শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৩৪ বছরেও মেলেনি প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহারের ভাতা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৫:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০
  • ৮৫ Time View

গুরুদাসপুর(নাটোর) প্রতিনিধি

নুরুন্নাহার বেগম। বয়স (৩৪) বছর। জন্মের পর থেকেই তিনি শারিরীক প্রতিবন্ধী। ডান হাত-পা অচল। সারাক্ষণ চেয়ারে বসে বিছানায় শুয়ে সময় কাটাতে হয়। তার বসবাস নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর নারী বাড়ীতে । একযুগ আগে বাবা নজের মোল্লাকে হারান তিনি। স্বামী আছাদ আলী (৪৮) একজন ভ্যান চালক । তিন ছেলেসহ ৫ সদস্যের পরিবার তাদের। ৩ ছেলের মধ্যে দুইজনই শিশু বড় ছেলের বয়স ১৩ বছর। সে বাবার পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করে অতি কষ্টে সংসার চালান।
প্রতিবেশী এবং চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী, সঠিকভাবে চিকিৎসা ও পরিচর্যা করলে নুরুন্নাহার আশি ভাগ সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে নুরুন্নাহারের ভাগ্যে সে চিকিৎসা এখনও জোটেনি। দরিদ্র বাবা জীবিত থাকাকালে সাধ্যমতো মেয়েকে ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অনেক কষ্ট করে নিজের শেষ সম্বল (বাড়ী) টুকু বিক্রি করে ১৮ বছর আগে উত্তর নারিবাড়ী মহল্লার ভ্যান চালক আছাদের সাথে ওই প্রতিবন্ধি মেয়েকে বিয়ে দেন।
একটুুখানি আর্থিক সহায়তার জন্য (প্রতিবন্ধী ভাতা) ঘুরেছেন ওয়ার্ড কমিশনার,পৌর চেয়ারম্যানসহ নেতাদের দ্বারে দ্বারে। সবাই শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন ৩৪ বছরেও মেলেনি প্রতিবন্ধী ভাতা । তার প্রাপ্য প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য গিয়েছেন বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। অথচ বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে বারবার গুরুত্ব দেবার কথা বললেও কর্ণপাত করছেন না জন প্রতিনিধিরা।
গুরুদাসপুর সমাজ সেবা আফিস প্রতিবন্ধী পরিচয় পত্র দিলেও নেননি কোন পদক্ষেপ।

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সহায়-সম্বল সব হারিয়েছেন উল্লেখ্য করে নুরুন্নাহারের স্বামী আছাদ বলেন, কয়েক বছর যাবৎ কমিশনার চেয়ারম্যানদের কাছে নুরুন্নাহারকে নিয়ে যাই। তাঁরা শুধু আশ্বাসের বাণী শোনান প্রতিবন্ধীদের নতুন তালিকা এলে নুরুন্নাহারের ভাতার ব্যবস্থা করে দিবেন। কিন্তু পরে তা আর হয় না কখনোই। কেন প্রতিবন্ধীভাতা হয়না তার রহস্য অজানাই রয়ে যায় ভ্যান চালক আছাদের কাছে।
পৌর সভার বর্তমান কাউন্সিলর মজিবর মোল্লাকে মুঠোফোনে বারবার কল দেবার পরেও ফোন ধরেননি।
গুরুদাসপুর পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা বলেন, এরকম কেউ আমার কাছে এসেছিল কি-না জানা নেই । তবে সামনে সুযোগ আসলে অবশ্যই তার ভাতা কার্ড করে দেওয়া হবে ।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো তমাল হোসেন বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত দু:খজনক । ওই মহিলা আগামীকাল আমার অফিসে আসা মাত্রই সব কিছু শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Tag :

৩৪ বছরেও মেলেনি প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহারের ভাতা

Update Time : ০৮:২৫:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০

গুরুদাসপুর(নাটোর) প্রতিনিধি

নুরুন্নাহার বেগম। বয়স (৩৪) বছর। জন্মের পর থেকেই তিনি শারিরীক প্রতিবন্ধী। ডান হাত-পা অচল। সারাক্ষণ চেয়ারে বসে বিছানায় শুয়ে সময় কাটাতে হয়। তার বসবাস নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর নারী বাড়ীতে । একযুগ আগে বাবা নজের মোল্লাকে হারান তিনি। স্বামী আছাদ আলী (৪৮) একজন ভ্যান চালক । তিন ছেলেসহ ৫ সদস্যের পরিবার তাদের। ৩ ছেলের মধ্যে দুইজনই শিশু বড় ছেলের বয়স ১৩ বছর। সে বাবার পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করে অতি কষ্টে সংসার চালান।
প্রতিবেশী এবং চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী, সঠিকভাবে চিকিৎসা ও পরিচর্যা করলে নুরুন্নাহার আশি ভাগ সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে নুরুন্নাহারের ভাগ্যে সে চিকিৎসা এখনও জোটেনি। দরিদ্র বাবা জীবিত থাকাকালে সাধ্যমতো মেয়েকে ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অনেক কষ্ট করে নিজের শেষ সম্বল (বাড়ী) টুকু বিক্রি করে ১৮ বছর আগে উত্তর নারিবাড়ী মহল্লার ভ্যান চালক আছাদের সাথে ওই প্রতিবন্ধি মেয়েকে বিয়ে দেন।
একটুুখানি আর্থিক সহায়তার জন্য (প্রতিবন্ধী ভাতা) ঘুরেছেন ওয়ার্ড কমিশনার,পৌর চেয়ারম্যানসহ নেতাদের দ্বারে দ্বারে। সবাই শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন ৩৪ বছরেও মেলেনি প্রতিবন্ধী ভাতা । তার প্রাপ্য প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য গিয়েছেন বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। অথচ বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে বারবার গুরুত্ব দেবার কথা বললেও কর্ণপাত করছেন না জন প্রতিনিধিরা।
গুরুদাসপুর সমাজ সেবা আফিস প্রতিবন্ধী পরিচয় পত্র দিলেও নেননি কোন পদক্ষেপ।

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সহায়-সম্বল সব হারিয়েছেন উল্লেখ্য করে নুরুন্নাহারের স্বামী আছাদ বলেন, কয়েক বছর যাবৎ কমিশনার চেয়ারম্যানদের কাছে নুরুন্নাহারকে নিয়ে যাই। তাঁরা শুধু আশ্বাসের বাণী শোনান প্রতিবন্ধীদের নতুন তালিকা এলে নুরুন্নাহারের ভাতার ব্যবস্থা করে দিবেন। কিন্তু পরে তা আর হয় না কখনোই। কেন প্রতিবন্ধীভাতা হয়না তার রহস্য অজানাই রয়ে যায় ভ্যান চালক আছাদের কাছে।
পৌর সভার বর্তমান কাউন্সিলর মজিবর মোল্লাকে মুঠোফোনে বারবার কল দেবার পরেও ফোন ধরেননি।
গুরুদাসপুর পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা বলেন, এরকম কেউ আমার কাছে এসেছিল কি-না জানা নেই । তবে সামনে সুযোগ আসলে অবশ্যই তার ভাতা কার্ড করে দেওয়া হবে ।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো তমাল হোসেন বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত দু:খজনক । ওই মহিলা আগামীকাল আমার অফিসে আসা মাত্রই সব কিছু শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।