শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মায়ের গর্ভ ফেটে বের হয়ে সড়কেই পড়ে ছিল নবজাতকটি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২
  • ৩৯ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক ময়মনসিংহ. ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্নাকে নিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি শেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ফিরছিলেন তারা। হঠাৎ বেপরোয়া একটি ট্রাক চাপা দেয় তাদের। ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় ওই তিনজনের। তবে অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ফুটফুটে নবজাতক।

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। তাদের বাড়ি ত্রিশাল উপজেলার রায়মণি এলাকায়।

শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে কোর্টভবন এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলের কাছেই দায়িত্ব পালন করছিলেন ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর আলম।

তিনি বলেন, ট্রাকটি চাপা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আশপাশের লোকজন ছোটাছুটি করে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় দেখা যায় ট্রাকটির চাপ লেগে গর্ভ ফেটে বের হয়ে এসেছে নবজাতক। নবজাতক ভূমিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সেখানে নেওয়ার পরই জানা যায় জীবিত আছে নবজাতক কন্যা। খবর পেয়ে ছুটে যান নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফ রব্বানী ও প্রতিবেশী শাহজাহান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতককে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমবি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফ রব্বানী বলেন, রত্না বেগম অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার প্রসবের সময় দুই দিন পার হয়ে যাওয়ায় তিনি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে আসেন। এরপর সেখান থেকে ফেরার পথে একটি ট্রাক তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই পরিবারের ওই তিনজনের মৃত্যু হয়। তবে এ সময় আঘাত পেয়ে গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ওই নবজাতক।

হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার আরিফ আল নূর বলেন, এখানে আনার পর আমরা বাচ্চাটির অবস্থা ভালো পেয়েছি। পরে এক্সরে করার পর ডান হাতের দুইটি অংশ ভাঙ্গা দেখা গেছে। শিশুটি এখন নবজাতক বিভাগে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা গেলেও চালক পালিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

Tag :

মায়ের গর্ভ ফেটে বের হয়ে সড়কেই পড়ে ছিল নবজাতকটি

Update Time : ০৮:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২

বিশেষ প্রতিবেদক ময়মনসিংহ. ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্নাকে নিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি শেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ফিরছিলেন তারা। হঠাৎ বেপরোয়া একটি ট্রাক চাপা দেয় তাদের। ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় ওই তিনজনের। তবে অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ফুটফুটে নবজাতক।

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। তাদের বাড়ি ত্রিশাল উপজেলার রায়মণি এলাকায়।

শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে কোর্টভবন এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলের কাছেই দায়িত্ব পালন করছিলেন ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর আলম।

তিনি বলেন, ট্রাকটি চাপা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আশপাশের লোকজন ছোটাছুটি করে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় দেখা যায় ট্রাকটির চাপ লেগে গর্ভ ফেটে বের হয়ে এসেছে নবজাতক। নবজাতক ভূমিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সেখানে নেওয়ার পরই জানা যায় জীবিত আছে নবজাতক কন্যা। খবর পেয়ে ছুটে যান নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফ রব্বানী ও প্রতিবেশী শাহজাহান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতককে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমবি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফ রব্বানী বলেন, রত্না বেগম অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার প্রসবের সময় দুই দিন পার হয়ে যাওয়ায় তিনি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে আসেন। এরপর সেখান থেকে ফেরার পথে একটি ট্রাক তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই পরিবারের ওই তিনজনের মৃত্যু হয়। তবে এ সময় আঘাত পেয়ে গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ওই নবজাতক।

হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার আরিফ আল নূর বলেন, এখানে আনার পর আমরা বাচ্চাটির অবস্থা ভালো পেয়েছি। পরে এক্সরে করার পর ডান হাতের দুইটি অংশ ভাঙ্গা দেখা গেছে। শিশুটি এখন নবজাতক বিভাগে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা গেলেও চালক পালিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।