গুরুদসসপুর(নাটোর)প্রতিনিধি.
জীবন বাঁচাতে ডেকোরেশনের ব্যাবসা বাদ দিয়ে বিভিন্ন ব্যাবসায় জরিয়ে পরছেন নাটোরসহ গুরুদাসপুরের ব্যবসায়ীরা।
নাটোরের গুরুদাসপুরে করোনা ভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় জীবন বাঁচাতে অনেকে পেশা বদল করছে। বিয়ে, সুন্নতে খাতনা, আকিকা, হালখাতা, সরকারি-বেসরকারি অফিসের বিভিন্ন দিবস পালন, ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ডেকোরেশন ব্যবসায়ীদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।
ফলে এ ব্যবসায় জড়িত মালিক, শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। দীর্ঘ চার মাস ধরে এ অবস্থা বিরাজ করায় সংসারের চাহিদা মেটাতে অনেকের জমানো টাকা ইতোমধ্যে খরচ হয়ে গেছে। ডেকোরেশন দোকানে নানা ধরনের ব্যবসা শুরু করেছে তারা। অনেকে আবার শ্রমিকের কাজ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। বাণিজ্য নগরী চাচকৈড়ের কাজী ডেকোরেশনের স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ কাজী এবং কাজী আশিক বিল্লাহ জানান, করোনায় ব্যবসা বাণিজ্য ভালো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে ইলেক্ট্রনিকের ব্যবসা সম্প্রসারিত করছি। গুরুদাসপুরের মোন্না নামে এক কর্মচারী জানান, তাদের ডেকোরেশন ব্যবসা করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। তাই সে বাধ্য হয়ে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী বল্টু, আনিসুর রহমান ও হাসান আলী জানান, করোনার কারণে ব্যবসা বাণিজ্য ভালো যাচ্ছে না। অর্থ উপার্জনও কমে গেছে অনেক। ভাবছি এই ব্যবসা বাদ দিয়ে অন্যকিছু করব।
তারা আরো জানান, সংসারের চাহিদা মেটাতে জমানো টাকাও খরচ হয়ে যাচ্ছে। মূলধন হারানোর পর কোন কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না। ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে কি করব ভেবে পাচ্ছিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডেকোরেশন কর্মচারী জানান, সংসারের অভাব ঘুচানোর জন্য ভ্যান চালানোর বিকল্প হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন বিল ঘুরে ঘুরে শাপলা ফুল তুলে ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট-বাজার এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফেরি করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
শাপলা বিক্রির টাকায় তার চার সদস্যের সংসার চলছে। পাঁচ ছয়টি শাপলার এক একটি আটি তিনি ৫ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করেন। এ ভাবে পেশা পরিবর্তন করে অনেকেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। এভাবেই ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন গুরুদাসপুর শহরসহ সকল ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা।