শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান দ্বিতীয় বিয়ে করলেন স্কুলছাত্রীকে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০
  • ১০৫ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম.

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তালেবের বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১ নভেম্বর) রাতে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন তিনি। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে।

তবে চেয়ারম্যান আবু তালেবের দাবি, কনে নবম শ্রেণির ছাত্রী হলেও তার বয়স কুড়ি। এটি কোনোভাবেই বাল্যবিয়ে নয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, চেয়ারম্যানের নববধূর নাম বহ্নিতা ওসমান বহ্নি। সে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দলন গ্রামের ওসমান গণির মেয়ে এবং একই ইউনিয়নের বকসিগঞ্জ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

বকসিগঞ্জ হাইস্কুলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া সনদ অনুযায়ী বহ্নিতা ওসমান বহ্নির জন্ম ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৩ সালে। সে হিসেবে তার বয়স ১৭ বছর দুই মাস।

এদিকে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে চেয়ারম্যান আবু তালেব বলেন, ‘প্রথম স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হওয়ায় তার অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। তবে এটি বাল্যবিয়ে নয়।’

এ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘কনের পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী তার জন্ম ২০০০ সালে। সে হিসেবে তার বয়স ২০ বছরের কিছু কম। মেয়ে ও তার পরিবারের সম্মতিতেই এ বিয়ে হয়েছে। এটি বাল্যবিয়ে নয়।’

বুড়াবুড়ি ইউপির গ্রামপুলিশ ও কনের চাচা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ‘বহ্নির বাবা দীর্ঘদিন থেকে প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশয়ী। বাবার অসুস্থতার কারণে কনের শিক্ষা বিরতি হয়েছে। সে নবম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স কুড়ি।’

তবে কনে বহ্নির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান জানান, বহ্নি শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণিতে একবার শিক্ষা বিরতি দিয়েছিল। সে হিসেবে সে বর্তমানে দশম শ্রেণিতে থাকার কথা। কিন্তু এক বছর শিক্ষা বিরতি দেওয়ায় সে এখন নবম শ্রেণিতে পড়ছে।

এদিকে চেয়ারম্যানের বাল্যবিয়ের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উলিপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আশরাফুল আলম রাসেল।

তিনি বলেন, ‘প্রথম স্ত্রীর অনুমতি থাকলে দ্বিতীয় বিয়েতে আইনগত বাধা নেই। তবে সেটি বাল্যবিয়ে কিনা তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ একজন জনপ্রতিনিধি এ ধরণের ঘটনা (বাল্যবিয়ে) প্রতিহত করবেন, তিনি নিজে এ ধরণের কাজ করতে পারেন না।’

এদিকে জানা গেছে, আগের সংসারে চেয়ারম্যানের একটি মেয়ে রয়েছে। সে বর্তমানে কলেজে (একাদশ শ্রেণিতে) পড়ছে।

Tag :

বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান দ্বিতীয় বিয়ে করলেন স্কুলছাত্রীকে

Update Time : ০৪:৪৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০

বিশেষ প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম.

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তালেবের বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১ নভেম্বর) রাতে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন তিনি। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে।

তবে চেয়ারম্যান আবু তালেবের দাবি, কনে নবম শ্রেণির ছাত্রী হলেও তার বয়স কুড়ি। এটি কোনোভাবেই বাল্যবিয়ে নয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, চেয়ারম্যানের নববধূর নাম বহ্নিতা ওসমান বহ্নি। সে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দলন গ্রামের ওসমান গণির মেয়ে এবং একই ইউনিয়নের বকসিগঞ্জ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

বকসিগঞ্জ হাইস্কুলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া সনদ অনুযায়ী বহ্নিতা ওসমান বহ্নির জন্ম ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৩ সালে। সে হিসেবে তার বয়স ১৭ বছর দুই মাস।

এদিকে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে চেয়ারম্যান আবু তালেব বলেন, ‘প্রথম স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হওয়ায় তার অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। তবে এটি বাল্যবিয়ে নয়।’

এ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘কনের পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী তার জন্ম ২০০০ সালে। সে হিসেবে তার বয়স ২০ বছরের কিছু কম। মেয়ে ও তার পরিবারের সম্মতিতেই এ বিয়ে হয়েছে। এটি বাল্যবিয়ে নয়।’

বুড়াবুড়ি ইউপির গ্রামপুলিশ ও কনের চাচা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ‘বহ্নির বাবা দীর্ঘদিন থেকে প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশয়ী। বাবার অসুস্থতার কারণে কনের শিক্ষা বিরতি হয়েছে। সে নবম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স কুড়ি।’

তবে কনে বহ্নির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান জানান, বহ্নি শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণিতে একবার শিক্ষা বিরতি দিয়েছিল। সে হিসেবে সে বর্তমানে দশম শ্রেণিতে থাকার কথা। কিন্তু এক বছর শিক্ষা বিরতি দেওয়ায় সে এখন নবম শ্রেণিতে পড়ছে।

এদিকে চেয়ারম্যানের বাল্যবিয়ের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উলিপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আশরাফুল আলম রাসেল।

তিনি বলেন, ‘প্রথম স্ত্রীর অনুমতি থাকলে দ্বিতীয় বিয়েতে আইনগত বাধা নেই। তবে সেটি বাল্যবিয়ে কিনা তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ একজন জনপ্রতিনিধি এ ধরণের ঘটনা (বাল্যবিয়ে) প্রতিহত করবেন, তিনি নিজে এ ধরণের কাজ করতে পারেন না।’

এদিকে জানা গেছে, আগের সংসারে চেয়ারম্যানের একটি মেয়ে রয়েছে। সে বর্তমানে কলেজে (একাদশ শ্রেণিতে) পড়ছে।