বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সুদের টাকা না দেওয়ায় কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০
  • ৫৪ Time View

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুরে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা। প্রতি মাসে সুদে কারবারীদের হাজার হাজার টাকা সুদ দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। মাস শেষে সুদের টাকা দিতে না পারলে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বৃদ্ধি পায়। পরে না দিতে পারলে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে মারপিট করে সাদা ষ্ট্যাম্পে, চেক বইয়ে, ছবিতে সই করে নেয়। এমনকি গরু, ছাগল, বসতভিটা পর্যন্ত লিখে দিতে হয় সুদ ব্যবসায়ীদের নামে। এমনই একজন সুদে ব্যবসায়ী ফোরমান আলী পঁচা। তার বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বীরবাজারে। এই সুদ ব্যবসায়ী শুক্রবার রাতে নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে সাদা ষ্ট্যাম্পে এবং ছবিতে টিপ সই করে নেয়। এঘটনায় ভুক্তভোগি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পঁচা বীরবাজারের মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে।
ভুক্তভোগি নজরুল ইসলাম জানান, স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য পঁচার কাছ থেকে দুই বছর আগে ৫০ হাজার টাকা সুদে নেয়। দেড় বছরেরও বেশি সময় প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করেন। কিছুদিন আগে এক সাথে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। ওই সময়ে সুদে ব্যবসায়ী রাজি হলেও এখন এসে আবার আসল টাকা দাবি করছে। সুদে কারবারীকে এপর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিে ছেন তিনি। তার পরও সে বিভিন্ন ভাবে তাকে হয়রানী করছে।
এলাকাবাসি জানায়, ওই ফোরমান আলী পঁচার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এরই মধ্যে অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ঢাকায় গেছেন। অনেকে গ্রাম থেকে আত্বীয় পরিজনের বাড়িতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সুদের ব্যবসা করে কয়েক বছরেই লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কেউ সুদের টাকা দিতে অস্বীকার করলেই তার ওপর চলে নির্যাতন। তার সুদের টাকা নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ওই সুদে ব্যবসায়ীর হাত থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা জরুরী হয়ে পড়েছে। যদি কেউ বিপদে পড়ে ৫০ হাজার টাকা সুদে নেয়, তাহলে পাঁচ মাস পর ১ লাখ টাকা দিয়েও সুদ ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ হয় না। সুদ ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের জমি পর্যন্ত জোরপূর্বক লিখে নিচ্ছে। এরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। দ্রæত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Tag :

সুদের টাকা না দেওয়ায় কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন

Update Time : ১০:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুরে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা। প্রতি মাসে সুদে কারবারীদের হাজার হাজার টাকা সুদ দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। মাস শেষে সুদের টাকা দিতে না পারলে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বৃদ্ধি পায়। পরে না দিতে পারলে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে মারপিট করে সাদা ষ্ট্যাম্পে, চেক বইয়ে, ছবিতে সই করে নেয়। এমনকি গরু, ছাগল, বসতভিটা পর্যন্ত লিখে দিতে হয় সুদ ব্যবসায়ীদের নামে। এমনই একজন সুদে ব্যবসায়ী ফোরমান আলী পঁচা। তার বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বীরবাজারে। এই সুদ ব্যবসায়ী শুক্রবার রাতে নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে সাদা ষ্ট্যাম্পে এবং ছবিতে টিপ সই করে নেয়। এঘটনায় ভুক্তভোগি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পঁচা বীরবাজারের মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে।
ভুক্তভোগি নজরুল ইসলাম জানান, স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য পঁচার কাছ থেকে দুই বছর আগে ৫০ হাজার টাকা সুদে নেয়। দেড় বছরেরও বেশি সময় প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করেন। কিছুদিন আগে এক সাথে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। ওই সময়ে সুদে ব্যবসায়ী রাজি হলেও এখন এসে আবার আসল টাকা দাবি করছে। সুদে কারবারীকে এপর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিে ছেন তিনি। তার পরও সে বিভিন্ন ভাবে তাকে হয়রানী করছে।
এলাকাবাসি জানায়, ওই ফোরমান আলী পঁচার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এরই মধ্যে অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ঢাকায় গেছেন। অনেকে গ্রাম থেকে আত্বীয় পরিজনের বাড়িতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সুদের ব্যবসা করে কয়েক বছরেই লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কেউ সুদের টাকা দিতে অস্বীকার করলেই তার ওপর চলে নির্যাতন। তার সুদের টাকা নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ওই সুদে ব্যবসায়ীর হাত থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা জরুরী হয়ে পড়েছে। যদি কেউ বিপদে পড়ে ৫০ হাজার টাকা সুদে নেয়, তাহলে পাঁচ মাস পর ১ লাখ টাকা দিয়েও সুদ ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ হয় না। সুদ ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের জমি পর্যন্ত জোরপূর্বক লিখে নিচ্ছে। এরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। দ্রæত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।