মোঃ মাজেম আলী মলিন. আমেনা বিবিরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। বাল্য বিয়ের কবল থেকে বেরিয়ে এসে সাথী সুলনাতারা এখন বিদ্যালয়মুখি। কৃষক আবুল মিয়াদের জমির ধানও সময়মতো ঘরে উঠেছে। জমি নিয়ে আর বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছেনা কৃষকদের। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এসেছে অসাধারণ পরিবর্তন। উন্নয়ন অগ্রযাত্রা আর মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে আমুল পবির্তন। ইউএনও আসবে ইউএনও যাবে কিন্তু জনগনের মনে জায়গা করে নেওয়া খুবই দুরহ ব্যাপার যেটি করে দেখিয়ে গেলেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তমাল হোসেন।
ইতি মধ্যেই তার ঝুলিতে যোগ হয়েছে অনেক আর্জন। যে কারনে সম্প্রতি সে পদোন্নিতি পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন জয়পুরহাট জেলায়।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত তিন বছরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ৩১১টি বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এরমধ্যে জেল-জরিমানা ৪২টি। বাকিগুলো শর্ত সাপেক্ষে বন্ধ করা হয়েছে। বাল্যবিয়ের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া কিশোরী সাথী সুলতানারা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখি হচ্ছে।
এদিকে ভূমি অফিসে মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে গণশুনানী, জমির নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, খাস জমির বন্দোবস্ত, অর্পিজ সম্পত্তির লিজ নবায়ণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদানসহ ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমে এসেছে আধুনিকতা। পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন বছরে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। এছাড়া নামজারী থেকে আয় হয়েছে ৭২ লাখ ১৫ হাজার ৯৮০ টাকা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, সরকারি ২.৯৭ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সেসব জমিতেই বৃদ্ধ আমেনা বিবির মতো ১৮৫টি দরিদ্র পরিবারকে আবাসন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিজের জায়গায় আবাসনের আওতায় আনা হয়েছে আরো ৪০টি পরিবারকে।
আর মাদকের বিস্তার কমাতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে গত তিন বছরে সাজা/জরিমানা করা হয়েছে ৫৩১টি। হিসাবমতে- ৩৫ লক্ষাধিক টাকা আদায় হয়েছে এসব অভিযান থেকে।
সূত্র বলছে, বিদ্যালয় ও কলেজের খেলার মাঠগুলো সংস্কার করে বিপথগামীদের খেলা-ধুলায় সম্পৃক্তও করা হয়েছে উপজেলা ব্যাপি তিন বছরে কমপক্ষে ৩০টির মতো টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বছরজুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিমনা করে গড়ে তোলার কাজও করেছেন ইউএনও মোঃ তমাল হোসেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছেন দিন রাত। বছর ব্যাপি নানা সৃজনশীল কাজকর্মে সুনজরে ছিলেন গনমাধ্যম কর্মীদেরও।
গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হামিদা আক্তার হ্যাপী বলেন, করোনার মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সক্রিয়তাছিলো খুবই প্রসংসনীয়। কৃষকের ধান কাটা থেকে শুরু করে বাল্যবিয়ে, মাদকের বিস্তার রোধ, যুব সমাজকে খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলা,বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করাসহ সকল কাজই তিনি করেছেন গুরুত্বেও সাথে। এতে করে করোনায়ও গুরুদাসপুরের অর্থনৈতি ঠিক রয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন জানালেন, করোনাকে অজুহাত না বানিয়ে অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে তিনি এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবু রাসেল নিরলশভাবে কাজ করছেন। নতুন করে একটি লিচু আড়ৎ ও অনেক কিছুই অনিয়ম দুর করে সরকারি রাজস্বের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া সরকারী বেদখল হওয়া স্থাপনাগুলোও উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। গরিব অসহাদেও পাশে সর্বদা থাকার চেষ্টা করেছি। পুরো উপজেলার কার্যক্রম ডিজিটালাইজ করেছি।