বনলতা নিউজ ডেস্ক.
নাটোরে আজ শনিবার ৪জুলাই আরো ১৬ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। রামেকের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ও ল্যাব ইনচার্জ প্রফেসর ডাঃ সাবেরা গুলনাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আজ রামেকের দুটি ল্যাবে ১৮৮টি নমুনার পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে নাটোরে ১৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন।
অপরদিকে দুপুরে ঢাকা ন্যাশনাল ল্যাবে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ জন । এ নিয়ে আজ ৩১ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হলো। অপরদিকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ২৪৭ জন। নাটোরের সিভিল সার্জন ডাঃ মিজানুর রহমান ঢাকার ১৫ জনের করোনা পজেটিভ মেইল পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।অপরদিকে রামেক ল্যাবের বিষয়ে বলেন,বিষয়টি ফোনে অবগত হয়েছেন। এখনো মেইল পাননি। । বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।
২জুন পর্যন্ত নাটোরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১৬ জন। আজ নতুন করে আরো ৩১ জন আক্রান্ত হওয়ায় জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৭ জন। এদিকে করোনা আক্রমনে নাটোর ডবল সেঞ্চুরী অতিক্রম করায় নাটোর জেলা চলে এসেছে রেড জোনের দ্বারপ্রান্তে । এই কদিন আগে নাটোর ছিল গ্রীন জোনে। করোনার সংক্রমন বৃদ্ধি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। অনেকের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। গত ১৮ জুন পর্যন্ত করোনা মোট আক্রান্ত ছিল ১০৩ জন । এরপর মাত্র ৩দিনে এ সংখ্যা বেড়ে মোট আক্রান্ত দাড়িয়েছে ১৪৮ জনে।্ওরপর ২২ জুন পর্যন্ত এ সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১৬৬ জনে। ২২ জুনের পর ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেতে থাকে করোনার আগ্রাসন। ২ জুন পর্যন্ত সর্বেশেষ সংখ্যা এসে দাড়ায় ২১৬ জনে। শুধুমাত্র জুলাইয়ের দুইদিনে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৩ জন। এখন প্রায় প্রতিদিনই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহভাবে। প্রায় প্রতিদিনিই থাকছে করোনা পজেটিভের নতুন নতুন খবর ।
সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা যায় গত ২৮ এপ্রিল প্রথমে ৮জনের করোনা শনাক্ত হয় নাটোরে। এই ৮ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যুর পরে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে বাড়তেই থাকে সংখ্যা। গত ২৮ এপ্রিল থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ৪৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত হন ৭১ জন। এরপর ১৭ জুন থেকে ১১ দিনে এস সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুনের ও বেশী ১৪৮ জন শানক্ত হয়। ১৭ জুন থেকে ২২ জুন পর্যন্ত ৫দিনে বৃদ্ধি পায় ১৬৬ জনে। গাণিতিক হারে এই বৃদ্ধির হার বিপজ্জনক। এই হারে (কোভিড-১৯ ) করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে নাটোরে নেমে আসবে ভয়াবহ বিপর্যয়। যেটা পার্শবর্তী বগুড়া জেলাকে গ্রাস করেছে । সুতরাং সাবধানতা এবং সতর্কতার সাথে আমাদের প্রত্যকের চলা ফেরা করার বিকল্প নেই ।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১জুন ১৫ জন এবং ২ জুন ২৮ জন করোনাং সংক্রমিত হন। সব থেকে দুঃখ জনক এই তালিকায় শিশুরাও করোনায় আ্রকান্ত হয়েছেন।চিকিৎসক, নার্স , সরকারী কর্মকর্তাসহ বাদ যাননি স্বামী স্ত্রী ভাই ও সন্তান। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কি তা নিয়ে ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে। আক্রান্তের তালিকায় সরকারী কর্মকর্তা, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মি ,ব্যাংক কর্মকর্তা, গৃহিনীসহ সাধারণ মানুষ রয়েছেন। ফলে সবার ভিতরে বিরাজ করছে চাপা আতঙ্ক। সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের মতে করোনার এই আগ্রাসন থেকে বাঁচতে সকলকে সতর্কভাবে চলা ফেরা করতে হবে। জরুরী কাজ ছাড়া ঘরে থাকাই উত্তম। তারপরেও যদি কেউ বাড়ি থেকে বের হন তবে তাকে অবশ্যই সািিমজক দুরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরন করতে হবে।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন, করোনার এই বৃদ্ধি স্বাভাবিক নয়। তাঁর ভাষ্যমতে নাটোরে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা দুই’শ অতিক্রম করলে আমরা নাটোরকে রেড জোন হিসেবে বিবেচনা করব। সেই হিসেবে আমাদের গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ২১৬ জন। যদিও অন্যান্য জেলার চেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে নাটোর ।ইতমদ্যেই নাটোরে করোনায় সংক্রমিত ৬৪ জন সুস্থ হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। তবে স্বাস্থ্য বিধি এবং নিরাপদ দুরত্ব পালন না করলে নাটোরে করোনা সংক্রমন আরো ভয়াবহ হতে পারে। কাজেই সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। নিরাপদ দুরত্বে থেকে চলা ফেরা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহরিয়াজ বলেন, জনগণকে সচেতন করতে প্রতিদিন মাইকিং করা হচ্ছে। শুরু থেকে ভ্রাম্যমান আদালত কার্যকর রয়েছে। এসবের মধ্যে দিয়ে আমরা কিছুটা সফলতা পেয়েছি। কিন্তু মূল সফলতা নির্ভর করছে জনগণের সচেতন হয়ে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক সুরক্ষা পালনের ওপর।