বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ৭৬,৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে রোপা আমন 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০
  • ৯৯ Time View

ফজলুল করিম বাবলু:

গত আউস মৌসুমে ধানের দাম ভাল পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা ধান চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। গত বছরে রাজশাহীতে ৭৪৯৮১ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়। বিগত কয়েক বছরে একের পর এক ধান চাষ করে কৃষকগণ লোকসানে পড়ে ধান চাষ করা থেকে এক প্রকার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো। বিকল্প হিসেবে কৃষি জমিতে মাছ চাষ করার জন্য পুকুর খনন, বাগান করা ও শাক-সবজী চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছিলো। এই অবস্থা আর কয়েক বছর চললে মাছে ভাতে বাঙ্গালীর খ্যাতি হারিয়ে যেত। কিন্তু আউশ ধানের দাম ভাল পাওয়ায় এই মৌসুমে ১৫১৯ হেক্টর জমি বৃদ্ধি পেয়ে এবার ৭৬,৫০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের মাটি সব থেকে উর্বর। সেখানেই বীজ বপন করা হবে সেখানেই চারা গজাবে। এমনকি পাখির পুরিস থেকেও বীজ মাটিতে পড়লে সেখান থেকেও চারা বের হয়। এত উর্বর হওয়া সত্ত্বেও নানা কারনে কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু এবার ধানের দাম পেয়ে রাজশাহীর কৃষকরা রোপা আমন ধান ছাষে বেশী আগ্রহী হয়ে উঠেছে। রাজশাহীর মাঠে মাঠে কৃষক কৃষানীরা জমি তৈরী ও ধানের চারা রোপনে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। সকাল সন্ধ্যা তারা জমিতে কাজ করে চলছেন। রাজশাহীতে এই মৌসুমে বৃ-ধান-৫১ ও ৮৭, সরনা, হুটরা ও বিনা ধান ৭ ও ৭৬ জাতের ধানের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে সরনা ও বৃ-ধান ৫১ এর চাষ বেশী হচ্ছে বলে জানা যায়।
গোদাগাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে সব থেকে রোপা আমন ধানের চাষ হচ্ছে বরেন্দ্র অঞ্চলখ্যাত গোদাগাড়ী উপজেলায়। এখানে ২৪,৬২৫ হক্টের জমিতে চাষ হচ্ছে। এছাড়াও তানোরে ২২,৪৩৫ হেক্টর, পুঠিয়ায় ৫৮৭০ হেক্টর, পবাতে ৯১৩৫ হেক্টর, মতিহারে ২০ হেক্টর, দূর্গাপুরে ৫৩৫০ হেক্টর, বাঘাতে ১৩৫০ হেক্টর, চারঘাটে ৪২৩৫ হেক্টর ও বাগমারাতে ৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হচ্ছে।
গোদাগাড়ীর কদমশহর এলাকার কৃষক রেজাউল করিম ও বাচ্চু, পলাশবাড়ির কালাম ও গোলাই এলাকার আনিসুজ্জামান বলেন, বিগত বছলগুলোতে তারা ধান চাষ করে কোনভাবেই লাভবান হতে পারেননি। তবে গেল আউশ মৌসুমে ধানের চাষ করে ভাল লাভ করেছেন তারা। এর ফলে তারা এই মৌসুমে চাষও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে বাচ্চু ২০বিঘা, কালাম ২৫ বিঘা, রেজাউল ৭ বিঘা ও আনিসুজ্জামান ৮বিঘা জমিতে চাষ করছেন। তারা বলেন, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে তাদের আর আলাদা করে কোন প্রকার সেচ প্রদান করতে হবেনা। এই মৌসুমে ধানের রোগবালাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, বাদামী গাছ ফরিং ও মাজরা পোকার আক্রমন এবং খোলপরা ও ব্লাস্ট রোগ দেখা যায়।
এদিকে গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ব্লকের কৃষি উপসহকারী শহিদুল আলম টিপু বলেন, বৃ-ধান-৮৭ জাতের ধান অত্যন্ত ভাল। খেতেও সুস্বাদু। কিন্তু বীজ তেমন না পাওয়ায় এই ধানের চাষ কম হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে এই ধান আগাম জাতের হওয়ায় কৃষকরা এই জাতের ধানের চাষ করেও অন্য ফসল আরামে করতে পারেন। এর ফলন ১৮-১৯ হয়ে থাকে। এছাড়াও বৃ-ধান-৫১ বিঘাপ্রতি ২০-২২ এবং সরণা ধান ১৯-২০ হারে হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এই মৌসুমে ধান চাষ করতে খরচ অনকে কম হয়। কারন সেচ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। বিঘাপ্রতি চাষ থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত সেচ, লেবার, কীটনাশকসহ ৫০০০-৬০০০হাজার টাকা মাত্র খরচ হয়।
চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে টিপু বলেন, জমিতে পানি থাকা অবস্থায় ভাল করে তিনটি চাষ দিতে হয়। এরপর মই দিয়ে সমান করে ধানের চারা রোপন করতে হয়। এ সময়ে প্রয়োজন মাফিক জৈব ও রাসায়নিক সার কৃষি উপসহকারীর পরামর্শক্রমে প্রদান করা উত্তম বলে জানান তিনি। এদিকে রোগবালাইয়ের পপ্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাদামী ফড়িং পোকা দমনে কৃষকদের সচেতনতাই যথেষ্ট। এছাড়াও এই পোকা থেকে পরিত্রাণ পেতে লাইন কিংবা ফাঁকা করে ধানের চারা রোপন করতে হবে। সেইসাথে আক্রমণকৃত জমিতে ইউরিয়া সার কম প্রয়োগ করতে হবে এবং প্রয়োজনে কৃষি উপসহকারীর সঙ্গে পরামর্শ করে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে বলে জানান তিনি।
টিপু আরো বলেন, খোলপরা রোগের দমন করতে হলে আক্রমণকৃত জমিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার কম করতে হবে। পানি থাকলে দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বাজারে প্রচলিত ছত্রাকনাশক পরিমানমত স্প্রে করতে হবে। আর ব্লাস রোগ রাজশাহী অঞ্চলে এখন আর তেমন দেখা যায় না। যদি কোন কারনে আক্রমণ করে বসে তাহলে নাটিবো কিংবা ট্রুপার জাতীয় ছত্রাক নাশক অথবা কৃষি উপসহকারীর সাথে পরামর্শ করে স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও মাজরা পোকা দমনে পর্চচিং ( জমিতে পাখি বসার জন্য কঞ্চি অথবা গাছের ডাল পুতে রাখা) পদ্ধতি একটি কার্যতরী পদ্ধতি। এভাবে দমন না হলে তাদের সাথে পরামর্শ করার আহবান জানান তিনি।
এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মতিয়র রহমান বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলায় গত আউশ মৌসুমে ১৩হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে আউশ উৎপাদন হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দেড় হাজার হেক্টরেরও বেশি। ধানের ভালো দাম থাকায় ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় আউশের প্রতি কৃষকের আকর্ষণ বেড়েছে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। এবার আউশের অধিক উৎপাদন আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। সেইসাথে রোপা আমন ধানও বাম্পার হবে বলে তিনি আশাব্যাক্ত করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষির উপরে অধিক গুরুত্বারোপ করায় এবার ধানের উৎপাদন অনেক বেড়ে গেছে। সঠিক সময়ে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরকারি বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষক এবার ধানের ভালো দাম পেয়েছে। ফলে আউশ উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ ভালো ছিল। করোনা মহামারীতেও আমরা কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকের পাশে আছে। আশা করা যায়, করোনা সংকট মোকাবেলায় আউশের অধিক উৎপাদন অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও আউশ ধানে লাভ হওয়ায় কৃষরা রোপা আমন ধান চাষেও বেশী আগ্রহী হয়েছে বলে জানান তিনি।

Tag :

রাজশাহীতে ৭৬,৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে রোপা আমন 

Update Time : ০৪:৩৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০

ফজলুল করিম বাবলু:

গত আউস মৌসুমে ধানের দাম ভাল পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা ধান চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। গত বছরে রাজশাহীতে ৭৪৯৮১ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়। বিগত কয়েক বছরে একের পর এক ধান চাষ করে কৃষকগণ লোকসানে পড়ে ধান চাষ করা থেকে এক প্রকার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো। বিকল্প হিসেবে কৃষি জমিতে মাছ চাষ করার জন্য পুকুর খনন, বাগান করা ও শাক-সবজী চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছিলো। এই অবস্থা আর কয়েক বছর চললে মাছে ভাতে বাঙ্গালীর খ্যাতি হারিয়ে যেত। কিন্তু আউশ ধানের দাম ভাল পাওয়ায় এই মৌসুমে ১৫১৯ হেক্টর জমি বৃদ্ধি পেয়ে এবার ৭৬,৫০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের মাটি সব থেকে উর্বর। সেখানেই বীজ বপন করা হবে সেখানেই চারা গজাবে। এমনকি পাখির পুরিস থেকেও বীজ মাটিতে পড়লে সেখান থেকেও চারা বের হয়। এত উর্বর হওয়া সত্ত্বেও নানা কারনে কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু এবার ধানের দাম পেয়ে রাজশাহীর কৃষকরা রোপা আমন ধান ছাষে বেশী আগ্রহী হয়ে উঠেছে। রাজশাহীর মাঠে মাঠে কৃষক কৃষানীরা জমি তৈরী ও ধানের চারা রোপনে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। সকাল সন্ধ্যা তারা জমিতে কাজ করে চলছেন। রাজশাহীতে এই মৌসুমে বৃ-ধান-৫১ ও ৮৭, সরনা, হুটরা ও বিনা ধান ৭ ও ৭৬ জাতের ধানের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে সরনা ও বৃ-ধান ৫১ এর চাষ বেশী হচ্ছে বলে জানা যায়।
গোদাগাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে সব থেকে রোপা আমন ধানের চাষ হচ্ছে বরেন্দ্র অঞ্চলখ্যাত গোদাগাড়ী উপজেলায়। এখানে ২৪,৬২৫ হক্টের জমিতে চাষ হচ্ছে। এছাড়াও তানোরে ২২,৪৩৫ হেক্টর, পুঠিয়ায় ৫৮৭০ হেক্টর, পবাতে ৯১৩৫ হেক্টর, মতিহারে ২০ হেক্টর, দূর্গাপুরে ৫৩৫০ হেক্টর, বাঘাতে ১৩৫০ হেক্টর, চারঘাটে ৪২৩৫ হেক্টর ও বাগমারাতে ৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হচ্ছে।
গোদাগাড়ীর কদমশহর এলাকার কৃষক রেজাউল করিম ও বাচ্চু, পলাশবাড়ির কালাম ও গোলাই এলাকার আনিসুজ্জামান বলেন, বিগত বছলগুলোতে তারা ধান চাষ করে কোনভাবেই লাভবান হতে পারেননি। তবে গেল আউশ মৌসুমে ধানের চাষ করে ভাল লাভ করেছেন তারা। এর ফলে তারা এই মৌসুমে চাষও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে বাচ্চু ২০বিঘা, কালাম ২৫ বিঘা, রেজাউল ৭ বিঘা ও আনিসুজ্জামান ৮বিঘা জমিতে চাষ করছেন। তারা বলেন, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে তাদের আর আলাদা করে কোন প্রকার সেচ প্রদান করতে হবেনা। এই মৌসুমে ধানের রোগবালাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, বাদামী গাছ ফরিং ও মাজরা পোকার আক্রমন এবং খোলপরা ও ব্লাস্ট রোগ দেখা যায়।
এদিকে গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ব্লকের কৃষি উপসহকারী শহিদুল আলম টিপু বলেন, বৃ-ধান-৮৭ জাতের ধান অত্যন্ত ভাল। খেতেও সুস্বাদু। কিন্তু বীজ তেমন না পাওয়ায় এই ধানের চাষ কম হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে এই ধান আগাম জাতের হওয়ায় কৃষকরা এই জাতের ধানের চাষ করেও অন্য ফসল আরামে করতে পারেন। এর ফলন ১৮-১৯ হয়ে থাকে। এছাড়াও বৃ-ধান-৫১ বিঘাপ্রতি ২০-২২ এবং সরণা ধান ১৯-২০ হারে হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এই মৌসুমে ধান চাষ করতে খরচ অনকে কম হয়। কারন সেচ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। বিঘাপ্রতি চাষ থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত সেচ, লেবার, কীটনাশকসহ ৫০০০-৬০০০হাজার টাকা মাত্র খরচ হয়।
চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে টিপু বলেন, জমিতে পানি থাকা অবস্থায় ভাল করে তিনটি চাষ দিতে হয়। এরপর মই দিয়ে সমান করে ধানের চারা রোপন করতে হয়। এ সময়ে প্রয়োজন মাফিক জৈব ও রাসায়নিক সার কৃষি উপসহকারীর পরামর্শক্রমে প্রদান করা উত্তম বলে জানান তিনি। এদিকে রোগবালাইয়ের পপ্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাদামী ফড়িং পোকা দমনে কৃষকদের সচেতনতাই যথেষ্ট। এছাড়াও এই পোকা থেকে পরিত্রাণ পেতে লাইন কিংবা ফাঁকা করে ধানের চারা রোপন করতে হবে। সেইসাথে আক্রমণকৃত জমিতে ইউরিয়া সার কম প্রয়োগ করতে হবে এবং প্রয়োজনে কৃষি উপসহকারীর সঙ্গে পরামর্শ করে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে বলে জানান তিনি।
টিপু আরো বলেন, খোলপরা রোগের দমন করতে হলে আক্রমণকৃত জমিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার কম করতে হবে। পানি থাকলে দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বাজারে প্রচলিত ছত্রাকনাশক পরিমানমত স্প্রে করতে হবে। আর ব্লাস রোগ রাজশাহী অঞ্চলে এখন আর তেমন দেখা যায় না। যদি কোন কারনে আক্রমণ করে বসে তাহলে নাটিবো কিংবা ট্রুপার জাতীয় ছত্রাক নাশক অথবা কৃষি উপসহকারীর সাথে পরামর্শ করে স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও মাজরা পোকা দমনে পর্চচিং ( জমিতে পাখি বসার জন্য কঞ্চি অথবা গাছের ডাল পুতে রাখা) পদ্ধতি একটি কার্যতরী পদ্ধতি। এভাবে দমন না হলে তাদের সাথে পরামর্শ করার আহবান জানান তিনি।
এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মতিয়র রহমান বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলায় গত আউশ মৌসুমে ১৩হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে আউশ উৎপাদন হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দেড় হাজার হেক্টরেরও বেশি। ধানের ভালো দাম থাকায় ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় আউশের প্রতি কৃষকের আকর্ষণ বেড়েছে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। এবার আউশের অধিক উৎপাদন আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। সেইসাথে রোপা আমন ধানও বাম্পার হবে বলে তিনি আশাব্যাক্ত করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষির উপরে অধিক গুরুত্বারোপ করায় এবার ধানের উৎপাদন অনেক বেড়ে গেছে। সঠিক সময়ে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরকারি বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষক এবার ধানের ভালো দাম পেয়েছে। ফলে আউশ উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ ভালো ছিল। করোনা মহামারীতেও আমরা কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকের পাশে আছে। আশা করা যায়, করোনা সংকট মোকাবেলায় আউশের অধিক উৎপাদন অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও আউশ ধানে লাভ হওয়ায় কৃষরা রোপা আমন ধান চাষেও বেশী আগ্রহী হয়েছে বলে জানান তিনি।