শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গুরুদাসপুরে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তার নানা অপকর্ম ও দাম্ভিকতা!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:২৫:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১
  • ১০৯ Time View

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
জনগণের দোড়গোঁড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হলেও নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ওই ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সেবার বদলে চলছে রমরমা অবৈধ্য অর্থের ব্যবসা। এখানে অর্থের বিনিময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদের বয়স কম-বেশি করাসহ মোটা অংকের অর্থ হলেই মিলে বিভিন্ন প্রকার অবৈধ্য কাজসহ সনদপত্র সংশোধণের সুযোগ।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গিয়ে দেখা গেছে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থও হাতিয়ে নেবার অভিযোগ পাওয়া যায় উদ্যোক্তা মো: মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগিদের ওই চিত্র প্রতিবদকের ক্যামেরা বন্দি হলে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মো: মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সাথে বাজে ব্যাবহার করেন এবং মোবাইল ফোনেও উল্টাপাল্টা কথা বলেন। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মো: মোজাম্মেল হোসেনকে জানালে তিনি মুঠোফোনে বলেন, পরিচালক মনিরুল বেয়াদপ টাইপের। আমার কোন কথাই শোনে না। তার পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
এ সময় সাবেক ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী, পল্লি চিকিৎসক রেজাউল করিম,আ.লীগ নেতা আকতারুজ্জামানসহ উপস্থিত এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ২৫শ থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত অবৈধ্য অর্থের বিনিময়ে এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধণ, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন, বিধবা ভাতা কার্ড সংশোধণ, কৃষকদের জমির কাগজ উত্তোলনে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ অযথা হয়রানি করছেন উদ্যোক্তা মনিরুল ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন ছোটখাটো কাজেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয় সেবাপ্রার্থীদের। এছাড়া তিনি মাঝে মধ্যেই তার বাইকে করে অপরিচিত মেয়েদের তার অফিস কক্ষে নিয়ে কাজ বাদ দিয়ে আড্ডাদেন। কিছুদিন পুর্বেও সে মেয়েলি ব্যাপারে কারাভোগ করেছেন। এজন্য এলাকাবাসী তার ওপর আরো বেশী ক্ষিপ্ত।
অভিযুক্ত বিয়াঘাট ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি কোনো কাজে অতিরিক্ত অর্থ নেন না। নিয়ম মেনেই তিনি কাজ করছেন। তবে স্থানীয় কিছু লোকের অনুরোধে অনেক কাজ না করে পারিনা। তবে কারো ইতিপুর্বে জন্ম নিবন্ধন না থাকলে এমবিবিএস ডাক্তারের মাধ্যমে ডিএনএ টেষ্ট করাতে হবে। তার পর জন্ম নিবন্ধন দেওয়া হবে।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জালাল উদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ইউনিয়নের ডিজিটাল সেবা সেন্টারটি অন্য ভবনে অবস্থিত।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তমাল হোসেন এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোক না কেন। কোন প্রকার ছাড় দেবার প্রশ্নই আসেনা।

নাটোরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) গোলাম রাব্বি বলেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে নির্দিষ্ট সামান্য অর্থ নেয়া ছাড়া অবৈধ্য অর্থলেনদেনের কোন সুযোগ নেই। নিঃসন্দেহে এটি একটি গর্হিত কাজ। খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

Tag :

গুরুদাসপুরে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তার নানা অপকর্ম ও দাম্ভিকতা!

Update Time : ১১:২৫:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
জনগণের দোড়গোঁড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হলেও নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ওই ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সেবার বদলে চলছে রমরমা অবৈধ্য অর্থের ব্যবসা। এখানে অর্থের বিনিময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদের বয়স কম-বেশি করাসহ মোটা অংকের অর্থ হলেই মিলে বিভিন্ন প্রকার অবৈধ্য কাজসহ সনদপত্র সংশোধণের সুযোগ।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গিয়ে দেখা গেছে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থও হাতিয়ে নেবার অভিযোগ পাওয়া যায় উদ্যোক্তা মো: মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগিদের ওই চিত্র প্রতিবদকের ক্যামেরা বন্দি হলে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মো: মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সাথে বাজে ব্যাবহার করেন এবং মোবাইল ফোনেও উল্টাপাল্টা কথা বলেন। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মো: মোজাম্মেল হোসেনকে জানালে তিনি মুঠোফোনে বলেন, পরিচালক মনিরুল বেয়াদপ টাইপের। আমার কোন কথাই শোনে না। তার পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
এ সময় সাবেক ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী, পল্লি চিকিৎসক রেজাউল করিম,আ.লীগ নেতা আকতারুজ্জামানসহ উপস্থিত এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ২৫শ থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত অবৈধ্য অর্থের বিনিময়ে এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধণ, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন, বিধবা ভাতা কার্ড সংশোধণ, কৃষকদের জমির কাগজ উত্তোলনে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ অযথা হয়রানি করছেন উদ্যোক্তা মনিরুল ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন ছোটখাটো কাজেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয় সেবাপ্রার্থীদের। এছাড়া তিনি মাঝে মধ্যেই তার বাইকে করে অপরিচিত মেয়েদের তার অফিস কক্ষে নিয়ে কাজ বাদ দিয়ে আড্ডাদেন। কিছুদিন পুর্বেও সে মেয়েলি ব্যাপারে কারাভোগ করেছেন। এজন্য এলাকাবাসী তার ওপর আরো বেশী ক্ষিপ্ত।
অভিযুক্ত বিয়াঘাট ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি কোনো কাজে অতিরিক্ত অর্থ নেন না। নিয়ম মেনেই তিনি কাজ করছেন। তবে স্থানীয় কিছু লোকের অনুরোধে অনেক কাজ না করে পারিনা। তবে কারো ইতিপুর্বে জন্ম নিবন্ধন না থাকলে এমবিবিএস ডাক্তারের মাধ্যমে ডিএনএ টেষ্ট করাতে হবে। তার পর জন্ম নিবন্ধন দেওয়া হবে।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জালাল উদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ইউনিয়নের ডিজিটাল সেবা সেন্টারটি অন্য ভবনে অবস্থিত।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তমাল হোসেন এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোক না কেন। কোন প্রকার ছাড় দেবার প্রশ্নই আসেনা।

নাটোরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) গোলাম রাব্বি বলেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে নির্দিষ্ট সামান্য অর্থ নেয়া ছাড়া অবৈধ্য অর্থলেনদেনের কোন সুযোগ নেই। নিঃসন্দেহে এটি একটি গর্হিত কাজ। খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।