বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদের নথি তলব

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
  • ১১৭ Time View

বিশেষ প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র১৪:৩৬, ২৫ জুলাই, ২০২০ |

বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের মামলার ফাইল তলব হওয়ায় নিউইয়র্কে আনন্দ সমাবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনী ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেজর (বরখাস্ত) রাশেদ চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। প্রায় ১৫ বছর পর দেশটির আদালত তার রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের ফাইল তলব করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এই আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

১৫ বছর আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ প্রমাণিত হলে খুনী রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাকে বাংলাদেশেই ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের মামলার ফাইল তলব হওয়াকে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ফল বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি ইত্তেফাককে বলেন, রাশেদ চৌধুরী জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনী। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছেন। একজন আত্মস্বীকৃত খুনী যুক্তরাষ্ট্রের আইনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অযোগ্য। তার এ দেশে থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন সময় রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে নানান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। সেই প্রচেষ্টা সফল হতে চলেছে।

এদিকে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের মামলার ফাইল তলব হওয়ায় নিউইয়র্কে আনন্দ সমাবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের নেতা হোসেন সোহেল রানা প্রমুখ।

স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী পলিটিকো জানিয়েছে, রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় দানের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটির আইন বিভাগ। এ প্রক্রিয়ার শুরুর মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় হারাতে পারেন বঙ্গবন্ধুর এই খুনী, এমন ইঙ্গিত দিয়ে পলিটিকো বলছে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুনী রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পরে ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে অন্য আসামিদের সঙ্গে পলাতক অবস্থায় তাকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত ১২ জন কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি। এসব ঘাতকদের বিদেশ থেকে দেশে নিয়ে নিয়ে দণ্ড কার্যকর করার জোরালো দাবি জানানো হচ্ছিল।

রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সেক্রামেন্টো থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরের শহর কনকর্ডের হ্যাকলবেরি ড্রাইভে বসবাস করছেন বলে জানা যায়। তবে দীর্ঘদিন তাকে জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না। বারবার স্থান বদল করে ২০১৫ সাল থেকে তিনি কনকর্ডে বসবাস করছেন। এর আগে ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, ইলিনয় এবং মিজৌরিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বসবাস করেছেন তিনি।

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করার পথ সুগম করে। তারপর বিচারের আয়োজন করা হয়। ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দণ্ডিত আসামিদের বিরুদ্ধে রেডএলার্ট জারি করে বাংলাদেশের পুলিশ। নানান আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাশেদ চৌধুরী জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তিনি কেনিয়া, মালয়েশিয়া, জাপান ও ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাজ করেন। ১৯৯৬ সালের জুলাইয়ে বঙ্গবন্ধুর এ খুনীকে চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি দেশে না ফিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো চলে যান। এরপর তিনি দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। প্রায় দশ বছর পর অভিবাসন আদালত তার আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। ডিএইচএস’র পক্ষ থেকে বলা হয় আশ্রয় আবেদনকারী নিজ দেশে সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত, তাই সে আশ্রয় পাওয়ার অযোগ্য।

রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বারবার আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর এই বিচারের কাগজপত্র চায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের ফাইল তলব করেছে আদালত।

Tag :

১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদের নথি তলব

Update Time : ১২:১২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র১৪:৩৬, ২৫ জুলাই, ২০২০ |

বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের মামলার ফাইল তলব হওয়ায় নিউইয়র্কে আনন্দ সমাবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনী ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেজর (বরখাস্ত) রাশেদ চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। প্রায় ১৫ বছর পর দেশটির আদালত তার রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের ফাইল তলব করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এই আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

১৫ বছর আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ প্রমাণিত হলে খুনী রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাকে বাংলাদেশেই ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের মামলার ফাইল তলব হওয়াকে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ফল বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি ইত্তেফাককে বলেন, রাশেদ চৌধুরী জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনী। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছেন। একজন আত্মস্বীকৃত খুনী যুক্তরাষ্ট্রের আইনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অযোগ্য। তার এ দেশে থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন সময় রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে নানান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। সেই প্রচেষ্টা সফল হতে চলেছে।

এদিকে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের মামলার ফাইল তলব হওয়ায় নিউইয়র্কে আনন্দ সমাবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের নেতা হোসেন সোহেল রানা প্রমুখ।

স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী পলিটিকো জানিয়েছে, রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় দানের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটির আইন বিভাগ। এ প্রক্রিয়ার শুরুর মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় হারাতে পারেন বঙ্গবন্ধুর এই খুনী, এমন ইঙ্গিত দিয়ে পলিটিকো বলছে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুনী রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পরে ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে অন্য আসামিদের সঙ্গে পলাতক অবস্থায় তাকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত ১২ জন কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি। এসব ঘাতকদের বিদেশ থেকে দেশে নিয়ে নিয়ে দণ্ড কার্যকর করার জোরালো দাবি জানানো হচ্ছিল।

রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সেক্রামেন্টো থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরের শহর কনকর্ডের হ্যাকলবেরি ড্রাইভে বসবাস করছেন বলে জানা যায়। তবে দীর্ঘদিন তাকে জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না। বারবার স্থান বদল করে ২০১৫ সাল থেকে তিনি কনকর্ডে বসবাস করছেন। এর আগে ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, ইলিনয় এবং মিজৌরিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বসবাস করেছেন তিনি।

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করার পথ সুগম করে। তারপর বিচারের আয়োজন করা হয়। ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দণ্ডিত আসামিদের বিরুদ্ধে রেডএলার্ট জারি করে বাংলাদেশের পুলিশ। নানান আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাশেদ চৌধুরী জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তিনি কেনিয়া, মালয়েশিয়া, জাপান ও ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাজ করেন। ১৯৯৬ সালের জুলাইয়ে বঙ্গবন্ধুর এ খুনীকে চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি দেশে না ফিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো চলে যান। এরপর তিনি দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। প্রায় দশ বছর পর অভিবাসন আদালত তার আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। ডিএইচএস’র পক্ষ থেকে বলা হয় আশ্রয় আবেদনকারী নিজ দেশে সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত, তাই সে আশ্রয় পাওয়ার অযোগ্য।

রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বারবার আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর এই বিচারের কাগজপত্র চায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের ফাইল তলব করেছে আদালত।