শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৫২ Time View
 নোয়াখালী প্রতিনিধি. নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় প্রশাসনের ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকার জমজমাট জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ আসর গুলোতে ছয় গুটি, টুকটুকি, ৩ তাস সহ আরো নানা নামে জুয়া চলে।  
গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাত থেকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের মিয়া রাজী সাহেবের আনন্দ মেলার নামে এ জুয়ার আসর চলছে। গত তিন দিনে এদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হবে এ যেন, একেকটি মিনি ক্যাসিনো। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চলে এই জুয়ার আড্ডা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২৯ জানুয়ারি রাত থেকেই উপজেলার পূর্ব রাজুরগাঁও গ্রামে মিয়া রাজী সাহেবের আনন্দ মেলার নামে এ জুয়ার আসর চলছে। প্রথম দিন বোর্ড প্রতি ৮০ হাজার টাকা করে ২০টি জুয়ার বোর্ড বসানো হয়, দ্বিতীয় দিন বোর্ড প্রতি ৫৫হাজার টাকা করে ১৮টি ও তৃতীয় দিন বোর্ড প্রতি ৬০ হাজার টাকা করে ১৮টি জুয়ার বোর্ড প্রকাশ্যে বসনো হয়। জুয়ার বোর্ড থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে প্রশাসন। বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে প্রকাশ্যে অবাধে জুয়ার আসার চালানোর সুবিধা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ আরো বলেন, প্রশাসনকে পুরোপুরি ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে ছয় গুটি, টুকটুকি, ৩ তাস, ওয়ানটেন সহ আরো বিভিন্ন নামে রাতভর জুয়ার আসর চলছে। এর নেপথ্যে রয়েছে মেলা কমিটির সভাপতি ও সুন্দলপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো.ইলিয়াছ। উঠতি বয়সী যুবক থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন জুয়ার আড্ডায়। জুয়ায় আড্ডায় স্কুল পড়ুয়া কিশোররাও আসে। জুয়া খেলার পাশাপাশি চলে রাতভর মাদকসেবন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় , মিয়া রাজী সাহেবের আনন্দ মেলা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুম ও স্থানীয় একাধিক ইউপি সদস্য জুয়ার বোর্ড থেকে টাকা সংগ্রহ করে মেলা কমিটির সভাপতি ও সুন্দলপুর ইউপি চেয়রম্যান হাজী মো.ইলিয়াছের হাতে দেয়। পরে এই টাকা তিনি প্রশাসন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মিসহ বিভিন্ন লোকের মাঝে বন্টন করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.মাসুমের ফোনে কল করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত সুন্দলপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো.ইলিয়াছ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমরা চেয়ারম্যানরা প্রতিটি মেলা হোক বাজার হোক চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে সভাপতি থাকে। জুয়া চলে নাই দাবি করে করে তিনি বলেন, গতকাল কি হয়েছে আমি জানিনা। আমি কালকে মেলায় যায়নি। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, মেলার সাথে সংশ্লিষ্টদের জুয়া বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসপি স্যারের নির্দেশ মেলায় অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া চলছে মেলা বন্ধ করে দিতে।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা সুলতানা বলেন, জেলা প্রশাশন থেকে মেলার আয়োজক কমিটি ১৫ দিনের জন্য মেলার অনুমতি নেয়। তবে মেলায় জুয়ার বোর্ড বসানোর কোনো অনুমোদন নেই।  জুয়ার আসর চললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি ওসির সাথে কথা বলব।  নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ

Update Time : ০৮:২৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
 নোয়াখালী প্রতিনিধি. নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় প্রশাসনের ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকার জমজমাট জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ আসর গুলোতে ছয় গুটি, টুকটুকি, ৩ তাস সহ আরো নানা নামে জুয়া চলে।  
গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাত থেকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের মিয়া রাজী সাহেবের আনন্দ মেলার নামে এ জুয়ার আসর চলছে। গত তিন দিনে এদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হবে এ যেন, একেকটি মিনি ক্যাসিনো। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চলে এই জুয়ার আড্ডা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২৯ জানুয়ারি রাত থেকেই উপজেলার পূর্ব রাজুরগাঁও গ্রামে মিয়া রাজী সাহেবের আনন্দ মেলার নামে এ জুয়ার আসর চলছে। প্রথম দিন বোর্ড প্রতি ৮০ হাজার টাকা করে ২০টি জুয়ার বোর্ড বসানো হয়, দ্বিতীয় দিন বোর্ড প্রতি ৫৫হাজার টাকা করে ১৮টি ও তৃতীয় দিন বোর্ড প্রতি ৬০ হাজার টাকা করে ১৮টি জুয়ার বোর্ড প্রকাশ্যে বসনো হয়। জুয়ার বোর্ড থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে প্রশাসন। বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে প্রকাশ্যে অবাধে জুয়ার আসার চালানোর সুবিধা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ আরো বলেন, প্রশাসনকে পুরোপুরি ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে ছয় গুটি, টুকটুকি, ৩ তাস, ওয়ানটেন সহ আরো বিভিন্ন নামে রাতভর জুয়ার আসর চলছে। এর নেপথ্যে রয়েছে মেলা কমিটির সভাপতি ও সুন্দলপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো.ইলিয়াছ। উঠতি বয়সী যুবক থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন জুয়ার আড্ডায়। জুয়ায় আড্ডায় স্কুল পড়ুয়া কিশোররাও আসে। জুয়া খেলার পাশাপাশি চলে রাতভর মাদকসেবন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় , মিয়া রাজী সাহেবের আনন্দ মেলা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুম ও স্থানীয় একাধিক ইউপি সদস্য জুয়ার বোর্ড থেকে টাকা সংগ্রহ করে মেলা কমিটির সভাপতি ও সুন্দলপুর ইউপি চেয়রম্যান হাজী মো.ইলিয়াছের হাতে দেয়। পরে এই টাকা তিনি প্রশাসন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মিসহ বিভিন্ন লোকের মাঝে বন্টন করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.মাসুমের ফোনে কল করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত সুন্দলপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো.ইলিয়াছ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমরা চেয়ারম্যানরা প্রতিটি মেলা হোক বাজার হোক চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে সভাপতি থাকে। জুয়া চলে নাই দাবি করে করে তিনি বলেন, গতকাল কি হয়েছে আমি জানিনা। আমি কালকে মেলায় যায়নি। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, মেলার সাথে সংশ্লিষ্টদের জুয়া বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসপি স্যারের নির্দেশ মেলায় অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া চলছে মেলা বন্ধ করে দিতে।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা সুলতানা বলেন, জেলা প্রশাশন থেকে মেলার আয়োজক কমিটি ১৫ দিনের জন্য মেলার অনুমতি নেয়। তবে মেলায় জুয়ার বোর্ড বসানোর কোনো অনুমোদন নেই।  জুয়ার আসর চললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি ওসির সাথে কথা বলব।  নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।