রাজশাহীতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

ফজলুল করিম বাবলু বিশেষ প্রতিবেদক রাজশাহী.
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশর প্রথম রাষ্ট্রপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন অকুতোভয় বীর সেনা। দেশ যখন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে অতিষ্ট তখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষান দেন। সেইদিন থেকে তিনি দেশের ১৬ কোটি মানুষের বত্রিশ কোটি চোখের মনি কোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। আজ শনিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ে মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে মহান স্বাধীরতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৩৯তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু এই কথাগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া ছিলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের রুপকার। তাঁর সময়পোযোগী সিদ্ধান্তের কারনে দেশে কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। তার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান সরকারও কাজ করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের এই সরকার নতুন কোন পলিসি তৈরী করতে পারেনি। শুধু কৃষিতে নয় বহির্বিশ্বের সঙ্গে কুটনৈতিক সুসম্পর্ক গড়ে তুলে দেশ থেকে শ্রমিক বিদেশে পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার পথ সগম করেন জিয়াউর রহমান। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে দেশেরে শিল্প বিপ্লব ঘটান বলে দাবি করেন মিনু।
দেশ এখন চরম বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। বর্তমান বিনা ভোটের সরকার একটি বিশেষ দিনকে ঘটা করে পালন করার জন্য করোন ভাইরাস নিয়ে মিথ্যাচর করেছিলো। সেইদিন থেকেইা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। সে সময়ে দেশে কোন করোনা ভাইরাস রোগী নাই বলে বেশ কিছুদিন মিথ্যা তথ্য জাতিকে দিয়েছে সরকার। যার ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী সনাক্ত হচ্ছে। মৃত্যুর সংখাও কম নয় বলে জানান তিনি।
মিনু আরো বলেন, প্রতিদিন যখন পাল্লা দিয়ে আক্রান্তের সংখা বাড়ছে। তখন সরকার লকডাউন তুলে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে। সকল প্রকার পরিবহন চলাচল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিস আদালত খুলে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। সরকারের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। তিনি বলেন, দেশের সব মানুষ সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেও এই সরকারের কিছুই যায় আসেনা। কারন সরকার প্রধান ও তার এমপি মন্ত্রীরাতো আর বাহিরে আসেন না। তারা ঘরেই মধ্যে বসে থেকে ভিডি কনফারেন্স করে নির্দেশনা প্রদান করে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তাদের করোনার কোন ভয় নাই। কিন্তু খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, অফিসগামী কর্তকর্তা-কর্মচারী ও সেবা গ্রহনকারীরা যে প্রতিদিন আক্রান্ত হবে সেদিকে সরকারের কোন খেয়াল নাই।
সরকার ও তার নেতাকর্মীরা দূর্নীতি করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে কোষাগার শূন্য করে ফেলেছে। এখন আর জনগণকে বসিয়ে রেখে খাওয়ানো সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়াও পূর্বে যে সকল ত্রাণ ও নগদ অর্থ জনগণকে দেয়ার জন্য সরকার দিয়েছিলেন তা তাদের দলের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছে। কর্মহীন অনেক মানুষ সরকারের এই ত্রাণ বা সুযোগ সুবিধা পায়নি বলে জানান মিনু। বক্তব্য শেষে চলমান করোনা ভাইরাসে খেটে খাওয়া কর্মহীন মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং বিশ্বের মৃত সকল মুসলমান ব্যক্তির রুহের মাগফেরাত কামনা, বেগম জিয়াসহ সকল অসুস্থ বিএনপি নেতাকর্মী, ও দেশবাসীর সুস্থতা এবং বিশ্বের সকল মানুষকে করোনার কবল থেকে মুক্তি দানের জন্য মহান আল্লাহ-তায়ালার নিকট ক্ষমা চেয়ে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানা ও শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ পারভেজ পিন্টুসহ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে বুলবুল করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে প্রতিটি মানুষকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, সাবান পানি দিয়ে বার বার হাত ধোয়া ও প্রয়োজনে হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। সেইসাথে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে না যাওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ আহবান জানান।