গুরুদাসপুর প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসনসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ উপজেলা ব্যাপী বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় আজ ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে উপজেলার রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্বল্প পরিসরে প্রধানমন্ত্রীর ৭৫ তম জন্মদিন পালন করেছেন ।
এ-উপলক্ষ্যে ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ মায়া রানী চক্রবর্ত্তী উপস্থিত থেকে স্মারক বৃক্ষ রোপন, আলোচনা সভা,দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন পালন করেন।এ সময় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বল্প পরিসরে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপজেলার বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজ, নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজ, খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজ সহ সকল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন করেছেন স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ, আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কর্মময় জীবন ও রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি কৃষিবীদ জহুরল হক সরকার বলেন, ১৯৪৭ সালের এই দিনে মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার নিভৃত পল্লীতে তার জন্ম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার প্রথম সন্তান। শেখ হাসিনা গ্রামবাংলার ধুলোমাটি আর সাধারণ মানুষের সঙ্গেই বেড়ে উঠেছেন। যে কারণে মাটির সঙ্গে তার সম্পর্ক নিবিড়।
স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭৫-পরবর্তী সময়ে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক মনে করা হয় শেখ হাসিনাকে। রেকর্ড সময় ধরে এশিয়ার বৃহৎ দল ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’র সভাপতি তিনি। জন্মের হিসাবে শেখ হাসিনার বয়স ৭৪ বছর পূর্ণ, এর মধ্যে চার দশকই তার কেটেছে নেতৃত্বভাগে।
এই সময়ে এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার, শান্তি পুরস্কারসহ ২৬টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। ক্রাউন জুয়েল বা মুকুট মণি, কওমী জননী, মাদার অব হিউম্যানিটি, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, দেশরত্নসহ নানা উপাধিও পেয়েছেন শেখ হাসিনা।
স্বাধিনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মো,মাজেম আলী মলিন বলেন, প্রকৃতার্থে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নবপর্যায়ের বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা। হিমাদ্রী শিখর সফলতার মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কাণ্ডারি। উন্নত সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার। বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার একান্ত বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্ন-সারথী। বিশ্বরাজনীতির উজ্জ্বলতম প্রভা, বিশ্ব পরিমণ্ডলে অনগ্রসর জাতি-দেশ-জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র, বিশ্বনন্দিত নেতা। বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা ‘নীলকণ্ঠ পাখি’, মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তমানবী। তিমির হননের অভিযাত্রী। আত্মশক্তি-সমৃদ্ধ সত্য সাধক। প্রগতি-উন্নয়ন শান্তি ও সমৃদ্ধির সুনির্মল মোহনা। এক কথায় বলতে গেলে সমুদ্র সমান অর্জনে সমৃদ্ধ শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন।
খুবজীপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যাক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবু সাইদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেধা-মনন, সততা, নিষ্ঠা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদারমুক্ত গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। এক সময়ের কথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতে হয়েছে, শেখ হাসিনার কল্যাণমুখী নেতৃত্বে সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাঙালি জাতি।
পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে শেখ হাসিনা ছিলেন জ্যেষ্ঠ। তার অন্য ভাই-বোনেরা হলেন- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল।
এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন শেখ হাসিনার। সাফল্যে মোড়ানো এই কর্মময় জীবন কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্টকাকীর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাঁকে কারানির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বারবার তার জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ২০ বার তাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তার লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।
রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) মায়া রানী চক্রবর্ত্তী বলেন, সহজ সারল্যে ভরা তার ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, সততা, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও কোনো প্রকার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোনো প্রকার ছাপ নেই। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও ধার্মিক। নিয়মিত ফজরের নামাজ ও কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে তার দিনের সূচনা ঘটে। পবিত্র হজ পালন করেছেন কয়েকবার। সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনার অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ইতোমধ্যে তিনি শান্তি, গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন অসংখ্য মর্যাদাপূর্ণ পদক, পুরস্কার আর স্বীকৃতিতে।
নিখাঁদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ় মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং বাঙালি জাতির সব আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ’৭৫ পরবর্তী বাঙালি জাতির যা কিছু মহৎ অর্জন তা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ গোটা বাঙালি জাতির জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।এসময় রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ,সুশিল সমাজসহ নানা শ্রেনী পেশার লোকজন উপস্তিত ছিলেন।