শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাতে ইতালি-স্পেনের জমজমাট লড়াই

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:২৩:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১
  • ৫০ Time View

বনলতা ডেস্ক.

উয়েফা ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে আজ মঙ্গলবার রাত ১টায় লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মাঠে নামতে যাচ্ছে দুই হেভিওয়েট ইতালি ও স্পেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। ফিফার সর্বশেষ র‌্যাঙ্কিংয়ে স্পেনের অবস্থান ছয়ে। অপরদিকে ইতালির অবস্থান সপ্তম স্থানে। মানে দুই দলের কেউই কারোর চেয়ে কম না। তাই বলা যায় আজকের ম্যাচটি হবে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। ইউরোপের ফুটবলে কোন দল কখন জ্বলে উঠবে তা বলা যায় না। সব দলই বেশ ভালো। আর ভালোর মধ্যে বেশি ভালো হলো ইতালি ও স্পেন। আর মঙ্গলবার এই দুই সেরার লড়াইয়ে যে সেরাটা দিতে পারবে তারাই পাবে ফাইনালের টিকেট।

এখন পর্যন্ত ইতালি ও স্পেন ৩৩ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে দুই দলই সমান ১২টি করে ম্যাচে জয় পেয়েছে। আর বাকি নয়টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে দুই দলের মধ্যে হওয়া শেষ ১৫টি ম্যাচের মধ্যে ইতালি মাত্র তিনবার জয় পেয়েছে। অপরদিকে স্পেন জয় পেয়েছে সাতটি ম্যাচে। বাকি পাঁচটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দল সর্বশেষবার মুখোমুখি হয় ২০১৭ সালের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে। ওই ম্যাচটিতে স্পেন ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল।

কিন্তু এবারের ইউরোতে ইতালি একমাত্র দল হিসেবে পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে। এখন যদি জর্জিও কিয়েলিনিরা মঙ্গলবার স্পেনকে হারিয়ে ইতালি ফাইনালে ওঠে তাহলে কোনো প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা ছয়টি ম্যাচে জয়ের অনন্য কীর্তি গড়তে পারবে । ২০১০ বিশ্বকাপে টানা ছয়টি ম্যাচে জয় পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস।

গ্রুপ পর্বে আন্দ্রে পিরলোর শিষ্যরা তুরস্কের বিপক্ষে ৩-০, সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ও ওয়েলসের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতে। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে বলতে গেলে ২-১ গোলের এক কষ্টার্জিত জয় পায়। কারণ ওই ম্যাচের দুটি গোলই ইতালি করেছিল অতিরিক্ত সময়ে। অস্ট্রিয়াও তাদের একমাত্র গোলটি করেছিল অতিরিক্ত সময়ে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পায় তারা। অপরদিকে লুইস এনরিখের শিষ্যরা গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে ০-০ ও দ্বিতীয় ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে। শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলের জয় পায় তারা। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৫-৩ গোলের রোমাঞ্চকর জয়ের পর শেষ আটে আবার সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র করে পেনাল্টি শুটে আসে সেমিতে।

ইতালির হয়ে শুরু থেকেই লরেঞ্জো ইনসিগনে, জর্জিও কিয়েলিনি ও চিরো ইমোবিল ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন। তাদের পায়ের জাদুতে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ইতালি করেছে ১১টি গোল। ইতালির হয়ে ইনসিগনে ও ইমোবিল দুটি করে গোল করেছেন। অপরদিকে স্পেনের গোল মেশিনটা প্রথম দিকে কাজ না করলেও পরবর্তীতে গোলের ফোয়ারা ছুটিয়েছে তারা। স্পেন কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ১২টি গোল করেছে। এই ১২টি গোলের দশটি এসেছে ক্রোয়েশিয়া (৫) ও স্লোভাকিয়ার (৫) বিপক্ষে। স্পেনের হয়ে পাবলো সারাবিয়া ও আলভারো মোরাতা দুটি করে গোল করেছেন। মঙ্গলবার যদি তারা জ্বলে ওঠেন তাহলে দুই দলের মধ্যে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

এ দুই মঙ্গলবার সেমি ফাইনালের আগে ইউরো ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট নয়বার মুখোমুখি হয়েছে ইতালি স্পেন। মঙ্গলবার ম্যাচটি হবে তাদের মধ্যে দশম লড়াই। আর এর মাধ্যমে বিশ্বকাপ বা ইউরো মিলিয়ে ইউরোপের কোন দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার মুখোমুখি হওয়ার রেকর্ড হতে যাচ্ছে।

অপরদিকে শুধু ইউরোতে হতে যাচ্ছে এটি তাদের সপ্তম লড়াই। এই সাতবারের মধ্যে টানা চারবার আবার ইউরোর নক আউট পর্বে খেলতে যাচ্ছে তারা। আগের তিনবারের মধ্যে ২০০৮ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টিতে ও ২০১২ সালের ফাইনাল ম্যাচে ইতালিকে হারিয়েছিল দি রেড ফিউরিরা। আগের দুটি ম্যাচে হারের বদলা ইতালি নিয়েছিল ২০১৬ সালে স্পেনকে রাউন্ড ষোল থেকে বিদায় করে দিয়ে।

বেলজিয়ামকে হারিয়ে এবারের ইউরোর সেমিতে আসার মাধ্যমে বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলিয়ে ১২ বারের মতো শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ইউরোপের কোনো দলের জন্য যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেমিতে খেলার রেকর্ড। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে জার্মানি। তারা তাদের ইতিহাসে মোট ২০ বার সেমিফাইনাল খেলেছে। আর ইতালি যখন কোনোভাবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তখন তারা ফাইনালে জায়গা করে নিয়ে তবেই ক্ষান্ত হয়। এটি পরিষ্কার হবে ইতালির সেমিফাইনালের পরিসংখ্যান দেখলে। ইতালি তাদের খেলা শেষ ১১টি সেমিফাইনালের মধ্যে নয়বার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। যার মধ্যে শেষ চারবার সেমিতে খেলে চারবারই তারা খেলেছে ফাইনাল ম্যাচে। ইতালি সর্বশেষবার কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনালে খেলেছিল ২০১২ সালে। স্পেনও সর্বশেষবার কোনো ফাইনালে খেলেছিল ২০১২ সালে। সেটি ছিল ইউরোর ফাইনাল। আর ওই ফাইনালে খেলেছিল ইতালি ও স্পেনই।

Tag :

রাতে ইতালি-স্পেনের জমজমাট লড়াই

Update Time : ১২:২৩:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১

বনলতা ডেস্ক.

উয়েফা ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে আজ মঙ্গলবার রাত ১টায় লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মাঠে নামতে যাচ্ছে দুই হেভিওয়েট ইতালি ও স্পেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। ফিফার সর্বশেষ র‌্যাঙ্কিংয়ে স্পেনের অবস্থান ছয়ে। অপরদিকে ইতালির অবস্থান সপ্তম স্থানে। মানে দুই দলের কেউই কারোর চেয়ে কম না। তাই বলা যায় আজকের ম্যাচটি হবে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। ইউরোপের ফুটবলে কোন দল কখন জ্বলে উঠবে তা বলা যায় না। সব দলই বেশ ভালো। আর ভালোর মধ্যে বেশি ভালো হলো ইতালি ও স্পেন। আর মঙ্গলবার এই দুই সেরার লড়াইয়ে যে সেরাটা দিতে পারবে তারাই পাবে ফাইনালের টিকেট।

এখন পর্যন্ত ইতালি ও স্পেন ৩৩ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে দুই দলই সমান ১২টি করে ম্যাচে জয় পেয়েছে। আর বাকি নয়টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে দুই দলের মধ্যে হওয়া শেষ ১৫টি ম্যাচের মধ্যে ইতালি মাত্র তিনবার জয় পেয়েছে। অপরদিকে স্পেন জয় পেয়েছে সাতটি ম্যাচে। বাকি পাঁচটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দল সর্বশেষবার মুখোমুখি হয় ২০১৭ সালের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে। ওই ম্যাচটিতে স্পেন ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল।

কিন্তু এবারের ইউরোতে ইতালি একমাত্র দল হিসেবে পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে। এখন যদি জর্জিও কিয়েলিনিরা মঙ্গলবার স্পেনকে হারিয়ে ইতালি ফাইনালে ওঠে তাহলে কোনো প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা ছয়টি ম্যাচে জয়ের অনন্য কীর্তি গড়তে পারবে । ২০১০ বিশ্বকাপে টানা ছয়টি ম্যাচে জয় পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস।

গ্রুপ পর্বে আন্দ্রে পিরলোর শিষ্যরা তুরস্কের বিপক্ষে ৩-০, সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ও ওয়েলসের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতে। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে বলতে গেলে ২-১ গোলের এক কষ্টার্জিত জয় পায়। কারণ ওই ম্যাচের দুটি গোলই ইতালি করেছিল অতিরিক্ত সময়ে। অস্ট্রিয়াও তাদের একমাত্র গোলটি করেছিল অতিরিক্ত সময়ে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পায় তারা। অপরদিকে লুইস এনরিখের শিষ্যরা গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে ০-০ ও দ্বিতীয় ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে। শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলের জয় পায় তারা। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৫-৩ গোলের রোমাঞ্চকর জয়ের পর শেষ আটে আবার সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র করে পেনাল্টি শুটে আসে সেমিতে।

ইতালির হয়ে শুরু থেকেই লরেঞ্জো ইনসিগনে, জর্জিও কিয়েলিনি ও চিরো ইমোবিল ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন। তাদের পায়ের জাদুতে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ইতালি করেছে ১১টি গোল। ইতালির হয়ে ইনসিগনে ও ইমোবিল দুটি করে গোল করেছেন। অপরদিকে স্পেনের গোল মেশিনটা প্রথম দিকে কাজ না করলেও পরবর্তীতে গোলের ফোয়ারা ছুটিয়েছে তারা। স্পেন কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ১২টি গোল করেছে। এই ১২টি গোলের দশটি এসেছে ক্রোয়েশিয়া (৫) ও স্লোভাকিয়ার (৫) বিপক্ষে। স্পেনের হয়ে পাবলো সারাবিয়া ও আলভারো মোরাতা দুটি করে গোল করেছেন। মঙ্গলবার যদি তারা জ্বলে ওঠেন তাহলে দুই দলের মধ্যে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

এ দুই মঙ্গলবার সেমি ফাইনালের আগে ইউরো ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট নয়বার মুখোমুখি হয়েছে ইতালি স্পেন। মঙ্গলবার ম্যাচটি হবে তাদের মধ্যে দশম লড়াই। আর এর মাধ্যমে বিশ্বকাপ বা ইউরো মিলিয়ে ইউরোপের কোন দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার মুখোমুখি হওয়ার রেকর্ড হতে যাচ্ছে।

অপরদিকে শুধু ইউরোতে হতে যাচ্ছে এটি তাদের সপ্তম লড়াই। এই সাতবারের মধ্যে টানা চারবার আবার ইউরোর নক আউট পর্বে খেলতে যাচ্ছে তারা। আগের তিনবারের মধ্যে ২০০৮ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টিতে ও ২০১২ সালের ফাইনাল ম্যাচে ইতালিকে হারিয়েছিল দি রেড ফিউরিরা। আগের দুটি ম্যাচে হারের বদলা ইতালি নিয়েছিল ২০১৬ সালে স্পেনকে রাউন্ড ষোল থেকে বিদায় করে দিয়ে।

বেলজিয়ামকে হারিয়ে এবারের ইউরোর সেমিতে আসার মাধ্যমে বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলিয়ে ১২ বারের মতো শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ইউরোপের কোনো দলের জন্য যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেমিতে খেলার রেকর্ড। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে জার্মানি। তারা তাদের ইতিহাসে মোট ২০ বার সেমিফাইনাল খেলেছে। আর ইতালি যখন কোনোভাবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তখন তারা ফাইনালে জায়গা করে নিয়ে তবেই ক্ষান্ত হয়। এটি পরিষ্কার হবে ইতালির সেমিফাইনালের পরিসংখ্যান দেখলে। ইতালি তাদের খেলা শেষ ১১টি সেমিফাইনালের মধ্যে নয়বার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। যার মধ্যে শেষ চারবার সেমিতে খেলে চারবারই তারা খেলেছে ফাইনাল ম্যাচে। ইতালি সর্বশেষবার কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনালে খেলেছিল ২০১২ সালে। স্পেনও সর্বশেষবার কোনো ফাইনালে খেলেছিল ২০১২ সালে। সেটি ছিল ইউরোর ফাইনাল। আর ওই ফাইনালে খেলেছিল ইতালি ও স্পেনই।