বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পরিবর্তন হয়নি চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুলের নাম !

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৩৭:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২
  • ৮০ Time View

মোঃ মাজেম আলী মলিন.

ভাষার মাস শেষ শুরু হলো স্বাধিনতার মাস। এভাবেই পথ পরিক্রমায় পার হলো স্বাধীনতার রজতজৈয়ন্তিও। অথচ স্বাধিনতার ৫০ বছরেও পরিবর্তন করা হয়নি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের নাম।

প্রতিষ্ঠানটির বয়স এখন ৮০ বছর হলেও নাম পরিবর্তনে নেই কোন পদক্ষেপ। অথচ ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ওই খাজা নাজিম উদ্দীন এক ভাষণে জিন্নাহর পথ অনুসরন করেই বলেছিলো উর্দুই হবে পুর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। সেই নাজিম উদ্দিনের নামেই এখনো চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার অন্তত এই স্বধিনতার মাসে প্রতিষ্ঠানটি থেকে নাজিম উদ্দীনের নাম অপসারিত হবে বলে স্থানীয়দের স্বপ্ন।

১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়টি এখন সময়ের আর্বতে উচ্চ মাধমিকে রুপান্তরিত হলেও নাম পরিবর্তনে নেই কারো মাথা ব্যাথা। চারদিক দেওয়ালে ঘেরা বিদ্যালয়টির প্রধান ফটকেই বড় সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘ চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ’। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি উঠে আসার পরও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিনের নামানুসারের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে রয়ে গেছে এ কলঙ্কিত নাম!

 


বিভিন্ন সময়ে এই স্কুলের নাম পরিবর্তনের দাবী উঠলেও তা আলোর মুখ দেখতে পারেনি আজ পর্যন্ত। মূলত খাজা নাজিম উদ্দীনের নির্দেশেই পুলিশ তৎকালিন সময়ে ছাত্র সমাজের উপর গুলি চালায় বলে ধারণা করা হয়। অথচ রাষ্ট্রভাষা বাংলার শত্রু ঘৃণ্য সেই নাজিম উদ্দীনের নাম বিগত ৮০ বছর ধরে গুরুদাসপুর বাসী বয়ে বেড়াচ্ছেন।

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গার কঙ্কযুক্ত ব্যাক্তির নামে কলেজগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অথচ বাংলা ভাষার বিরুদ্ধাচরণ করা সেই খাজা নাজিম উদ্দীনের নামে ‘উপজেলা সদরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়’ এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। একাধিকবার এই প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি আজও। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে জন্মেছে ক্ষোভ ও হতাশা। এবার অন্তত এই স্বধিনতার মাসে প্রতিষ্ঠানটি থেকে নাজিম উদ্দীনের নাম অপসারণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী ভুঁইয়া জানান, আমি মাত্র কয়েক দিন পুর্বে দায়িত্ব গ্রহন করেছি। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা স্বাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আরিফুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, আমি সবেমাত্র সভাপতি হলাম বাংলা ভাষা ও স্বাধিনতার প্রতি সম্মান রেখে এলাকাবসির পরামর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন,দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই স্কুলের নাম পরিবর্তন করার জন্য আমি এ এলাকার এমপি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

Tag :

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পরিবর্তন হয়নি চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুলের নাম !

Update Time : ১১:৩৭:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২

মোঃ মাজেম আলী মলিন.

ভাষার মাস শেষ শুরু হলো স্বাধিনতার মাস। এভাবেই পথ পরিক্রমায় পার হলো স্বাধীনতার রজতজৈয়ন্তিও। অথচ স্বাধিনতার ৫০ বছরেও পরিবর্তন করা হয়নি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের নাম।

প্রতিষ্ঠানটির বয়স এখন ৮০ বছর হলেও নাম পরিবর্তনে নেই কোন পদক্ষেপ। অথচ ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ওই খাজা নাজিম উদ্দীন এক ভাষণে জিন্নাহর পথ অনুসরন করেই বলেছিলো উর্দুই হবে পুর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। সেই নাজিম উদ্দিনের নামেই এখনো চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার অন্তত এই স্বধিনতার মাসে প্রতিষ্ঠানটি থেকে নাজিম উদ্দীনের নাম অপসারিত হবে বলে স্থানীয়দের স্বপ্ন।

১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়টি এখন সময়ের আর্বতে উচ্চ মাধমিকে রুপান্তরিত হলেও নাম পরিবর্তনে নেই কারো মাথা ব্যাথা। চারদিক দেওয়ালে ঘেরা বিদ্যালয়টির প্রধান ফটকেই বড় সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘ চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ’। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি উঠে আসার পরও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিনের নামানুসারের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে রয়ে গেছে এ কলঙ্কিত নাম!

 


বিভিন্ন সময়ে এই স্কুলের নাম পরিবর্তনের দাবী উঠলেও তা আলোর মুখ দেখতে পারেনি আজ পর্যন্ত। মূলত খাজা নাজিম উদ্দীনের নির্দেশেই পুলিশ তৎকালিন সময়ে ছাত্র সমাজের উপর গুলি চালায় বলে ধারণা করা হয়। অথচ রাষ্ট্রভাষা বাংলার শত্রু ঘৃণ্য সেই নাজিম উদ্দীনের নাম বিগত ৮০ বছর ধরে গুরুদাসপুর বাসী বয়ে বেড়াচ্ছেন।

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গার কঙ্কযুক্ত ব্যাক্তির নামে কলেজগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অথচ বাংলা ভাষার বিরুদ্ধাচরণ করা সেই খাজা নাজিম উদ্দীনের নামে ‘উপজেলা সদরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়’ এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। একাধিকবার এই প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি আজও। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে জন্মেছে ক্ষোভ ও হতাশা। এবার অন্তত এই স্বধিনতার মাসে প্রতিষ্ঠানটি থেকে নাজিম উদ্দীনের নাম অপসারণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী ভুঁইয়া জানান, আমি মাত্র কয়েক দিন পুর্বে দায়িত্ব গ্রহন করেছি। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা স্বাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আরিফুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, আমি সবেমাত্র সভাপতি হলাম বাংলা ভাষা ও স্বাধিনতার প্রতি সম্মান রেখে এলাকাবসির পরামর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন,দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই স্কুলের নাম পরিবর্তন করার জন্য আমি এ এলাকার এমপি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।