বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসক তমাল হোসেনের সফলতার দুই বছর!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৩৪:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • ৫০ Time View

মোঃ মাজেম আলী মলিন.
আমেনা বিবিরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। বাল্য বিয়ের কবল থেকে বেরিয়ে এসে সাথী সুলনাতারা এখন বিদ্যালয়মুখি। কৃষক আবুল মিয়াদের জমির ধানও সময়মতো ঘরে উঠেছে। জমি নিয়ে আর বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছেনা দরিদ্রদের। করোনা মহামারী সব কিছু থামিয়ে দিলেও। বদলেছে গুরুদাসপুরের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট। তবে এই পরিবর্তন গুরুদাসপুরের মানুষের কল্যাণ বয়ে এনেছে। উন্নয়ন অগ্রযাত্রা আর মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে অকল্পনীয় পবির্তন।

পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই বছরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ২১১টি বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এরমধ্যে জেল-জরিমানা ৪২টি। বাকি ১৬৯ টি মুচলেকা। বাল্যবিয়ের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া কিশোরী সাথী সুলতানারা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখি হচ্ছে।

এদিকে ভূমি অফিসে মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে গণশুনানী, জমির নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, খাস জমির বন্দোবস্ত, অর্পিজ সম্পত্তির লিজ নবায়ণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদানসহ ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমে এসেছে আধুনিকতা। পরিসংখ্যান বলছে, গত ২ বছরে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৫১হাজার ১৭৩ টাকা। এছাড়া নামজারী থেকে আয় হয়েছে ৭২ লাখ ১৫ হাজার ৯৮০ টাকা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, সরকারি ২.৯৭ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সেসব জমিতেই বৃদ্ধ আমেনা বিবির মতো ১৮৫টি দরিদ্র পরিবারকে আবাসন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিজের জায়গায় আবাসনের আওতায় আনা হয়েছে আরো ৪০টি পরিবারকে। আমেনা বিবিসহ অন্তত দশজন জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারের ঘর ইউএনও তাদের বিনামূল্যে দিয়েছেন। এখন তারা আর ভূমিহীন-গৃহহীন নন।


এদিকে মাদকের বিস্তার কমাতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে গত দুই বছরে সাজা/জরিমানা করা হয়েছে ৪৩১টি। হিসাবমতে- ২৯ লাখের ওপরে টাকা আদায় হয়েছে এসব অভিযান থেকে। এছাড়া এই করোনা মহামারীর মধ্যেও কৃষক আবুল মিয়াদের ৯ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমির ধান গোলায় তুলতে শ্রমিক আমদানি করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে করে কৃষক সহজেই ৬৫ হাজার ৭৭৬ মে.টি. ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। ফলে মহামারীর এই সংকটেও গুরুদাসপুরে ধান/চালের চাহিদা পূরণ করে আবার বাহিরেও পাঠানো হচ্ছে।

সূত্র বলছে, বিদ্যালয় ও কলেজের খেলার মাঠগুলো সংস্কার করে বিপথগামীদের খেলা-ধুলায় সম্পৃক্তও করা হয়েছে। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিমনা করে গড়ে তোলার কাজও চলমান রয়েছে।

গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান আক্তার বানু সুইটি বলেন, করোনার মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের এই সক্রিয়তা খুবই প্রসংসনীয়। কৃষকের ধান কাটা থেকে শুরু করে বাল্যবিয়ে, মাদকের বিস্তার রোধসহ সব কাজই চলমান রাখা হয়েছে। এতে করে করোনায়ও গুরুদাসপুরের অর্থনৈতি ঠিক রয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন জানালেন, করোনাকে অজুহাত না বানিয়ে অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে তিনি এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবু রাসেল নিরলসভাবে কাজ করছেন। এবছর নতুন করে একটি লিচু আড়ৎ সরকারি রাজস্বের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া গুরুদাসপুরবাসীর কল্যাণে তারা বিভিন্ন উদ্দ্যেগ নিচ্ছেন।

Tag :

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসক তমাল হোসেনের সফলতার দুই বছর!

Update Time : ০৬:৩৪:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

মোঃ মাজেম আলী মলিন.
আমেনা বিবিরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। বাল্য বিয়ের কবল থেকে বেরিয়ে এসে সাথী সুলনাতারা এখন বিদ্যালয়মুখি। কৃষক আবুল মিয়াদের জমির ধানও সময়মতো ঘরে উঠেছে। জমি নিয়ে আর বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছেনা দরিদ্রদের। করোনা মহামারী সব কিছু থামিয়ে দিলেও। বদলেছে গুরুদাসপুরের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট। তবে এই পরিবর্তন গুরুদাসপুরের মানুষের কল্যাণ বয়ে এনেছে। উন্নয়ন অগ্রযাত্রা আর মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে অকল্পনীয় পবির্তন।

পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই বছরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ২১১টি বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এরমধ্যে জেল-জরিমানা ৪২টি। বাকি ১৬৯ টি মুচলেকা। বাল্যবিয়ের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া কিশোরী সাথী সুলতানারা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখি হচ্ছে।

এদিকে ভূমি অফিসে মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে গণশুনানী, জমির নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, খাস জমির বন্দোবস্ত, অর্পিজ সম্পত্তির লিজ নবায়ণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদানসহ ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমে এসেছে আধুনিকতা। পরিসংখ্যান বলছে, গত ২ বছরে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৫১হাজার ১৭৩ টাকা। এছাড়া নামজারী থেকে আয় হয়েছে ৭২ লাখ ১৫ হাজার ৯৮০ টাকা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, সরকারি ২.৯৭ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সেসব জমিতেই বৃদ্ধ আমেনা বিবির মতো ১৮৫টি দরিদ্র পরিবারকে আবাসন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিজের জায়গায় আবাসনের আওতায় আনা হয়েছে আরো ৪০টি পরিবারকে। আমেনা বিবিসহ অন্তত দশজন জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারের ঘর ইউএনও তাদের বিনামূল্যে দিয়েছেন। এখন তারা আর ভূমিহীন-গৃহহীন নন।


এদিকে মাদকের বিস্তার কমাতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে গত দুই বছরে সাজা/জরিমানা করা হয়েছে ৪৩১টি। হিসাবমতে- ২৯ লাখের ওপরে টাকা আদায় হয়েছে এসব অভিযান থেকে। এছাড়া এই করোনা মহামারীর মধ্যেও কৃষক আবুল মিয়াদের ৯ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমির ধান গোলায় তুলতে শ্রমিক আমদানি করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে করে কৃষক সহজেই ৬৫ হাজার ৭৭৬ মে.টি. ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। ফলে মহামারীর এই সংকটেও গুরুদাসপুরে ধান/চালের চাহিদা পূরণ করে আবার বাহিরেও পাঠানো হচ্ছে।

সূত্র বলছে, বিদ্যালয় ও কলেজের খেলার মাঠগুলো সংস্কার করে বিপথগামীদের খেলা-ধুলায় সম্পৃক্তও করা হয়েছে। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিমনা করে গড়ে তোলার কাজও চলমান রয়েছে।

গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান আক্তার বানু সুইটি বলেন, করোনার মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের এই সক্রিয়তা খুবই প্রসংসনীয়। কৃষকের ধান কাটা থেকে শুরু করে বাল্যবিয়ে, মাদকের বিস্তার রোধসহ সব কাজই চলমান রাখা হয়েছে। এতে করে করোনায়ও গুরুদাসপুরের অর্থনৈতি ঠিক রয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন জানালেন, করোনাকে অজুহাত না বানিয়ে অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে তিনি এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবু রাসেল নিরলসভাবে কাজ করছেন। এবছর নতুন করে একটি লিচু আড়ৎ সরকারি রাজস্বের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া গুরুদাসপুরবাসীর কল্যাণে তারা বিভিন্ন উদ্দ্যেগ নিচ্ছেন।