শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘদিন পরে স্বাভাবিক জীবনে আয়নাল ও জমিরন দম্পতি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:১৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অগাস্ট ২০২১
  • ৯৮ Time View

পঞ্চগড় প্রতিনিধি.
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘ তিন মাস সমাজচ্যুত হওয়ার পর অবশেষে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছে আয়নাল হক ও জমিরন বেগম নামে এক দম্পতি ।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ওই দম্পতি তাদের নিজ বাড়িতে একসাথে বসবাস করতে শুরু করেছেন এবং তারা একে অপরে স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করছেন । শুধু তাই নয় তাদের বাড়িতে আসতে শুরু করেছে পরিবারের সদস্য, পাড়া- প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা।

জানা গেছে, ওই দম্পতি জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের ছলিমনগর এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘ ৩৫ বছর আগে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন তারা।

জানা যায়, তিন মাস আগে পারিবারিক কলহের কারনে হঠাৎ করে আয়নাল ও জমিরন উভয়ের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে এক পর্যায় আইনাল তার স্ত্রীকে তালাক বলায় হিল্লা বিয়ে না দেয়া পর্যন্ত সমাজে উঠা বসা ও চলাফেরা ও কথা বলতে পারবে না। পৃথক থাকতে হবে সমাজপতিদের দেয়া এমন নানা শর্তের কারণে গত তিন মাস ধরে ওই দম্পত্তিকে সমাজচ্যুত (সমাজ বয়কট করে) অবস্থায় রাখলে তারা নিজ বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করে। পরে ওই দম্পতির অসহযোগ পেয়ে দেবীগঞ্জ লউপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছলিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয়দের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে ওই দম্পত্তির ওপর সকল প্রকার বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এবং সমাজের সবার সাথে মিলিয়ে দেয়া হয়।

এসময় দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রত্যয় হাসান, দেবীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন,সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায়,ইউপি সদস্য লক্ষণ রায়, মসজিদ কমিটির সভাপতি নাছির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিরুল ইসলাম, স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সমাজপতিরা ভুল করেছে এমন স্বীকার করে প্রশাসনের চাপে ওই দিনমজুরকে সমাজের ফিরিয়ে নেয়। তবে বৈঠক শেষে প্রশাসনের কর্মকর্তার চলে যাওয়ার পর সমাজপতিরা নানা আলোচনা-সমালোচনা করেছেন ওই দম্পতি ভুল করেছেন বলে তাদের বকাঝকা শুরু করেন। বৈঠকে সমাজপতিরা তাদের মেনে নিলেও ওই দম্পতি ও তাদের পরিবারের লোকজন নানা আশঙ্কার কথা বলেছেন। এখনো ওই পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবী তাদের।

ছলিমনগর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর ইসলাম বলেন, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার এক পর্যায়ে আয়নাল ও জমিরন একে অপরকে মৌখিক ভাবে তালাক দেওয়ার বিষয়টি উচ্চারণ করেছিলেন এরপর বিষয়টি ওই গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন এইভাবে চলার পরে সমাজের লোকজন মুফতি মাওলানা ডেকে এ বিষয়টি সিদ্ধান্ত নিই। পরে স্থানীয় হাফেজ মোস্তফা কামালের সহযোগিতায় ফুলবাড়ি বাজার এলাকার মুফতি আনোয়ার হোসাইনকে নিয়ে আসা হয়। পরে তিনি তালাক হয়ে বলে আমাদের জানান। হিল্লা বিয়ে (কম পক্ষে তিন দিনের জন্য অন্যের সাথে বিয়েতে আবদ্ধ হওয়া) দিতে হবে। কারো সাথে,কথা বলা,চলা ফেরা ও দেখা করা যাবে না। তাদের সমাজচ্যুত করতে হবে। পরে এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর সমাজের লোকজন তাদের এক ঘরে করে রেখে সমাজচ্যূত করে৷ তবে তারা ভুল স্বীকার করে বলেন,আমরা কোরআন হাদিস বিষয়ে তেমন জানি না। ওই হাফেজ ও মুফতি ফতুয়া দেয় তাদের হিল্লা বিয়ে দিতে হবে নয়তো সমাজ তাদের সমাজচত্যূ করে এক ঘরে দিতে হবে তাই আমরা তাদেরকে এক ঘরে করে দিয়ে ছিলাম।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী আয়নাল হক বলেন,রাগের বসে আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কথা বলার পর আমি , সমাজপতিদের চাপে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার আমতলী বাজারের মাওলানা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা আবারও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপরও সমাজপতিরা আমাদের একত্রে বসবাস করেেত দেয়নি। যারা কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে অন্যায়ভাবে আমাদের সঙ্গে এমন করেছে আমরা তাদের বিচার চাই। যেন অন্য কারো সঙ্গে তারা এমনটি করতে না পারে। বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আমরা কিন্তু এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ভুক্তভোগী জমিরন বেগম জানান, আমি ও আমার স্বামী হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সমাজের লেকজন আমাদের এক ঘরে করে রেখেছেন৷ আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদেরর সাথেও কথা বলতে পারিনি। আমাদের এক ঘরে রেখে তারা আমাদের সমাজচ্যুত করে রাখে৷ আমরা অনেক কষ্টে দিন পার করেছি। সমাজপতিদের হাত পা ধরেছি কেঁদেছি তবুও কারো মন গলেনি। আমাদেরকে কোথাও যেতে দেননি।স্থানীয় লোকজনও হুমকি ধামকি দেয়। যে হাফেজ ও মুফতি ভুল ফতুয়া দিয়ে আমাদের সম্মানহানি করলো তাদের বিচার চাই আমরা। আমরা এখনও নিরপেক্ষতাহীনতায় ভুগছি।

সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায় জানান, আয়নাল হক ও জমিরন বেগমের বিষয়টি সমধানে করে নিতে এলাকর গনয়মান মানুষদের বলে ছিলাম। তারা আমার কথা না শুনে ওই দম্পতির উপর এমন আচরন বা সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক করেনি। উপায় না পেয়ে ওই দম্পতি আমার কাছে গেলে আমি উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগের পরামর্শ দেই৷

এবিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাজপতিদের সাথে ওই দম্পতিদের মিকিয়ে দিয়েছি। ওই এলাকায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও ধর্মান্ধ কিছু মানুষ হিল্লা বিয়েকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। তবে এঘটনায় যারা ভুল ফতুয়া দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এবং এবিষয়ে কেউ যদি আবার কেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের আইনের আওয়তায় আনা হবে।

এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রত্যয় হাসান বলেন, ওই দম্পতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ,জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গন্যমান্য ও সমাজপতিদের নিয়ে ওই এলাকায় গিয়ে বৈঠকে বসে ছিলাম। বৈঠকে কোরআন হাদিসের আলোকে তালাক কিভাবে হয় বা হয় না এ বিষয়টি সবাই বুঝালে সবাই বিষয়ে বুঝে ভুল শিকার করে ক্ষমা চায় । পরে ওই দম্পতির সাথে সমাজের সবার সাথে মিল করে দিয়ে বিষয়টি সমাধান করেন। বর্তমানে ওই দম্পতি তারা তাদের পরিবারের সাথে বসবাস করছেন।

Tag :
About Author Information

Daily Banalata

দীর্ঘদিন পরে স্বাভাবিক জীবনে আয়নাল ও জমিরন দম্পতি

Update Time : ০৪:১৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অগাস্ট ২০২১

পঞ্চগড় প্রতিনিধি.
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘ তিন মাস সমাজচ্যুত হওয়ার পর অবশেষে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছে আয়নাল হক ও জমিরন বেগম নামে এক দম্পতি ।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ওই দম্পতি তাদের নিজ বাড়িতে একসাথে বসবাস করতে শুরু করেছেন এবং তারা একে অপরে স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করছেন । শুধু তাই নয় তাদের বাড়িতে আসতে শুরু করেছে পরিবারের সদস্য, পাড়া- প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা।

জানা গেছে, ওই দম্পতি জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের ছলিমনগর এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘ ৩৫ বছর আগে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন তারা।

জানা যায়, তিন মাস আগে পারিবারিক কলহের কারনে হঠাৎ করে আয়নাল ও জমিরন উভয়ের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে এক পর্যায় আইনাল তার স্ত্রীকে তালাক বলায় হিল্লা বিয়ে না দেয়া পর্যন্ত সমাজে উঠা বসা ও চলাফেরা ও কথা বলতে পারবে না। পৃথক থাকতে হবে সমাজপতিদের দেয়া এমন নানা শর্তের কারণে গত তিন মাস ধরে ওই দম্পত্তিকে সমাজচ্যুত (সমাজ বয়কট করে) অবস্থায় রাখলে তারা নিজ বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করে। পরে ওই দম্পতির অসহযোগ পেয়ে দেবীগঞ্জ লউপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছলিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয়দের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে ওই দম্পত্তির ওপর সকল প্রকার বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এবং সমাজের সবার সাথে মিলিয়ে দেয়া হয়।

এসময় দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রত্যয় হাসান, দেবীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন,সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায়,ইউপি সদস্য লক্ষণ রায়, মসজিদ কমিটির সভাপতি নাছির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিরুল ইসলাম, স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সমাজপতিরা ভুল করেছে এমন স্বীকার করে প্রশাসনের চাপে ওই দিনমজুরকে সমাজের ফিরিয়ে নেয়। তবে বৈঠক শেষে প্রশাসনের কর্মকর্তার চলে যাওয়ার পর সমাজপতিরা নানা আলোচনা-সমালোচনা করেছেন ওই দম্পতি ভুল করেছেন বলে তাদের বকাঝকা শুরু করেন। বৈঠকে সমাজপতিরা তাদের মেনে নিলেও ওই দম্পতি ও তাদের পরিবারের লোকজন নানা আশঙ্কার কথা বলেছেন। এখনো ওই পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবী তাদের।

ছলিমনগর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর ইসলাম বলেন, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার এক পর্যায়ে আয়নাল ও জমিরন একে অপরকে মৌখিক ভাবে তালাক দেওয়ার বিষয়টি উচ্চারণ করেছিলেন এরপর বিষয়টি ওই গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন এইভাবে চলার পরে সমাজের লোকজন মুফতি মাওলানা ডেকে এ বিষয়টি সিদ্ধান্ত নিই। পরে স্থানীয় হাফেজ মোস্তফা কামালের সহযোগিতায় ফুলবাড়ি বাজার এলাকার মুফতি আনোয়ার হোসাইনকে নিয়ে আসা হয়। পরে তিনি তালাক হয়ে বলে আমাদের জানান। হিল্লা বিয়ে (কম পক্ষে তিন দিনের জন্য অন্যের সাথে বিয়েতে আবদ্ধ হওয়া) দিতে হবে। কারো সাথে,কথা বলা,চলা ফেরা ও দেখা করা যাবে না। তাদের সমাজচ্যুত করতে হবে। পরে এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর সমাজের লোকজন তাদের এক ঘরে করে রেখে সমাজচ্যূত করে৷ তবে তারা ভুল স্বীকার করে বলেন,আমরা কোরআন হাদিস বিষয়ে তেমন জানি না। ওই হাফেজ ও মুফতি ফতুয়া দেয় তাদের হিল্লা বিয়ে দিতে হবে নয়তো সমাজ তাদের সমাজচত্যূ করে এক ঘরে দিতে হবে তাই আমরা তাদেরকে এক ঘরে করে দিয়ে ছিলাম।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী আয়নাল হক বলেন,রাগের বসে আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কথা বলার পর আমি , সমাজপতিদের চাপে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার আমতলী বাজারের মাওলানা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা আবারও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপরও সমাজপতিরা আমাদের একত্রে বসবাস করেেত দেয়নি। যারা কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে অন্যায়ভাবে আমাদের সঙ্গে এমন করেছে আমরা তাদের বিচার চাই। যেন অন্য কারো সঙ্গে তারা এমনটি করতে না পারে। বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আমরা কিন্তু এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ভুক্তভোগী জমিরন বেগম জানান, আমি ও আমার স্বামী হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সমাজের লেকজন আমাদের এক ঘরে করে রেখেছেন৷ আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদেরর সাথেও কথা বলতে পারিনি। আমাদের এক ঘরে রেখে তারা আমাদের সমাজচ্যুত করে রাখে৷ আমরা অনেক কষ্টে দিন পার করেছি। সমাজপতিদের হাত পা ধরেছি কেঁদেছি তবুও কারো মন গলেনি। আমাদেরকে কোথাও যেতে দেননি।স্থানীয় লোকজনও হুমকি ধামকি দেয়। যে হাফেজ ও মুফতি ভুল ফতুয়া দিয়ে আমাদের সম্মানহানি করলো তাদের বিচার চাই আমরা। আমরা এখনও নিরপেক্ষতাহীনতায় ভুগছি।

সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায় জানান, আয়নাল হক ও জমিরন বেগমের বিষয়টি সমধানে করে নিতে এলাকর গনয়মান মানুষদের বলে ছিলাম। তারা আমার কথা না শুনে ওই দম্পতির উপর এমন আচরন বা সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক করেনি। উপায় না পেয়ে ওই দম্পতি আমার কাছে গেলে আমি উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগের পরামর্শ দেই৷

এবিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাজপতিদের সাথে ওই দম্পতিদের মিকিয়ে দিয়েছি। ওই এলাকায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও ধর্মান্ধ কিছু মানুষ হিল্লা বিয়েকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। তবে এঘটনায় যারা ভুল ফতুয়া দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এবং এবিষয়ে কেউ যদি আবার কেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের আইনের আওয়তায় আনা হবে।

এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রত্যয় হাসান বলেন, ওই দম্পতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ,জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গন্যমান্য ও সমাজপতিদের নিয়ে ওই এলাকায় গিয়ে বৈঠকে বসে ছিলাম। বৈঠকে কোরআন হাদিসের আলোকে তালাক কিভাবে হয় বা হয় না এ বিষয়টি সবাই বুঝালে সবাই বিষয়ে বুঝে ভুল শিকার করে ক্ষমা চায় । পরে ওই দম্পতির সাথে সমাজের সবার সাথে মিল করে দিয়ে বিষয়টি সমাধান করেন। বর্তমানে ওই দম্পতি তারা তাদের পরিবারের সাথে বসবাস করছেন।