বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাণীনগরে যৌতুক না দেওয়ায় গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নির্যাতন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২
  • ৫২ Time View

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে যৌতুকের দাবিকৃত চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় এক গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

নির্যাতনের বিচার চেয়ে রাণীনগর থানা পুলিশের দারস্থ হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূ আদালতে মামলা দায়ে করেছেন। এদিকে মামলা করার প্রায় এক মাস পার হলেও কোন বিচার না পাওয়ায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারী রাণীনগর উপজেলার মধুপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে ফিরোজ হোসেন পাশের ভান্ডারপুর গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে হাসিনা বেগমকে (২৬) বিয়ে করেন। বিয়ের দিন জামাইকে চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসা করার জন্য ১ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেন হাসিনার বাবা।

কিছুদিন পর থেকেই ফিরোজ হোসেন আরো ১ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য তার স্ত্রী হাসিনা বেগমকে চাপ দিতে থাকেন। হাসিনা দাবি মেনে না নেওয়ায় স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন তার উপর নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্বামী ফিরোজ হোসেনের সাথে হাসিনা বেগমের চরম বাকবিতন্ডা হয়। প্রতিপক্ষ হিসেবে স্বামীর পরিবারের কয়েকজন আত্মীয় হাসিনাকে নির্যাতন করে।

নির্যাতনকারীরা হাসিনার সারা শরীরে এলোপাতারী মারপিট করলে হাসিনা অজ্ঞান হয়ে পরে। এ সময় প্রকাশ্যে স্বামী ফিরোজ হোসেনসহ অন্যরা কেঁচি দিয়ে হাসিনার চুল কেটে দেয়। পরে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তিনি এখন দরিদ্র বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন।

নির্যাতনের শিকার হাসিনা বেগম জানান, ঘটনার পরদিন সকালে রাণীনগর থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা বা অভিযোগ নেয়নি। পরে নিরুপায় হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালত-১ এ মামলা দায়ের করেন।

গৃহবধূর বাবা হোসেন আলী বলেন, মামলা দায়ের করা হলেও আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে রাণীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ বলেন, গৃহবধু হাসিনা বা তার পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার থানায় মামলা রের্কড করা হয়েছে। আগামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Tag :

রাণীনগরে যৌতুক না দেওয়ায় গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নির্যাতন

Update Time : ০৪:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে যৌতুকের দাবিকৃত চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় এক গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

নির্যাতনের বিচার চেয়ে রাণীনগর থানা পুলিশের দারস্থ হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূ আদালতে মামলা দায়ে করেছেন। এদিকে মামলা করার প্রায় এক মাস পার হলেও কোন বিচার না পাওয়ায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারী রাণীনগর উপজেলার মধুপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে ফিরোজ হোসেন পাশের ভান্ডারপুর গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে হাসিনা বেগমকে (২৬) বিয়ে করেন। বিয়ের দিন জামাইকে চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসা করার জন্য ১ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেন হাসিনার বাবা।

কিছুদিন পর থেকেই ফিরোজ হোসেন আরো ১ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য তার স্ত্রী হাসিনা বেগমকে চাপ দিতে থাকেন। হাসিনা দাবি মেনে না নেওয়ায় স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন তার উপর নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্বামী ফিরোজ হোসেনের সাথে হাসিনা বেগমের চরম বাকবিতন্ডা হয়। প্রতিপক্ষ হিসেবে স্বামীর পরিবারের কয়েকজন আত্মীয় হাসিনাকে নির্যাতন করে।

নির্যাতনকারীরা হাসিনার সারা শরীরে এলোপাতারী মারপিট করলে হাসিনা অজ্ঞান হয়ে পরে। এ সময় প্রকাশ্যে স্বামী ফিরোজ হোসেনসহ অন্যরা কেঁচি দিয়ে হাসিনার চুল কেটে দেয়। পরে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তিনি এখন দরিদ্র বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন।

নির্যাতনের শিকার হাসিনা বেগম জানান, ঘটনার পরদিন সকালে রাণীনগর থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা বা অভিযোগ নেয়নি। পরে নিরুপায় হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালত-১ এ মামলা দায়ের করেন।

গৃহবধূর বাবা হোসেন আলী বলেন, মামলা দায়ের করা হলেও আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে রাণীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ বলেন, গৃহবধু হাসিনা বা তার পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার থানায় মামলা রের্কড করা হয়েছে। আগামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।