শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নাসিরাবাদ থেকে পটিয়া— একের ভুলে ৯ জনের বিপদ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৫৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
  • ১১২ Time View

একই পরিবারের ৯ সদস্য করোনা ভাইরাসের শিকার হলেন চট্টগ্রামের পটিয়ায়। এর মধ্যে তিন মাস বয়সী এক শিশু সারা দেশে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী করোনা পজিটিভ রোগী। রয়েছে ৮ মাসের আরেক শিশুও। পটিয়ার কামালবাজারের বাসিন্দা এই ৯ জনসহ ওই পরিবারে মোট করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল এই পরিবারের বড় ছেলে চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দপ্তরের মহাপরিচালকের পরিবারের সদস্য তারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া সন্তানটি চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় থাকেন। গত ১৩ এপ্রিল তার পিতা মারা যান পটিয়ায়। সেখানে পিতার দাফন-কাফনে অংশ নেন তিনি। এর সপ্তাহখানেক পর তিনি আবার পটিয়ার বাড়িতে যান। সেখান থেকে ফিরে ২৯ এপ্রিল তিনি করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন।

এর পরপরই পটিয়ায় তার বাড়িটি লকডাউন করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। গত ৭ মে ওই পরিবারের ১১ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৪ দিন পর সোমবার (১১ মে) ৯ জনের করোনা পজিটিভ ফলাফল আসে। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত একই পরিবারে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্য আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এটি।

পটিয়ার কামালবাজার এলাকার ওই পরিবারে ৯ সদস্যের মধ্যে রয়েছে ৮ মাস ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশু। ৮ মাস বয়সী শিশুটি সারাদেশে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী করোনা পজিটিভ রোগী। এছাড়া রয়েছেন ওই পরিবারের আরও তিন মহিলা— যাদের বয়স ২২, ৪২ ও ৬২ বছর। ১৮, ২৪ ও ৩৬ বছর বয়সী তিন পুরুষ সদস্যের শরীরেও মিলেছে করোনার জীবাণু। তাছাড়া ওই পরিবারের আরও একজন সদস্যের বয়স জানা যায়নি।

এদের মধ্যে ২৪ ও ৩৬ বছর বয়সী পুরুষ দুজন ভাই, ৬২ বছর বয়সী নারীটি তাদের মা ও ৪২ বছর বয়সী নারীটি তাদের বোন, ৩ মাস ও ১১ বছরের মেয়ে দুটি তাদের বোনের মেয়ে। ২২ বছর বয়সী নারী ও ৮ মাস বয়সী শিশুটি যথাক্রমে ৩৬ বছর বয়সী পুরুষের স্ত্রী ও কন্যা। ১৮ বছর বয়সী কিশোর ওই পরিবারের কর্মচারী।

জানা গেছে স্থানীয় কামালবাজার ও পটিয়া নিউ মার্কেটের অনেকগুলো দোকানের মালিক ওই পরিবার। আক্রান্ত পরিবারের এক সদস্য চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের বড় ভাই চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ হয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন। আমাদের কারোর কোন সিনড্রোম (উপসর্গ) নেই। বড় ভাই পজিটিভ শনাক্ত হওয়ায় আমরা নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলাম।’

করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া এই পরিবারের সকল সদস্যকে পটিয়ায় নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘উনারা আগে থেকেই লকডাউনে ছিলেন। যেহেতু কারো কোন সিম্পটম নেই, সেহেতু বাড়িতেই উনাদের আইসোলেশনে রাখা হবে।’

সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় পটিয়াতে মোট করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে ১১ জন ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি ল্যাবে ও অন্য একজন শনাক্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেকে) ল্যাবে।

বিআইটিআইডিতে শনাক্ত হওয়া অন্য দুজন হলেন পটিয়া পৌরসভা ৮ নং ওয়ার্ডের ৪৫ বছর বয়সী এক পুরুষ ও ১ নং ওয়ার্ডের কাগজীপাড়ার ৪৮ বছর বয়সী এক মহিলা। এছাড়া চমেকে শনাক্ত হওয়া অন্যজন ৫৯ বছর বয়সী এক পুরুষ।

এআরটি/সিপি

Tag :

নাসিরাবাদ থেকে পটিয়া— একের ভুলে ৯ জনের বিপদ

Update Time : ১১:৫৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০

একই পরিবারের ৯ সদস্য করোনা ভাইরাসের শিকার হলেন চট্টগ্রামের পটিয়ায়। এর মধ্যে তিন মাস বয়সী এক শিশু সারা দেশে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী করোনা পজিটিভ রোগী। রয়েছে ৮ মাসের আরেক শিশুও। পটিয়ার কামালবাজারের বাসিন্দা এই ৯ জনসহ ওই পরিবারে মোট করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল এই পরিবারের বড় ছেলে চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দপ্তরের মহাপরিচালকের পরিবারের সদস্য তারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া সন্তানটি চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় থাকেন। গত ১৩ এপ্রিল তার পিতা মারা যান পটিয়ায়। সেখানে পিতার দাফন-কাফনে অংশ নেন তিনি। এর সপ্তাহখানেক পর তিনি আবার পটিয়ার বাড়িতে যান। সেখান থেকে ফিরে ২৯ এপ্রিল তিনি করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন।

এর পরপরই পটিয়ায় তার বাড়িটি লকডাউন করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। গত ৭ মে ওই পরিবারের ১১ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৪ দিন পর সোমবার (১১ মে) ৯ জনের করোনা পজিটিভ ফলাফল আসে। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত একই পরিবারে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্য আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এটি।

পটিয়ার কামালবাজার এলাকার ওই পরিবারে ৯ সদস্যের মধ্যে রয়েছে ৮ মাস ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশু। ৮ মাস বয়সী শিশুটি সারাদেশে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী করোনা পজিটিভ রোগী। এছাড়া রয়েছেন ওই পরিবারের আরও তিন মহিলা— যাদের বয়স ২২, ৪২ ও ৬২ বছর। ১৮, ২৪ ও ৩৬ বছর বয়সী তিন পুরুষ সদস্যের শরীরেও মিলেছে করোনার জীবাণু। তাছাড়া ওই পরিবারের আরও একজন সদস্যের বয়স জানা যায়নি।

এদের মধ্যে ২৪ ও ৩৬ বছর বয়সী পুরুষ দুজন ভাই, ৬২ বছর বয়সী নারীটি তাদের মা ও ৪২ বছর বয়সী নারীটি তাদের বোন, ৩ মাস ও ১১ বছরের মেয়ে দুটি তাদের বোনের মেয়ে। ২২ বছর বয়সী নারী ও ৮ মাস বয়সী শিশুটি যথাক্রমে ৩৬ বছর বয়সী পুরুষের স্ত্রী ও কন্যা। ১৮ বছর বয়সী কিশোর ওই পরিবারের কর্মচারী।

জানা গেছে স্থানীয় কামালবাজার ও পটিয়া নিউ মার্কেটের অনেকগুলো দোকানের মালিক ওই পরিবার। আক্রান্ত পরিবারের এক সদস্য চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের বড় ভাই চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ হয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন। আমাদের কারোর কোন সিনড্রোম (উপসর্গ) নেই। বড় ভাই পজিটিভ শনাক্ত হওয়ায় আমরা নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলাম।’

করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া এই পরিবারের সকল সদস্যকে পটিয়ায় নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘উনারা আগে থেকেই লকডাউনে ছিলেন। যেহেতু কারো কোন সিম্পটম নেই, সেহেতু বাড়িতেই উনাদের আইসোলেশনে রাখা হবে।’

সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় পটিয়াতে মোট করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে ১১ জন ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি ল্যাবে ও অন্য একজন শনাক্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেকে) ল্যাবে।

বিআইটিআইডিতে শনাক্ত হওয়া অন্য দুজন হলেন পটিয়া পৌরসভা ৮ নং ওয়ার্ডের ৪৫ বছর বয়সী এক পুরুষ ও ১ নং ওয়ার্ডের কাগজীপাড়ার ৪৮ বছর বয়সী এক মহিলা। এছাড়া চমেকে শনাক্ত হওয়া অন্যজন ৫৯ বছর বয়সী এক পুরুষ।

এআরটি/সিপি