শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুরুদাসপুরে খরতাপে পুড়ছে ফসল, বাড়ছে রোগী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১১:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২
  • ৭৩ Time View

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি. নাটোরের গুরুদাসপুরে চলতি বর্ষা মৌসুমের আষাড় মাস জুড়ে নেই কোনো বৃষ্টি।  দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর তীব্র খরতাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ভোগান্তিতে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুসহ সাধারন মানুষ। একটু স্বস্তি পেতে ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন গাছের ছায়ায়। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

চলনবিল অধ্যুষিত গুরুদাসপুরে গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। ভোর থেকেই শুরু হয় সূর্যের প্রখরতা। সকালেই মনে হয় যেন সূর্য মাথার ওপর এসে চৈত্রে দুপুরের উত্তাপ ছড়াচ্ছে। নিত্যদিনের এই পরিস্থিতি এখন উপজেলার সর্বত্র বিরাজমান। আষাড় শেষ হলেও কাংখিত বৃষ্টি না হওয়ায় বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা। তাপমাত্রার তীব্রতায় ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন শ্রমজীবী, বয়স্ক ও শিশুসহ সকল শ্রেণীর মানুষ। বিভিন্ন বয়সের নানা শেণি পেশার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা ও শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে। ফলে হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

পাশাপাশি দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় চৈত্রের দাবদাহের ন্যায় আষাড়েও পুড়ছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে রোদে পুড়ে মাঠে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক শ্রমিকরা। ফসল বাঁচাতে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত সেচ।

উপজেলার চাপিলার বৃ-চাপিলা গ্রামের কৃষক ফজর আলী বলেন, করলা এবং পটলের আবাদ করেছেন তিনি। এমন তাপদাহ দেখেননি তিনি। রোদের তাপে গোড়া শুকিয়ে মরে যাচ্ছে গাছ, সেচ দিয়েও যাচ্ছেনা বাঁচানো।

মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের আবু ইউসুফ বলেন, এবছর বর্ষা মৌসুমেও গত দুই মাস যাবত বৃষ্টিপাত নাই বললেই চলে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর খরতাপে বোনা আমন ও বোনা আউস ধানের গাছ পানির অভাবে পুড়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে মারা যাচ্ছে রোপা আমনের বীজতলার চারাগাছ। পরিস্থিতির অবসান না হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে রোপা আমনের চাষ।

গুরুদাসপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড গরমের কারনে হাসপাতালে বেড়েছে শিশু ও বয়স্ক রুগির সংখ্যা। তাই শিশু ও বয়স্কদের জন্য প্রয়োজন বাড়তি সচেনতা। ঘরোয়া চিকিৎসায় পাতলা পায়খানা ও বমি রোধ করা না গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান জানান, এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে। কিছুদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেন তিনি।

Tag :

গুরুদাসপুরে খরতাপে পুড়ছে ফসল, বাড়ছে রোগী

Update Time : ০৫:১১:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি. নাটোরের গুরুদাসপুরে চলতি বর্ষা মৌসুমের আষাড় মাস জুড়ে নেই কোনো বৃষ্টি।  দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর তীব্র খরতাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ভোগান্তিতে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুসহ সাধারন মানুষ। একটু স্বস্তি পেতে ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন গাছের ছায়ায়। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

চলনবিল অধ্যুষিত গুরুদাসপুরে গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। ভোর থেকেই শুরু হয় সূর্যের প্রখরতা। সকালেই মনে হয় যেন সূর্য মাথার ওপর এসে চৈত্রে দুপুরের উত্তাপ ছড়াচ্ছে। নিত্যদিনের এই পরিস্থিতি এখন উপজেলার সর্বত্র বিরাজমান। আষাড় শেষ হলেও কাংখিত বৃষ্টি না হওয়ায় বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা। তাপমাত্রার তীব্রতায় ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন শ্রমজীবী, বয়স্ক ও শিশুসহ সকল শ্রেণীর মানুষ। বিভিন্ন বয়সের নানা শেণি পেশার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা ও শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে। ফলে হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

পাশাপাশি দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় চৈত্রের দাবদাহের ন্যায় আষাড়েও পুড়ছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে রোদে পুড়ে মাঠে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক শ্রমিকরা। ফসল বাঁচাতে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত সেচ।

উপজেলার চাপিলার বৃ-চাপিলা গ্রামের কৃষক ফজর আলী বলেন, করলা এবং পটলের আবাদ করেছেন তিনি। এমন তাপদাহ দেখেননি তিনি। রোদের তাপে গোড়া শুকিয়ে মরে যাচ্ছে গাছ, সেচ দিয়েও যাচ্ছেনা বাঁচানো।

মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের আবু ইউসুফ বলেন, এবছর বর্ষা মৌসুমেও গত দুই মাস যাবত বৃষ্টিপাত নাই বললেই চলে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর খরতাপে বোনা আমন ও বোনা আউস ধানের গাছ পানির অভাবে পুড়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে মারা যাচ্ছে রোপা আমনের বীজতলার চারাগাছ। পরিস্থিতির অবসান না হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে রোপা আমনের চাষ।

গুরুদাসপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড গরমের কারনে হাসপাতালে বেড়েছে শিশু ও বয়স্ক রুগির সংখ্যা। তাই শিশু ও বয়স্কদের জন্য প্রয়োজন বাড়তি সচেনতা। ঘরোয়া চিকিৎসায় পাতলা পায়খানা ও বমি রোধ করা না গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান জানান, এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে। কিছুদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেন তিনি।