সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪৮:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১
  • ৬৩ Time View

পঞ্চগড় প্রতিনিধি.

পঞ্চগড়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে মনোনয়ন পুনবির্বেচনার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের কর্মী ও সমর্থকেরা।

শুক্রবার (২২ অক্টােবর) বিকেলে পঞ্চগড় শহরের বানিয়া পট্টি এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধাঁ দেয়। এসময় পুলিশ তাদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে সড়ক থেকে তাদের সড়িয়ে দেয়। পরে তারা শহরের শেরে বাংলা পার্ক এলাকায় গিয়ে ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের পুন মনোনয়ন চেয়ে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকে। পরে সেখান থেকেও তাদের সড়িয়ে দেয় পুলিশ।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে দুইবার ইউপি নির্বাচন করেছেন। গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯৪ ভোটের ব্যবধানে জামায়াতে ইসলামীর সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর ই আলমের কাছে পরাজিত হন।

এসময় হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের ছেলে ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক খাজা ময়েনউদ্দীন আহমেদ সম্রাট জানান, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন হাড়িভাসা ইউনিয়নে গত দুই দুই সফলতার সাথে চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালন করেন। গত বছর এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারণে আমার বাবা ৯৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এবারের নির্বাচনে জেলা থেকে মাত্র একজনের নাম পাঠানো হয়েছে। টাকার বিনিময়ে মনির নামে একজনকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছে। যার কোন জনপ্রিয়তা নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা পুন মনোনয়নের দাবীতে একটি মিছিল করছিলাম। পুলিশ আমাদের মিছিলে এসে বাধাঁ প্রদান করে। ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে আমাদের কর্মী সমর্থকদের উপরে চড়াও হয়, মারধর করে। আমাদের নারী কর্মীর উপরে হামলা করে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাই, সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী পুনর্বিবেচনা করে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে দেয়া হোক। না হলে এ ইউনিয়নের মানুষ একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হারাবে। এলাকার উন্নয়ন বাধাঁগ্রস্থ হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জানান, মনোনয়ন বিবেচনা বিষয়টি দলীয়। তারা এসে সড়কে দাড়ানোয় জ্যামের সৃষ্টি হয়েছিল। একারণে সড়ক থেকে তাদের সড়িয়ে দেয়া হয়েছে মাত্র।

উল্লেখ্য গত ১৪ই অক্টোবর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২২ অক্টোবর (শুক্রবার) বেলা ১১ টায় ৩য় ধাপে রংপুর বিভাগের ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীদের নাম ও তালিকা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ।

এ ধাপে ২ নভেম্বর মনোনয়ন দাখিল, বাছাই ৪ নভেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১১ই নভেম্বর এবং ভোট গ্রহণ হবে ২৮ শে নভেম্বর। এসব ইউপি নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যেমে ভোট গ্রহনের কথা রয়েছে।

Tag :

পঞ্চগড়ে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ

Update Time : ০৭:৪৮:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

পঞ্চগড় প্রতিনিধি.

পঞ্চগড়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে মনোনয়ন পুনবির্বেচনার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের কর্মী ও সমর্থকেরা।

শুক্রবার (২২ অক্টােবর) বিকেলে পঞ্চগড় শহরের বানিয়া পট্টি এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধাঁ দেয়। এসময় পুলিশ তাদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে সড়ক থেকে তাদের সড়িয়ে দেয়। পরে তারা শহরের শেরে বাংলা পার্ক এলাকায় গিয়ে ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের পুন মনোনয়ন চেয়ে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকে। পরে সেখান থেকেও তাদের সড়িয়ে দেয় পুলিশ।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে দুইবার ইউপি নির্বাচন করেছেন। গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯৪ ভোটের ব্যবধানে জামায়াতে ইসলামীর সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর ই আলমের কাছে পরাজিত হন।

এসময় হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের ছেলে ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক খাজা ময়েনউদ্দীন আহমেদ সম্রাট জানান, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন হাড়িভাসা ইউনিয়নে গত দুই দুই সফলতার সাথে চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালন করেন। গত বছর এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারণে আমার বাবা ৯৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এবারের নির্বাচনে জেলা থেকে মাত্র একজনের নাম পাঠানো হয়েছে। টাকার বিনিময়ে মনির নামে একজনকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছে। যার কোন জনপ্রিয়তা নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা পুন মনোনয়নের দাবীতে একটি মিছিল করছিলাম। পুলিশ আমাদের মিছিলে এসে বাধাঁ প্রদান করে। ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে আমাদের কর্মী সমর্থকদের উপরে চড়াও হয়, মারধর করে। আমাদের নারী কর্মীর উপরে হামলা করে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাই, সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী পুনর্বিবেচনা করে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে দেয়া হোক। না হলে এ ইউনিয়নের মানুষ একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হারাবে। এলাকার উন্নয়ন বাধাঁগ্রস্থ হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জানান, মনোনয়ন বিবেচনা বিষয়টি দলীয়। তারা এসে সড়কে দাড়ানোয় জ্যামের সৃষ্টি হয়েছিল। একারণে সড়ক থেকে তাদের সড়িয়ে দেয়া হয়েছে মাত্র।

উল্লেখ্য গত ১৪ই অক্টোবর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২২ অক্টোবর (শুক্রবার) বেলা ১১ টায় ৩য় ধাপে রংপুর বিভাগের ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীদের নাম ও তালিকা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ।

এ ধাপে ২ নভেম্বর মনোনয়ন দাখিল, বাছাই ৪ নভেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১১ই নভেম্বর এবং ভোট গ্রহণ হবে ২৮ শে নভেম্বর। এসব ইউপি নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যেমে ভোট গ্রহনের কথা রয়েছে।