শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মানুষ ভাসছে প্রকৃতি হাসছে!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪৯:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০
  • ১১৭ Time View

সম্পাদকীয়.

প্রভাষক মো. মাজেম আলী মলিন
সজীব প্রকৃৃতি মানে শুধু বৃক্ষ বা অরণ্য,পাহাড়,পর্বত,সমুদ্র,সাগর এবং মহাসাগরই নয়। আমরা মানুষেরাও এই প্রকৃতির অংশ। সবাই একে অপরের অপরের পরিপুরক। একে অপরকে বাঁচাতে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। সৃষ্টিকর্তা এমন ভাবে এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন যা আজও কোন মানুষ এর রহস্য উম্মচোন তো দুরে থাক একটা ধুলি কনাও খুজে বের করতে পারে নি। তাই প্রকৃতির উপর হাত ফেলতে যাওয়া আর পাগলের রাজ্যে বাস করা সমান কথা। যাই হোক লোভী মানুষগুলো হয়তো ভাবে, আমরা একশ তলা উঁচু দালান বানাতে পারি এবং সেই একশ তলা দালানের ওপরে উঠতে এখন আর সিঁড়ি বাইতে হয় না। লিফটের বাক্সে সওয়ার হয়ে শাঁ করে দোতলা থেকে শুরু করে একশ তলার ওপরে এক মুহুর্তে পৌঁছে যাওয়া যায়। দূর-দূরান্তে যেতে চাইলে দ্রুততগতির উড়োজাহাজ কত কম সময়ে সেখানে আমাদের পৌঁছে দেয়। রাতে গরম লাগলে এসি চালিয়ে শীতল বাতাসে আরামের ঘুমাতে পারি যা পূর্বে রাজা বাদশারাও পারেনী।

অতএব আমরা সভ্যতার চরম শিখরে চড়েছি এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আসলেই কি আমরা সভ্য হতে পেরেছি? নাকি অসভ্যতার শেষ সীমায় দাঁড়িয়ে নিজেদের আবাস ভুমি সুন্দর পৃথিবীকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসছি। আমরা সভ্য হলে কি প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এত সাংঘর্ষিক হতে পারত? ২০২০ সালকে সামনে নিয়ে একবার ভেবে দেখুন, মানুষ এবং প্রকৃৃতি পরস্পরের বিরুদ্ধে কী ভয়ানক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। আমরা মানুষ নামের এক আজব প্রাণী প্রকৃৃতির সব দানকে অবৈধ্য ভাবে ভোগ করতে চেয়েছি। সে কাজটি করতে গিয়ে প্রকৃতির সক্ষমতা আমরা নিঃশেষ করে দিচ্ছি। এখন প্রকৃৃতি প্রতিশোধ নেবে বলে ফুঁসে উঠেছে। মানুষ প্রকৃতির আক্রোশ টের পাচ্ছে কিন্তু প্রকৃৃতির সঙ্গে মিলমিশের পথ খুঁজে পাচ্ছে না।
সারা দুনিয়ার বিশাল সব কলকারখানা থেকে ক্রমাগত যত গ্যাস নির্গমন হচ্ছে,বৃক্ষ-পাহাড় কেটে ছয়লাব করা হচ্ছে, নদ নদীতে বর্জ্য ফেলে হত্যা করছি,সাগর মহাসাগর গুলোতে বড় বড় জাহাজ ডুবির ঘটনায় জলজ প্রাণীকুলকে ধ্বংস করছি বিশে^র মোড়ল রাষ্ট্র গুলো যে পারমানবিক- জীবানু অস্ত্রের খেলা খেলছে তার পরিমাণ কমিয়ে আনতে না পারলে উত্তপ্ত পৃথিবী অনেক অঘটন ঘটিয়ে দেবে, যা আমাদের ধ্বংসের দুয়ারে নিয়ে যাবে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুনিয়ায় কোনো কিছুকেই কেয়ার করেন বলে মনে হয় না। তিনি তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলে দিলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি মিথ্যা প্রচার। তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। এসব ফেক নিউজ। মিডিয়ার শয়তানি। এসব খবর নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। জলবায়ুর চিরাচরিত ধারা বিলকুল ঠিক আছে। তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বাহানা করে আমেরিকান সরকারের ডলার নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর জলবায়ু বিপরীত আচরণ করছে। মানুষ প্রকৃৃতির সঙ্গে এযাবৎ যত নষ্টামি করেছে প্রকৃতি এখন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। ঝড়, বন্যা, খরা, রোগব্যাধি, কীটপতঙ্গ আমাদের সাধের পৃথিবীকে তছনছ করে দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
লেখক- প্রভাষক মো.মাজেম আলী মলিন বিভাগীয় প্রধান (স.বি) বিভাগ রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজ, সভাপতি গুরুদাসপুর মডেল প্রেসক্লাব গুরুদাসপুর,নাটোর।

Tag :

মানুষ ভাসছে প্রকৃতি হাসছে!

Update Time : ০৪:৪৯:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০

সম্পাদকীয়.

প্রভাষক মো. মাজেম আলী মলিন
সজীব প্রকৃৃতি মানে শুধু বৃক্ষ বা অরণ্য,পাহাড়,পর্বত,সমুদ্র,সাগর এবং মহাসাগরই নয়। আমরা মানুষেরাও এই প্রকৃতির অংশ। সবাই একে অপরের অপরের পরিপুরক। একে অপরকে বাঁচাতে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। সৃষ্টিকর্তা এমন ভাবে এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন যা আজও কোন মানুষ এর রহস্য উম্মচোন তো দুরে থাক একটা ধুলি কনাও খুজে বের করতে পারে নি। তাই প্রকৃতির উপর হাত ফেলতে যাওয়া আর পাগলের রাজ্যে বাস করা সমান কথা। যাই হোক লোভী মানুষগুলো হয়তো ভাবে, আমরা একশ তলা উঁচু দালান বানাতে পারি এবং সেই একশ তলা দালানের ওপরে উঠতে এখন আর সিঁড়ি বাইতে হয় না। লিফটের বাক্সে সওয়ার হয়ে শাঁ করে দোতলা থেকে শুরু করে একশ তলার ওপরে এক মুহুর্তে পৌঁছে যাওয়া যায়। দূর-দূরান্তে যেতে চাইলে দ্রুততগতির উড়োজাহাজ কত কম সময়ে সেখানে আমাদের পৌঁছে দেয়। রাতে গরম লাগলে এসি চালিয়ে শীতল বাতাসে আরামের ঘুমাতে পারি যা পূর্বে রাজা বাদশারাও পারেনী।

অতএব আমরা সভ্যতার চরম শিখরে চড়েছি এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আসলেই কি আমরা সভ্য হতে পেরেছি? নাকি অসভ্যতার শেষ সীমায় দাঁড়িয়ে নিজেদের আবাস ভুমি সুন্দর পৃথিবীকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসছি। আমরা সভ্য হলে কি প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এত সাংঘর্ষিক হতে পারত? ২০২০ সালকে সামনে নিয়ে একবার ভেবে দেখুন, মানুষ এবং প্রকৃৃতি পরস্পরের বিরুদ্ধে কী ভয়ানক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। আমরা মানুষ নামের এক আজব প্রাণী প্রকৃৃতির সব দানকে অবৈধ্য ভাবে ভোগ করতে চেয়েছি। সে কাজটি করতে গিয়ে প্রকৃতির সক্ষমতা আমরা নিঃশেষ করে দিচ্ছি। এখন প্রকৃৃতি প্রতিশোধ নেবে বলে ফুঁসে উঠেছে। মানুষ প্রকৃতির আক্রোশ টের পাচ্ছে কিন্তু প্রকৃৃতির সঙ্গে মিলমিশের পথ খুঁজে পাচ্ছে না।
সারা দুনিয়ার বিশাল সব কলকারখানা থেকে ক্রমাগত যত গ্যাস নির্গমন হচ্ছে,বৃক্ষ-পাহাড় কেটে ছয়লাব করা হচ্ছে, নদ নদীতে বর্জ্য ফেলে হত্যা করছি,সাগর মহাসাগর গুলোতে বড় বড় জাহাজ ডুবির ঘটনায় জলজ প্রাণীকুলকে ধ্বংস করছি বিশে^র মোড়ল রাষ্ট্র গুলো যে পারমানবিক- জীবানু অস্ত্রের খেলা খেলছে তার পরিমাণ কমিয়ে আনতে না পারলে উত্তপ্ত পৃথিবী অনেক অঘটন ঘটিয়ে দেবে, যা আমাদের ধ্বংসের দুয়ারে নিয়ে যাবে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুনিয়ায় কোনো কিছুকেই কেয়ার করেন বলে মনে হয় না। তিনি তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলে দিলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি মিথ্যা প্রচার। তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। এসব ফেক নিউজ। মিডিয়ার শয়তানি। এসব খবর নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। জলবায়ুর চিরাচরিত ধারা বিলকুল ঠিক আছে। তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বাহানা করে আমেরিকান সরকারের ডলার নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর জলবায়ু বিপরীত আচরণ করছে। মানুষ প্রকৃৃতির সঙ্গে এযাবৎ যত নষ্টামি করেছে প্রকৃতি এখন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। ঝড়, বন্যা, খরা, রোগব্যাধি, কীটপতঙ্গ আমাদের সাধের পৃথিবীকে তছনছ করে দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
লেখক- প্রভাষক মো.মাজেম আলী মলিন বিভাগীয় প্রধান (স.বি) বিভাগ রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজ, সভাপতি গুরুদাসপুর মডেল প্রেসক্লাব গুরুদাসপুর,নাটোর।