শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আবারো উঁকি দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
  • ৬৪ Time View

পঞ্চগড় প্রতিনিধি.

হিমালয় কণ্যা খ্যাত দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন থেকে আবারো উঁকি দিয়েছে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দৃষ্টিনন্দন কাঞ্চনজঙ্ঘা। গত কয়েকদিন ধরে আবাশ মেঘ মুক্ত থাকার কারণে ভারতের সিকিম ও নেপাল সীমান্তে অবস্থিত পৃথিবীর অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলছে।

চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য মেলে ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। সূর্যের লাল আভা কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় পরার সাথে সাথে রক্তিম আকাশ ধারণ করে। মনে হয় কেউ যেন নববধূর কপালে সিধূরের আচঁড় দিয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্যদোয়ের পরে থেকে বেলা ১১টা পযংন্ত এবং বিকেল ৪টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্গা ভালভাবে দেখা যায়। তওব এ নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার উপযুক্ত স্থান তেতুঁলিয়া ডাকবাংলো। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার মজাই যেন আলাদা।

এর আগে, এ বছরের ১১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেখা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা। আকাশ মেঘযুক্ত থাকায় এর পর আর দেখা মেলেনি। বুধবার ভোর থেকে এ অপরূপ দৃশ্য চোখের সামনে স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। বিগত বছরগুলোতে অক্টোবরের শুরু থেকে এমন দৃশ্য দেখা যেত। চলতি বছর সেপ্টেম্বরেই আকস্মিক কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা দেওয়ার পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা তেঁতুলিয়ায় আসতে শুরু করেন। কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যান। গত কয়েকদিন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা দেওয়ায় তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে তেঁতুলিয়ার সরকারি-বেসরকারি সব রেস্ট হাউজ ও হোটেলগুলো অগ্রিম বুকিং শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরই কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করেন স্থানীয়রা। এবারও তারাই প্রথম দর্শন করেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। শীতকাল ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করতে নভেম্বর-ডিসেম্বরে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ভিড় করেন তেঁতুলিয়ায়।

আশরাফুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি জানান, মেঘ মুক্ত আকাশে ভোর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্য দেখা যায়। জেলার সব স্থান থেকেই এ দৃশ্য খালি চোখে দেখা যায়। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো সংলগ্ন সীমান্ত নদী মহানন্দার তীর এবং শালবাহান ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কাঞ্চন।

রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জানান, ভোরের আকাশে কালচে, এরপর শুভ্র বরফের সর্বশেষ সোনালী বর্ণের কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য সব আমাদের আনন্দ দেয়। পাশাপাশি সূর্যাস্তের সময় নানা বর্ণের কাঞ্চনজঙ্ঘা সকলকে মুগ্ধ করে। এক কথায় নিজের চোখে না দেখলে এর সৌন্দর্য বর্ণনা করার মতো নয়।

তেতুঁলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ জানান, প্রতি বছরই অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলত। এবার সেপ্টেম্বরে ৩/৪ দিন দেখা দিয়েছিল। এর পর থেকে আকাশে মেঘ থাকার কারণে আর দেখা মেলেনি। তবে গত কয়েকদিন ধরে আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিস্কার ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে।

Tag :

আবারো উঁকি দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা

Update Time : ০৫:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১

পঞ্চগড় প্রতিনিধি.

হিমালয় কণ্যা খ্যাত দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন থেকে আবারো উঁকি দিয়েছে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দৃষ্টিনন্দন কাঞ্চনজঙ্ঘা। গত কয়েকদিন ধরে আবাশ মেঘ মুক্ত থাকার কারণে ভারতের সিকিম ও নেপাল সীমান্তে অবস্থিত পৃথিবীর অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলছে।

চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য মেলে ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। সূর্যের লাল আভা কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় পরার সাথে সাথে রক্তিম আকাশ ধারণ করে। মনে হয় কেউ যেন নববধূর কপালে সিধূরের আচঁড় দিয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্যদোয়ের পরে থেকে বেলা ১১টা পযংন্ত এবং বিকেল ৪টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্গা ভালভাবে দেখা যায়। তওব এ নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার উপযুক্ত স্থান তেতুঁলিয়া ডাকবাংলো। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার মজাই যেন আলাদা।

এর আগে, এ বছরের ১১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেখা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা। আকাশ মেঘযুক্ত থাকায় এর পর আর দেখা মেলেনি। বুধবার ভোর থেকে এ অপরূপ দৃশ্য চোখের সামনে স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। বিগত বছরগুলোতে অক্টোবরের শুরু থেকে এমন দৃশ্য দেখা যেত। চলতি বছর সেপ্টেম্বরেই আকস্মিক কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা দেওয়ার পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা তেঁতুলিয়ায় আসতে শুরু করেন। কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যান। গত কয়েকদিন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা দেওয়ায় তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে তেঁতুলিয়ার সরকারি-বেসরকারি সব রেস্ট হাউজ ও হোটেলগুলো অগ্রিম বুকিং শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরই কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করেন স্থানীয়রা। এবারও তারাই প্রথম দর্শন করেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। শীতকাল ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করতে নভেম্বর-ডিসেম্বরে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ভিড় করেন তেঁতুলিয়ায়।

আশরাফুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি জানান, মেঘ মুক্ত আকাশে ভোর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্য দেখা যায়। জেলার সব স্থান থেকেই এ দৃশ্য খালি চোখে দেখা যায়। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো সংলগ্ন সীমান্ত নদী মহানন্দার তীর এবং শালবাহান ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কাঞ্চন।

রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জানান, ভোরের আকাশে কালচে, এরপর শুভ্র বরফের সর্বশেষ সোনালী বর্ণের কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য সব আমাদের আনন্দ দেয়। পাশাপাশি সূর্যাস্তের সময় নানা বর্ণের কাঞ্চনজঙ্ঘা সকলকে মুগ্ধ করে। এক কথায় নিজের চোখে না দেখলে এর সৌন্দর্য বর্ণনা করার মতো নয়।

তেতুঁলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ জানান, প্রতি বছরই অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলত। এবার সেপ্টেম্বরে ৩/৪ দিন দেখা দিয়েছিল। এর পর থেকে আকাশে মেঘ থাকার কারণে আর দেখা মেলেনি। তবে গত কয়েকদিন ধরে আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিস্কার ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে।