বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘তিন মাসে ৫৬ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার’

  • Banalata desk
  • Update Time : ০৮:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩
  • ৩৮ Time View

বনলতা ডেস্ক. জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ৫৬ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, মামলা, হুমকি ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে বাধার শিকার হয়েছেন। এই তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

 

শুক্রবার প্রকাশিত তিন মাসের মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে আসক। দশটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এবং আসকের ‘নিজস্ব সূত্র’ থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে মানবাধিকার লংঘনের এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, জোরপূর্বক অপহরণ ও নিখোঁজ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে।

এই সময়ের আলোচিত কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরে আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। বিশেষত প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে বুধবার ভোর রাতে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং দিনভর তাকে আটকের ঘটনা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।

বহুল আলোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে বিষয়টি তুলে ধরে আসক বলছে, এ ধরনের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করবে এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করবে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত’ প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচটি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের তিনটি বাড়িঘরসহ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজন নিহত ও কমপক্ষে ৬২ জন আহত হয়েছেন। ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে’ অন্তত ১০৩টি বাড়ির ২৫৯টি ঘরে হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। ৩৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত তিন মাসে দেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক ৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ জন পুলিশের হাতে ও এবং ২ জন র‌্যাব কর্তৃক নিহত হয় বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে র‌্যাবের গুলিতে আবুল কাসেম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

গত তিন মাসে ১০৫ জন নারী ও পুরুষ ‘যৌন হয়রানি কেন্দ্রিক সহিংসতার’ শিকার হয়েছেন বলে তথ্য এসেছে আসকের প্রতিবেদনে। তাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৪০ জন নারী এবং ৬৫ জন পুরুষ। এর মধ্যে বখাটের হাতে লাঞ্ছিত ২৮ জন, বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ৬৪ জন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই সময়ে যৌন হয়রানির কারণে আটজন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেদের হাতে ২ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১২৪ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১২ জন নারীকে।

Tag :
About Author Information

Daily Banalata

Popular Post

গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু

‘তিন মাসে ৫৬ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার’

Update Time : ০৮:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

বনলতা ডেস্ক. জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ৫৬ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, মামলা, হুমকি ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে বাধার শিকার হয়েছেন। এই তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

 

শুক্রবার প্রকাশিত তিন মাসের মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে আসক। দশটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এবং আসকের ‘নিজস্ব সূত্র’ থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে মানবাধিকার লংঘনের এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, জোরপূর্বক অপহরণ ও নিখোঁজ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে।

এই সময়ের আলোচিত কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরে আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। বিশেষত প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে বুধবার ভোর রাতে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং দিনভর তাকে আটকের ঘটনা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।

বহুল আলোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে বিষয়টি তুলে ধরে আসক বলছে, এ ধরনের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করবে এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করবে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত’ প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচটি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের তিনটি বাড়িঘরসহ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজন নিহত ও কমপক্ষে ৬২ জন আহত হয়েছেন। ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে’ অন্তত ১০৩টি বাড়ির ২৫৯টি ঘরে হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। ৩৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত তিন মাসে দেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক ৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ জন পুলিশের হাতে ও এবং ২ জন র‌্যাব কর্তৃক নিহত হয় বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে র‌্যাবের গুলিতে আবুল কাসেম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

গত তিন মাসে ১০৫ জন নারী ও পুরুষ ‘যৌন হয়রানি কেন্দ্রিক সহিংসতার’ শিকার হয়েছেন বলে তথ্য এসেছে আসকের প্রতিবেদনে। তাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৪০ জন নারী এবং ৬৫ জন পুরুষ। এর মধ্যে বখাটের হাতে লাঞ্ছিত ২৮ জন, বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ৬৪ জন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই সময়ে যৌন হয়রানির কারণে আটজন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেদের হাতে ২ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১২৪ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১২ জন নারীকে।