মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলনবিলে শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ লাগাতে ব্যস্ত গাছীরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৪৪:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০
  • ২২৯ Time View

গুরুদাসপুর(নাটোর) প্রতিনিধি.
চলনবিলাঞ্চলের পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের চলনবিলে শীতের আমেজ পড়তে না পড়তেই গাছীদের খেজুর গাছ লাগানোর ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। চলনবিলের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, গুরুদাসপুর, চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া, সিংড়া, বড়াইগ্রামের গাছীরা দল বেঁধে এলাকার বিভিন্ন গাছ মালিকদের খেজুর গাছ রসের জন্য চুক্তি নিয়ে গাছ লাগাতে শুরু করে দিয়েছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুরের যোগেন্দ্র নগর গ্রামের রব্বেল শাহ, রুবেল প্রামানিক,বাবু ফকিরসহ বেশ কয়েকজন খেজুর গাছী জানান, তারা প্রতিটি খেজুর গাছ চুক্তি করে নেয় গাছ মালিকদের কাছ থেকে। কারো কাছে থেকে গাছ প্রতি অর্ধেক গুড় বা গুড়ের সমপরিমান মূল্য দিয়ে চুক্তি নেন।
চলনবিলের খেজুর রসের গুড়ের চাহিদা এবং কদর রয়েছে দেশ জুড়েই। শীতের সময় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খেজুরের গুড় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেপারী ফরিয়ারা বন্দর নগরী চাঁচকৈড়সহ স্থানীয় হাট-বাজার থেকে এসব খেজুরের গুড় কিনে নিয়ে যায়। শীতের দিনে শহর ও গ্রামঞ্চলে খেজুর গুড়ের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
তাড়াশের খেজুর গাছী রেজাউল করিম জানান, এমনিতেই গাছের সংখ্যা কম তার ওপর আবার জালানী খরচ বেশী তাই গুড় তৈরীতে আগের মত আর লাভ হয় না। শুধু বাপদাদার পেশা তাই ধরে রেখেছি।
চলনবিলাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুড়ে দেখা জানাযায়- প্রতি কেজি খেজুরের গুড় পাইকারী ৮০ টাকা এবং খুচরা ৯০ থেকে ১০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সিলেট থেকে চাঁচকৈড় হাটে আসা বেপারী মো জালাল উদ্দিন জানান, এবার গুড়ের দাম গত বছরের তুলনায় বেশী। খাজনা, যানবাহন খরচসহ যে মুল্য পড়ছে তাতে করে লাভ হবে কিনা জানিনা। যেহুতু এসেছি তাই চার ট্রাকের পরিবর্তে দুই ট্রাক মাল কিনেছি।
চাঁচকৈড় হাটের ইজারাদার জানান, প্রতি শনি এবং মঙ্গলবার এখানে হাট বসে। ভরামৌসুমে প্রতিহাটে ১৫ থেকে ২০টি ট্রাক ভর্তি হয়ে গুড় যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখন শীতের শুরু হবার কারনে গুড় কম হচ্ছে তাই বিক্রিও কম।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা মো: আব্দুল করিম জানান, চলনবিলাঞ্চলে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গেলেও গুড়ের মান ভালো হবার কারনে দেশজুড়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তার পরও স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গা পৌছে যায় চলনবিলের এই সুঘ্রাণ যুক্ত খেজুরের পাটালী এবং সরার গুড়। প্রতি মৌসুমে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মেট্রিক টন গুড় দেশের নানা জায়গায় বিক্রি হয়ে থাকে।

Tag :

চলনবিলে শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ লাগাতে ব্যস্ত গাছীরা

Update Time : ০৬:৪৪:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

গুরুদাসপুর(নাটোর) প্রতিনিধি.
চলনবিলাঞ্চলের পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের চলনবিলে শীতের আমেজ পড়তে না পড়তেই গাছীদের খেজুর গাছ লাগানোর ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। চলনবিলের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, গুরুদাসপুর, চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া, সিংড়া, বড়াইগ্রামের গাছীরা দল বেঁধে এলাকার বিভিন্ন গাছ মালিকদের খেজুর গাছ রসের জন্য চুক্তি নিয়ে গাছ লাগাতে শুরু করে দিয়েছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুরের যোগেন্দ্র নগর গ্রামের রব্বেল শাহ, রুবেল প্রামানিক,বাবু ফকিরসহ বেশ কয়েকজন খেজুর গাছী জানান, তারা প্রতিটি খেজুর গাছ চুক্তি করে নেয় গাছ মালিকদের কাছ থেকে। কারো কাছে থেকে গাছ প্রতি অর্ধেক গুড় বা গুড়ের সমপরিমান মূল্য দিয়ে চুক্তি নেন।
চলনবিলের খেজুর রসের গুড়ের চাহিদা এবং কদর রয়েছে দেশ জুড়েই। শীতের সময় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খেজুরের গুড় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেপারী ফরিয়ারা বন্দর নগরী চাঁচকৈড়সহ স্থানীয় হাট-বাজার থেকে এসব খেজুরের গুড় কিনে নিয়ে যায়। শীতের দিনে শহর ও গ্রামঞ্চলে খেজুর গুড়ের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
তাড়াশের খেজুর গাছী রেজাউল করিম জানান, এমনিতেই গাছের সংখ্যা কম তার ওপর আবার জালানী খরচ বেশী তাই গুড় তৈরীতে আগের মত আর লাভ হয় না। শুধু বাপদাদার পেশা তাই ধরে রেখেছি।
চলনবিলাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুড়ে দেখা জানাযায়- প্রতি কেজি খেজুরের গুড় পাইকারী ৮০ টাকা এবং খুচরা ৯০ থেকে ১০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সিলেট থেকে চাঁচকৈড় হাটে আসা বেপারী মো জালাল উদ্দিন জানান, এবার গুড়ের দাম গত বছরের তুলনায় বেশী। খাজনা, যানবাহন খরচসহ যে মুল্য পড়ছে তাতে করে লাভ হবে কিনা জানিনা। যেহুতু এসেছি তাই চার ট্রাকের পরিবর্তে দুই ট্রাক মাল কিনেছি।
চাঁচকৈড় হাটের ইজারাদার জানান, প্রতি শনি এবং মঙ্গলবার এখানে হাট বসে। ভরামৌসুমে প্রতিহাটে ১৫ থেকে ২০টি ট্রাক ভর্তি হয়ে গুড় যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখন শীতের শুরু হবার কারনে গুড় কম হচ্ছে তাই বিক্রিও কম।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা মো: আব্দুল করিম জানান, চলনবিলাঞ্চলে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গেলেও গুড়ের মান ভালো হবার কারনে দেশজুড়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তার পরও স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গা পৌছে যায় চলনবিলের এই সুঘ্রাণ যুক্ত খেজুরের পাটালী এবং সরার গুড়। প্রতি মৌসুমে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মেট্রিক টন গুড় দেশের নানা জায়গায় বিক্রি হয়ে থাকে।