বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়তে চাই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০২০
  • ১৯ Time View

যুদ্ধ চাই না, হামলা এলে যেন মোকাবেলা করতে পারি

বনলতা নিউজ ডেস্ক.

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ কারো সঙ্গে যুদ্ধ চায় না, তবে কেউ যদি হামলা করে তাহলে সেটা যেন মোকাবেলা করা যায় সে জন্য প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান গড়তে চায় সরকার।

গতকাল বুধবার সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নতুন সংযোজিত যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের নৌঘাঁটি বিএনএস ঈশা খাঁতে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না, আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তি চাই—এটা যেমন সত্য, আবার কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা করে তাহলে সেটা যেন আমরা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারি সে জন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলতে চাই। সে জন্যই আমরা চাচ্ছি আমাদের সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বিশাল সমুদ্রসীমা এবং সম্পদ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন এবং সে জন্য এরই মধ্যে অনেক আধুনিক সরঞ্জাম ও জাহাজ আমরা ক্রয় করেছি।’

তাঁর সরকারের উদ্যোগে দেশে আন্তর্জাতিকমানের যুদ্ধজাহাজ তৈরির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিজেরাও এখন দেশে স্বল্প পরিসরে নৌবাহিনীর জাহাজ বানানো শুরু করেছি, মেরামত করছি এবং বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে মিলে যেখানে যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি। তবে, ভবিষ্যতে এ ধরনের জাহাজ যেন আমরা নিজেরাই তৈরি এবং রপ্তানি করতে পারি সে জন্য আমাদের জানতে হবে, শিখতে হবে এবং এই চিন্তাটাও মাথায় রাখতে হবে।’

তিনি কমিশনিং করা এই যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানে লেবাননে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়—সেই নীতি নিয়েই আমরা চলব। কাজেই যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা দরকার সেখানে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে। এই সহযোগিতা আমরা করে যাব।’

শেখ হাসিনা এ সময় কভিড-১৯ মোকাবেলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে দায়িত্ব পালনেরও পরামর্শ দেন। কভিড-১৯ আঘাত হানার আগে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের সীমা আমরা ৪০ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছিলাম। প্রবৃদ্ধি ৮.১৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ এক অদৃশ্য অশুভ শক্তি কভিড-১৯-এর আক্রমণে সমগ্র বিশ্ব আজ স্থবির হয়ে পড়েছে। যাতায়াত, সামাজিক যোগাযোগসহ সব কিছুতেই একটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই অদৃশ্য শক্তিকে অনেক শক্তিধর দেশও মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা চাই এই অবস্থা থেকে মুক্তি, সারা বিশ্ব মুক্তি পাক এবং আমরাও যেন মুক্তি পাই। এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে এক দিন বাংলাদেশ ও বিশ্ব মুক্তি পাবে এবং মানুষ আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে বানৌজা সংগ্রামের কমিশনিং ফরমান জাহাজটির অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আরিফুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেন।

Tag :
Popular Post

গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু

প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়তে চাই

Update Time : ০৫:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০২০

যুদ্ধ চাই না, হামলা এলে যেন মোকাবেলা করতে পারি

বনলতা নিউজ ডেস্ক.

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ কারো সঙ্গে যুদ্ধ চায় না, তবে কেউ যদি হামলা করে তাহলে সেটা যেন মোকাবেলা করা যায় সে জন্য প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান গড়তে চায় সরকার।

গতকাল বুধবার সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নতুন সংযোজিত যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের নৌঘাঁটি বিএনএস ঈশা খাঁতে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না, আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তি চাই—এটা যেমন সত্য, আবার কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা করে তাহলে সেটা যেন আমরা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারি সে জন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলতে চাই। সে জন্যই আমরা চাচ্ছি আমাদের সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বিশাল সমুদ্রসীমা এবং সম্পদ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন এবং সে জন্য এরই মধ্যে অনেক আধুনিক সরঞ্জাম ও জাহাজ আমরা ক্রয় করেছি।’

তাঁর সরকারের উদ্যোগে দেশে আন্তর্জাতিকমানের যুদ্ধজাহাজ তৈরির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিজেরাও এখন দেশে স্বল্প পরিসরে নৌবাহিনীর জাহাজ বানানো শুরু করেছি, মেরামত করছি এবং বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে মিলে যেখানে যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি। তবে, ভবিষ্যতে এ ধরনের জাহাজ যেন আমরা নিজেরাই তৈরি এবং রপ্তানি করতে পারি সে জন্য আমাদের জানতে হবে, শিখতে হবে এবং এই চিন্তাটাও মাথায় রাখতে হবে।’

তিনি কমিশনিং করা এই যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানে লেবাননে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়—সেই নীতি নিয়েই আমরা চলব। কাজেই যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা দরকার সেখানে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে। এই সহযোগিতা আমরা করে যাব।’

শেখ হাসিনা এ সময় কভিড-১৯ মোকাবেলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে দায়িত্ব পালনেরও পরামর্শ দেন। কভিড-১৯ আঘাত হানার আগে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের সীমা আমরা ৪০ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছিলাম। প্রবৃদ্ধি ৮.১৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ এক অদৃশ্য অশুভ শক্তি কভিড-১৯-এর আক্রমণে সমগ্র বিশ্ব আজ স্থবির হয়ে পড়েছে। যাতায়াত, সামাজিক যোগাযোগসহ সব কিছুতেই একটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই অদৃশ্য শক্তিকে অনেক শক্তিধর দেশও মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা চাই এই অবস্থা থেকে মুক্তি, সারা বিশ্ব মুক্তি পাক এবং আমরাও যেন মুক্তি পাই। এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে এক দিন বাংলাদেশ ও বিশ্ব মুক্তি পাবে এবং মানুষ আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে বানৌজা সংগ্রামের কমিশনিং ফরমান জাহাজটির অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আরিফুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেন।