে আমায়? নাকি আমার শুন্যতায় বিষন্নতায় স্থবির হয়ে আছে? নাকি কি তোমরাও অতীতকে ভেবে গুমরে গুমরে কাঁদস সকলের অগোচরে?

“হে আমার স্বপ্নের রাজমহল, হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার ক্যাম্পাস, আমার স্মৃতির পৃষ্ঠায় এক স্বর্ণালী অধ্যায়। বেঁচে থাক শত সহস্র বছর আপন মহিমায় আর রং ছড়াতে থাক চলনবিলের পিছিয়ে পরা নারী উচ্চ শিক্ষার বাতিঘর হিসাবে।”

লেখক-মাশরুবা  অনার্স তৃতীয় বর্ষ

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা সরকারি অনার্স কলেজ।

 বনপাড়া, নাটোর।