শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদের নামাজের জন্য নিয়ম বেঁধে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১৩:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই ২০২০
  • ১৪০ Time View
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে বিপর্যস্ত মানবজীবন। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতেই পালিত হতে যাচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। তাই ঈদের নামাজের জন্য বেশ কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ঈদগা ময়দান, খোলা মাঠ বা উন্মুক্ত স্থানে ঈদের নামাজ পড়ার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে মন্ত্রণালয়। তবে মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করতে হবে। একই সঙ্গে নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে কোরবানির ঈদকে ঘিরে আবারো করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞারা। তাই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে একটি নির্দেশানা জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনায় ঈদের নামাজ আদায়ে ১৩টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

শর্তগুলো হলো :

১. করোনার কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদুল আজহার জামাত ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে কাছের মসজিদে আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত আদায় করা যাবে।

২. জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের পূর্বে মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।

৩. প্রত্যেককে বাসা থেকে অজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৪. মসজিদে অজুর স্থানে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

৫. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।

৬. জামাতে আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৭. নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে এবং এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।

৮. শিশু, বৃদ্ধ ও যেকোনো ধরনের অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশগ্রহণ করবেন না।

৯. স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

১০. জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

১১. নামাজ শেষে খতিব ও ইমামরা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া চাইবেন।

১২. খতিব, ইমাম, মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. কোরবানির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটি এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন।

প্রসঙ্গত, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৪৮ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মারা গেলেন ৩০৮৩ জন। নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৬৯৫ জন। এপর্যন্ত শনাক্ত হলেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৯ জন। আজ সুস্থ হয়েছে ২৬৬৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৬০ জন।

৩০ জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

Tag :

ঈদের নামাজের জন্য নিয়ম বেঁধে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

Update Time : ০৫:১৩:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে বিপর্যস্ত মানবজীবন। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতেই পালিত হতে যাচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। তাই ঈদের নামাজের জন্য বেশ কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ঈদগা ময়দান, খোলা মাঠ বা উন্মুক্ত স্থানে ঈদের নামাজ পড়ার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে মন্ত্রণালয়। তবে মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করতে হবে। একই সঙ্গে নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে কোরবানির ঈদকে ঘিরে আবারো করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞারা। তাই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে একটি নির্দেশানা জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনায় ঈদের নামাজ আদায়ে ১৩টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

শর্তগুলো হলো :

১. করোনার কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদুল আজহার জামাত ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে কাছের মসজিদে আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত আদায় করা যাবে।

২. জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের পূর্বে মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।

৩. প্রত্যেককে বাসা থেকে অজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৪. মসজিদে অজুর স্থানে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

৫. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।

৬. জামাতে আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৭. নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে এবং এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।

৮. শিশু, বৃদ্ধ ও যেকোনো ধরনের অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশগ্রহণ করবেন না।

৯. স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

১০. জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

১১. নামাজ শেষে খতিব ও ইমামরা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া চাইবেন।

১২. খতিব, ইমাম, মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. কোরবানির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটি এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন।

প্রসঙ্গত, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৪৮ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মারা গেলেন ৩০৮৩ জন। নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৬৯৫ জন। এপর্যন্ত শনাক্ত হলেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৯ জন। আজ সুস্থ হয়েছে ২৬৬৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৬০ জন।

৩০ জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।