বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুরুদাসপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে ইউপি চেয়ারম্যানের বালুর ব্যবসা!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:২৯:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ অক্টোবর ২০২১
  • ৫৪ Time View

মোঃ মজিানুর রহমান পলাশ.

খেলার মাঠজুড়ে বালির স্তুপ। সেই বালির সাথে উঠে আসা পানিতে শ্রেণিকক্ষের সামনে জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে। কাদা আর পানিতে একাকার হয়েছে শ্রেণিকক্ষ ও বাড়ান্দা। এতে করে মাদরসায় পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও পারছেনা খেলা-ধুলা করতে । গুরুদাসপুরের নাজিরপুর আলিম মাদরাসায় চলছে ওই পরিস্থিতি।

ওই মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শওকত রানা লাবু প্রভাবখাটিয়ে মাদরাসা মাঠটি দখল করে বালির ব্যবসা করছেন। লাবু নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। সরকারি ঘর টাকার বিনিময়ে দরিদ্রদের দেওয়ায় এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও রয়েছে। হাজতও খেটেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিক্রির জন্য ট্রলারে করে আনা বালি ওই মাঠে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্তুপের এসব বালি ট্রলিতে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। মাঠজুড়ে এভাবে বালি রাখায় মাদরাসার ৩ টি ভবনের অন্তত ৫টি শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ছে। কাদা-পানিতে একাকার শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ক্ষেত্রে ব্যপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। শুধু শ্রেণিকক্ষ আর বাড়ান্দাতেই এই সমস্যা হচ্ছে তা নয়। মাদরাসার দুইটি প্রবেশ মুখও বালিতে বন্ধ হয়ে গেছে।


মাদরসার আঞ্জুম তাসনিম, আকরাম আলী, রঞ্জুসহ অন্তত ১০জন শিক্ষার্থী জানান, করোনার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মাদরাসাটি খুললেও ওই অবস্থাতেই বুধবার থেকে মাঠে বালি ফেলা শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিজেই। মাঠজুড়ে বালির বড় স্তুপের কারণে শ্রেণিকক্ষের সামনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে গিয়ে কাদা-পানিতে নষ্ট হচ্ছে পোশাক।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ওই মাদাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হক জানান, মাঠজুড়ে বালি ফেলায় উত্তরপাশের প্রবেশ মুখ বন্ধ হয়েছে। আবার দক্ষিণ পাশের প্রবেশ মুখেও বালির স্তুপ থাকায় শিক্ষার্থীরা নির্বিঘেœ মাদরাসায় প্রবেশ করতে পারছেনা। তাছাড়া মাদরাসার উত্তরপাশের ৫টি শ্রেণিকক্ষের বাড়ান্দায় পানি উঠায় পাঠদান এবং চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। সভাপতি নিজেই মাদরসা মাঠে বালি রাখায় তিনি অধ্যক্ষ হলেও কিছু বলতে পারছেন না।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বালি ফেলার কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাময়িক দুর্ভোগ হলেও মাদরাসা মাঠেও কিছু বালি দেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এয়াহেদুজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। এই দীর্ঘ বিরতীর পরও যদি নানা কারণে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ হয় তা দুঃখজনক। সভাপতি হয়ে মাদরাসা মাঠে বালি রাখা তিনি ঠিক করেননি। খোঁজ দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

গুরুদাসপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে ইউপি চেয়ারম্যানের বালুর ব্যবসা!

Update Time : ১০:২৯:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ অক্টোবর ২০২১

মোঃ মজিানুর রহমান পলাশ.

খেলার মাঠজুড়ে বালির স্তুপ। সেই বালির সাথে উঠে আসা পানিতে শ্রেণিকক্ষের সামনে জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে। কাদা আর পানিতে একাকার হয়েছে শ্রেণিকক্ষ ও বাড়ান্দা। এতে করে মাদরসায় পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও পারছেনা খেলা-ধুলা করতে । গুরুদাসপুরের নাজিরপুর আলিম মাদরাসায় চলছে ওই পরিস্থিতি।

ওই মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শওকত রানা লাবু প্রভাবখাটিয়ে মাদরাসা মাঠটি দখল করে বালির ব্যবসা করছেন। লাবু নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। সরকারি ঘর টাকার বিনিময়ে দরিদ্রদের দেওয়ায় এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও রয়েছে। হাজতও খেটেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিক্রির জন্য ট্রলারে করে আনা বালি ওই মাঠে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্তুপের এসব বালি ট্রলিতে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। মাঠজুড়ে এভাবে বালি রাখায় মাদরাসার ৩ টি ভবনের অন্তত ৫টি শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ছে। কাদা-পানিতে একাকার শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ক্ষেত্রে ব্যপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। শুধু শ্রেণিকক্ষ আর বাড়ান্দাতেই এই সমস্যা হচ্ছে তা নয়। মাদরাসার দুইটি প্রবেশ মুখও বালিতে বন্ধ হয়ে গেছে।


মাদরসার আঞ্জুম তাসনিম, আকরাম আলী, রঞ্জুসহ অন্তত ১০জন শিক্ষার্থী জানান, করোনার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মাদরাসাটি খুললেও ওই অবস্থাতেই বুধবার থেকে মাঠে বালি ফেলা শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিজেই। মাঠজুড়ে বালির বড় স্তুপের কারণে শ্রেণিকক্ষের সামনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে গিয়ে কাদা-পানিতে নষ্ট হচ্ছে পোশাক।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ওই মাদাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হক জানান, মাঠজুড়ে বালি ফেলায় উত্তরপাশের প্রবেশ মুখ বন্ধ হয়েছে। আবার দক্ষিণ পাশের প্রবেশ মুখেও বালির স্তুপ থাকায় শিক্ষার্থীরা নির্বিঘেœ মাদরাসায় প্রবেশ করতে পারছেনা। তাছাড়া মাদরাসার উত্তরপাশের ৫টি শ্রেণিকক্ষের বাড়ান্দায় পানি উঠায় পাঠদান এবং চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। সভাপতি নিজেই মাদরসা মাঠে বালি রাখায় তিনি অধ্যক্ষ হলেও কিছু বলতে পারছেন না।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বালি ফেলার কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাময়িক দুর্ভোগ হলেও মাদরাসা মাঠেও কিছু বালি দেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এয়াহেদুজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। এই দীর্ঘ বিরতীর পরও যদি নানা কারণে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ হয় তা দুঃখজনক। সভাপতি হয়ে মাদরাসা মাঠে বালি রাখা তিনি ঠিক করেননি। খোঁজ দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।