খুব সকালে, ঠিক দুপুরে তিনি আসেন। প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালে আসেন। অফিসে সবার খোজ নেন, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের খোজ খবর নেন, রুগী দের খোজ খবর নেন। কয়েকদিন আগে পত্রিকায় পড়েছেন, পিপিই শংকট পরেছে, ভোর হতেই হাসপাতালে চলে এলেন। কি করে স্থানীয়ভাবে আপাততঃ পিপিই সরবরাহ করা যায় এই নিয়ে জরুরি বৈঠক করলেন, নিজের অর্থেই পিপিই’র ব্যবস্থা করলেন।
“কিরে মজিদ (ছদ্দ নাম), এতো সুন্দর ধানি জমিতে পুকুর কেন খুরছিস, বন্দ কর, পুলিশ পাঠাবো? নাকি আমি আসবো।”
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির চেয়ারে মিটিং চলাকালীনও দেশের খাদ্য উৎপাদন, কৃষি জমির সংরক্ষন কিভাবে বাড়ানো যায় দৃষ্টি সেদিকেও। থাকবেই বা না কেন, তিনি তো একজন কৃষকের সন্তান, একজন আদর্শ কৃষক।
শেষ কবে ঢাকা থেকে এসেছেন, মনেই পড়ছে না আমাদের। তিনি গ্রামে থাকতেই ভালোবাসেন, চলন বিলের মেঠোপথ তাঁর অন্তরে গাঁথা।
“সলিম উদ্দীন ( ছদ্দনাম), সাবধান হয়ে যাও, তোমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, অবৈধব্যবসা বন্দ করো ”
দৃষ্টি এবার মাদকে, ছাত্রদের খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে হবে।
হ্যালো, ইউ এন ও সাহেব, নতুন পাড়ায় বাল্য বিবাহ হচ্ছে, আপনি ব্যবস্থা নেন, মুহুর্তেই দৃষ্টি ফিরে এলো সমাজ সংস্কারে। পঞ্চাশ বছর, একই কাজ করে যাচ্ছেন, একই জনপদের উন্নয়ন ও সংস্কার তাঁর নেশা।
ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে, সব ছেড়ে চলন বিলের মেঠপথ আঁকরে বাচার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষনতা, প্রবল ধৈর্য্য, অসাধারন স্মৃতিশক্তি আর সময়োপযোগী রাজনৈতিক ন্যায়নিষ্ঠ কৌশল দেখে চলন বিলের পা ফাঁটা মানুষ আত্মশান্তি আর সন্তুষ্টির জোয়ারে নিজেরা ভেসেছে বহুবার, ভাসিয়েছেন বহুকাল। এই করোনা কালে ১৫০০০ পরিবারে উপহার পাঠিয়েছেন তিনি, প্রতিদিন ৬/৮ টি কর্মসূচীতে এটেইন করেন তিনি। নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ কর্মি/ভোটারের নাম তাঁর অন্তরিক্ষে গাঁথা।
তিনি স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উত্তরাঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, প্রত্যক্ষ আস্ত্রহাতে মুক্তিযোদ্ধা, মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার। তিনি ৭৩ বছরে এক অসীম প্রানশক্তির যুবক, তিনি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, তিনি চলন বিলের প্রান ভোমরা।
লেখকঃ মোঃ মুকুল হোসেন
ফার্মাসিস্ট ও চিকিৎসাকর্মী