মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনে আবারো নতুন ভাইরাসের সন্ধান মহামারির আশঙ্কা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০
  • ৮৭ Time View

বনলতা নিউজ ডেস্ক.
চীনের গবেষকরা নতুন ধরনের সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন। এই ভাইরাসটিরও মহামারি হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন তারা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটির বাহক শূকর হলেও তা মানুষকেও আক্রান্ত করতে পারে। গবেষকদের আশঙ্কা মানুষ থেকে মানুষে সহজে ছড়িয়ে পড়তে ভাইরাসটি আরও অভিযোজিত হয়ে উঠতে পারে আর বিশ্বজুড়ে নতুন মহামারিতে পরিণত হতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মহামারির প্রার্দুভাবের জন্য দায়ী এইচওয়ানএনওয়ান প্রজাতি থেকে জি–ফোর নামের এই ভাইরাস এসেছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয় ও রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এই সমীক্ষার লেখক। তাঁরা বলছেন, মানুষকে সংক্রমিত করার মতো সব বৈশিষ্ট্য এর আছে। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গবেষকেরা চীনের ১০টি প্রদেশের কসাইখানা ও একটি পশু হাসপাতাল থেকে শূকরের নাকের শ্লেষ্মা সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে ১৭৯ সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস পাওয়া যায়। বেশির ভাগের মধ্যেই ২০১৬ সাল থেকে শূকরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের নতুন ধরন পাওয়া যায়।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে করোনাভাইরাস। ধারণা করা হয় বাদুড় থেকে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে সংক্রিমত হয়েছে। ভাইরাসটির প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ছয় মাসের মধ্যে এতে বিশ্বের এক কোটির বেশি আক্রান্ত এবং পাঁচ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মহামারিতে পরিণত হওয়া ভাইরাসটির এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক কিংবা টিকা আবিষ্কার সম্ভব হয়নি। করোনাভাইরাস মহামারি আরও দীর্ঘদিন চলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা যখন আভাস দিচ্ছেন তখনই চীনে নতুন ভাইরাস শনাক্তের খবর সামনে এলো।

চীনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, শূকর বাহিত নতুন ফ্লু ভাইরাসটির মানুষের শরীরে অভিযোজিত হওয়ার সব ধরণের লক্ষণ রয়েছে। আর নতুন ভাইরাস হওয়ায় এটি থেকে মানুষের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকবে বলেও মনে করেন তারা। এখনই ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু না থাকলেও এটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

সর্বশেষ যে ফ্লু ভাইরাসটি বিশ্বে মহামারির রূপ নেয় সেটি হলো ২০০৯ সালে মেক্সিকো থেকে ছড়িয়ে পড়া সোয়াইন ফ্লু। ভাইরাসটি যে রকম প্রাণঘাতী হবে বলে প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত সেটি ততটা মারাত্মক হতে পারেনি। এর বড় কারণ বহু বয়স্ক মানুষ আগে থেকেই এটি প্রতিরোধ করার সক্ষমতা ধারণ করতে পেরেছিলেন। সম্ভবত এর কারণ ছিল বেশ কয়েক বছর আগে থেকে ছড়িয়ে পড়া অন্য ফ্লু ভাইরাসের সঙ্গে এটির অনেক মিল ছিল। এ/এইচ১এন১পিডি০৯ নামের ওই ভাইরাসটি থেকে বর্তমানে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার হয় বার্ষিক ফ্লু ভ্যাকসিন।

Tag :

চীনে আবারো নতুন ভাইরাসের সন্ধান মহামারির আশঙ্কা

Update Time : ০৩:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০

বনলতা নিউজ ডেস্ক.
চীনের গবেষকরা নতুন ধরনের সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন। এই ভাইরাসটিরও মহামারি হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন তারা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটির বাহক শূকর হলেও তা মানুষকেও আক্রান্ত করতে পারে। গবেষকদের আশঙ্কা মানুষ থেকে মানুষে সহজে ছড়িয়ে পড়তে ভাইরাসটি আরও অভিযোজিত হয়ে উঠতে পারে আর বিশ্বজুড়ে নতুন মহামারিতে পরিণত হতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মহামারির প্রার্দুভাবের জন্য দায়ী এইচওয়ানএনওয়ান প্রজাতি থেকে জি–ফোর নামের এই ভাইরাস এসেছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয় ও রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এই সমীক্ষার লেখক। তাঁরা বলছেন, মানুষকে সংক্রমিত করার মতো সব বৈশিষ্ট্য এর আছে। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গবেষকেরা চীনের ১০টি প্রদেশের কসাইখানা ও একটি পশু হাসপাতাল থেকে শূকরের নাকের শ্লেষ্মা সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে ১৭৯ সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস পাওয়া যায়। বেশির ভাগের মধ্যেই ২০১৬ সাল থেকে শূকরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের নতুন ধরন পাওয়া যায়।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে করোনাভাইরাস। ধারণা করা হয় বাদুড় থেকে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে সংক্রিমত হয়েছে। ভাইরাসটির প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ছয় মাসের মধ্যে এতে বিশ্বের এক কোটির বেশি আক্রান্ত এবং পাঁচ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মহামারিতে পরিণত হওয়া ভাইরাসটির এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক কিংবা টিকা আবিষ্কার সম্ভব হয়নি। করোনাভাইরাস মহামারি আরও দীর্ঘদিন চলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা যখন আভাস দিচ্ছেন তখনই চীনে নতুন ভাইরাস শনাক্তের খবর সামনে এলো।

চীনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, শূকর বাহিত নতুন ফ্লু ভাইরাসটির মানুষের শরীরে অভিযোজিত হওয়ার সব ধরণের লক্ষণ রয়েছে। আর নতুন ভাইরাস হওয়ায় এটি থেকে মানুষের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকবে বলেও মনে করেন তারা। এখনই ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু না থাকলেও এটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

সর্বশেষ যে ফ্লু ভাইরাসটি বিশ্বে মহামারির রূপ নেয় সেটি হলো ২০০৯ সালে মেক্সিকো থেকে ছড়িয়ে পড়া সোয়াইন ফ্লু। ভাইরাসটি যে রকম প্রাণঘাতী হবে বলে প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত সেটি ততটা মারাত্মক হতে পারেনি। এর বড় কারণ বহু বয়স্ক মানুষ আগে থেকেই এটি প্রতিরোধ করার সক্ষমতা ধারণ করতে পেরেছিলেন। সম্ভবত এর কারণ ছিল বেশ কয়েক বছর আগে থেকে ছড়িয়ে পড়া অন্য ফ্লু ভাইরাসের সঙ্গে এটির অনেক মিল ছিল। এ/এইচ১এন১পিডি০৯ নামের ওই ভাইরাসটি থেকে বর্তমানে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার হয় বার্ষিক ফ্লু ভ্যাকসিন।