ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:
বিএনপি’র সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আ’লীগ নেতা যোগ দেওয়ায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাবনার ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গত দুদিনে (শুক্র ও শনিবার) বিষয়টি ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ১৯ আগষ্ট ঈশ্বরদী পূর্বটেংরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গাছ লাগানোর এ আয়োজন করেন এবারের পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন। আর এতে যোগদান করেন আ’লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টু।
জানা গেছে, পূর্বটেংরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোখলেছুর রহমান বাবুল ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ। এরা দুজন ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত ফাসির আসামি। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। শেখ হাসিনার ট্রেনে হামলা মামলার ওই আসামিদের স্মরণে গাছ লাগানো আয়োজনে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর অংশগ্রহণের দুটি ছবি ও খবর ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
শুক্রবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম এনিয়ে তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে ছবি দুটি ছড়িয়ে দিয়ে লেখেন “জননেত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি করা আসামির মুক্তির দাবিতে বৃক্ষরোপণ করেন সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, সাথে ছিলেন ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম নয়ন, বিএনপি নেতা মনা বিশ্বাসসহ বিএনপি’র বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ।”
মীর জহুরুল ইসলাম পুনো বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বশীল পদে থেকে আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বিএনপির এ ধরণের কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেন না। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রনি বলেন, শোকের মাসে আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বিএনপি নেতার সঙ্গে হেসে হেসে গাছ লাগাচ্ছেন- এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক ও কষ্টের।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মিন্টু বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনা ও নৈতিকতার দিক থেকে এটি গর্হিত অপরাধ।
বৃক্ষরোপণে আয়োজক রফিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, আমার বাড়ির পাশে পূর্বটেংরী স্কুল। আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর সঙ্গে তাঁর অনেকদিনের সম্পর্ক। স্কুল প্রতিষ্ঠাতা অনেকে এখন নেই। এদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন বা মারা গেছেন। শুধুমাত্র তাদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলাম। এজন্য তাঁকে অনুষ্ঠানে রাখা হয়েছে।
আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা চলছে।