বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নলডাঙ্গায় শত বছরের পুকুর সংস্কারে পুলিশের বাঁধা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মে ২০২০
  • ৯০ Time View

এস এম ফকরুদ্দিন ফুটু

নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিবেদকঃ
নাটোরের নলডাঙ্গায় রেকর্ডে থাকা শত বছরের পুরানো পুকুর সংস্কারে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পুকুর পাড়ের বসতবাড়ি, গাছপালা ও পাকা সড়ক।
শনিবার(৯ মে) রাতে উপজেলার বানুরভাগ গ্রামের চার ভাই আবুল হোসেন,আহাম্মদ হোসেন,আকবর হোসেন ও জাহিদ হোসেন এর অংশীদারের ভিত্তিতে মালিকানা প্রায় ১৭ বিঘা পুকুর সংস্কারে বাঁধা দিয়েছে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ। পলি জমে প্রায় ভরাট হওয়া শত বছরের পুরানো পুকুর সংস্কারের জন্য দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী প্রশাসনের সম্মতি নেয়া সর্ত্তেও পুলিশ গিয়ে স্কেবেটারের ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়,উপজেলার বানুরভাগ হরিদা খলসি গ্রামের আবুল হোসেন,আহাম্মদ হোসেন,আকবর হোসেন ও জাহিদ হোসেন চার ভাইয়ে অংশীদারের ভিত্তিতে মালিকানায় আর এস খতিয়ানে ১৮৪২ দাগে দিঘী বলে উল্লেখ রয়েছে। এই শত বছরের পুরানো একটি পুকুর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে এ পুকুরের চার ধার ভেঙ্গে বসতবাড়ি ও গাছপালা, পাকা সড়ক ও একটি মসজিদ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। আবার পুকুরের চার ধার উঁচু না থাকায় বন্যা ও অতি বর্ষণের পানিতে ভেসে যায় চাষ করা লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ। এ পরিস্তিতিতে পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় মালিকরা। এ জন্য পলি জমে প্রায় ভরাট হওয়া শত বছরের পুরানো পুকুর সংস্কারের জন্য দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী প্রশাসনের অনুমতি নেয়। কিন্তু শনিবার রাতে পুলিশ গিয়ে পুকুর সংস্কারে স্কেবেটারের ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়।এতে পুকুরের সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই পুকুর পাড়ে বসবাস করা বাড়িঘর ও গাছপালা হুমকির মুখে পড়ে। ভুক্তভোগি বাসিন্দা নাসিমা বেগম,মনোয়ারা,রাশেদা জানান,আমাদের কাঁচাঘর বাড়ি এই পুকুর পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে পুকুরের পাড় ভেঙ্গে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার আশষ্কায় মালিককে সংস্কারের জন্য অনুরোধ করি।এ পেক্ষিতে মালিকরা পুকুর সংস্কারের মাটি তুলে পাড় বেঁধে দেওয়ায় আমাদের বাড়িঘর রক্ষা পাচ্ছিল।এ অবস্থায় গত শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ গিয়ে স্কেবেটারের ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়। আরেক ভুক্তভোগি মোজ্জাম্মেল হক জানান,আমার ইটের পাকাবাড়ি পাড় ভেঙ্গে হুমকির মুখে পড়ে। এভাবে বার বার প্রশাসন থেকে সংস্কারে বাঁধা দেওয়ায় আমাদের বাড়িঘর আবারোও হুমকিরে পড়ে যায়। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
পুকুরের মালিক আকবর হোসেন দাবী করেন,পুকুরটি আমাদের চার ভাইয়ের নামে খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত এবং পুকুর নামের খাজনা পরিশোধ করি।এ পুকুরের চার ধার ভেঙ্গে যাচ্ছিল ও বষার মৌসুমে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়।এ পেক্ষিতে পুকুরটি সংস্কার কাজ শুরু করেছি আর কয়েকদিন সংস্কার কাজ করলেই শেষ হবে।এর মধ্যে গত শনিবার রাতে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান,এলাকার সকল পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।এ পেক্ষিতে হরিদা খলসি গ্রামের এ পুকুরের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।কাগজপত্র দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবু হাসান জানান,খতিয়ানে পুকুর নামে যদি রেকর্ডভুক্ত হয় তাহলে সেই পুকুর সংস্কারে আইনগত কোন বাঁধা নাই।পুলিশ এ সংস্কার কাজ বন্ধ করার কোন এখতিয়ার রাখেন না।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার সাকিব-আল-রাব্বি জানান,আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে অবগত হয়েছি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পুকুরটি দীর্ঘ দিনের পুরানো তাই সংস্কার করা প্রয়োজন।সেখানে পুলিশের বাঁধা দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

Tag :

নলডাঙ্গায় শত বছরের পুকুর সংস্কারে পুলিশের বাঁধা

Update Time : ০৪:৪৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মে ২০২০

এস এম ফকরুদ্দিন ফুটু

নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিবেদকঃ
নাটোরের নলডাঙ্গায় রেকর্ডে থাকা শত বছরের পুরানো পুকুর সংস্কারে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পুকুর পাড়ের বসতবাড়ি, গাছপালা ও পাকা সড়ক।
শনিবার(৯ মে) রাতে উপজেলার বানুরভাগ গ্রামের চার ভাই আবুল হোসেন,আহাম্মদ হোসেন,আকবর হোসেন ও জাহিদ হোসেন এর অংশীদারের ভিত্তিতে মালিকানা প্রায় ১৭ বিঘা পুকুর সংস্কারে বাঁধা দিয়েছে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ। পলি জমে প্রায় ভরাট হওয়া শত বছরের পুরানো পুকুর সংস্কারের জন্য দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী প্রশাসনের সম্মতি নেয়া সর্ত্তেও পুলিশ গিয়ে স্কেবেটারের ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়,উপজেলার বানুরভাগ হরিদা খলসি গ্রামের আবুল হোসেন,আহাম্মদ হোসেন,আকবর হোসেন ও জাহিদ হোসেন চার ভাইয়ে অংশীদারের ভিত্তিতে মালিকানায় আর এস খতিয়ানে ১৮৪২ দাগে দিঘী বলে উল্লেখ রয়েছে। এই শত বছরের পুরানো একটি পুকুর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে এ পুকুরের চার ধার ভেঙ্গে বসতবাড়ি ও গাছপালা, পাকা সড়ক ও একটি মসজিদ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। আবার পুকুরের চার ধার উঁচু না থাকায় বন্যা ও অতি বর্ষণের পানিতে ভেসে যায় চাষ করা লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ। এ পরিস্তিতিতে পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় মালিকরা। এ জন্য পলি জমে প্রায় ভরাট হওয়া শত বছরের পুরানো পুকুর সংস্কারের জন্য দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী প্রশাসনের অনুমতি নেয়। কিন্তু শনিবার রাতে পুলিশ গিয়ে পুকুর সংস্কারে স্কেবেটারের ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়।এতে পুকুরের সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই পুকুর পাড়ে বসবাস করা বাড়িঘর ও গাছপালা হুমকির মুখে পড়ে। ভুক্তভোগি বাসিন্দা নাসিমা বেগম,মনোয়ারা,রাশেদা জানান,আমাদের কাঁচাঘর বাড়ি এই পুকুর পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে পুকুরের পাড় ভেঙ্গে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার আশষ্কায় মালিককে সংস্কারের জন্য অনুরোধ করি।এ পেক্ষিতে মালিকরা পুকুর সংস্কারের মাটি তুলে পাড় বেঁধে দেওয়ায় আমাদের বাড়িঘর রক্ষা পাচ্ছিল।এ অবস্থায় গত শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ গিয়ে স্কেবেটারের ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায়। আরেক ভুক্তভোগি মোজ্জাম্মেল হক জানান,আমার ইটের পাকাবাড়ি পাড় ভেঙ্গে হুমকির মুখে পড়ে। এভাবে বার বার প্রশাসন থেকে সংস্কারে বাঁধা দেওয়ায় আমাদের বাড়িঘর আবারোও হুমকিরে পড়ে যায়। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
পুকুরের মালিক আকবর হোসেন দাবী করেন,পুকুরটি আমাদের চার ভাইয়ের নামে খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত এবং পুকুর নামের খাজনা পরিশোধ করি।এ পুকুরের চার ধার ভেঙ্গে যাচ্ছিল ও বষার মৌসুমে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়।এ পেক্ষিতে পুকুরটি সংস্কার কাজ শুরু করেছি আর কয়েকদিন সংস্কার কাজ করলেই শেষ হবে।এর মধ্যে গত শনিবার রাতে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান,এলাকার সকল পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।এ পেক্ষিতে হরিদা খলসি গ্রামের এ পুকুরের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।কাগজপত্র দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবু হাসান জানান,খতিয়ানে পুকুর নামে যদি রেকর্ডভুক্ত হয় তাহলে সেই পুকুর সংস্কারে আইনগত কোন বাঁধা নাই।পুলিশ এ সংস্কার কাজ বন্ধ করার কোন এখতিয়ার রাখেন না।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার সাকিব-আল-রাব্বি জানান,আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে অবগত হয়েছি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পুকুরটি দীর্ঘ দিনের পুরানো তাই সংস্কার করা প্রয়োজন।সেখানে পুলিশের বাঁধা দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন নির্দেশ দেওয়া হয়নি।