বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তার ওপর পড়েছিল অবিক্রীত কয়েক হাজার ছাগলের চামড়া

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৪:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই ২০২১
  • ৩৮ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক.

দিনাজপুরে ঈদের দিন পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ব্যাপারীরা ছাগলের চামড়া না নেয়া বিপাকে পড়েন তারা। উপায় না পেয়ে রাস্তার ওপরই কয়েক হাজার ছাগলের চামড়া ফেলে চলে যান। ফলে প্রচণ্ড রোদে চামড়াগুলোতে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চামড়ার আড়ত দিনাজপুরের রামনগর এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের অফিসের সামনে রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।পরে দুপুর ১টার দিকে দিনাজপুর পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা ফেলা গাড়ি নিয়ে গিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে থাকা চামড়াগুলো তুলে নিয়ে যায়।

পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জানান, চামড়াগুলো মাতাসাগর ময়লা গাড্ডায় নিয়ে গিয়ে মাটিতে পুতে দেয়া হবে। গত বারের তুলনায় দিনাজপুরে এবার গরুর চামড়া দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়েছে। গত বছর যে গরুর চামড়া ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এ বছর ৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়। কিন্তু এবার ছাগলের চামড়া কিনছেন না পাইকার ব্যবসায়ীরা। এমনকি বিনামূল্যেও ছাগলের চামড়া নিচ্ছে না তারা। যদিও বা বেছে বেছে কিছু ছাগলের চামড়া কিনেছেন তার মূল্য ৫ টাকা।

এ অবস্থা দেখে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কয়েক হাজার হাজার ছাগলের চামড়া রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে গেছেন। তবে অনেক মাদরাসায় ছাগলের চামড়া লবণ দিয়ে রাখা হচ্ছে, যদি পরে দাম পাওয়া যায় সেই আশায়।

রামনগর চামড়ার আড়তে গিয়ে দেখা হয় জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি চেহেলগাজী এলাকা থেকে একটি খাসির চামড়া বিক্রি করতে এসেছেন। এ সময় তাকে এক চামড়া ব্যবসায়ী বলছিলেন, ‘ভাই চামড়া দিবেন, সঙ্গে এক কেজি লবণের দাম দিবেন এবং চামড়ায় লবণ লাগানোর জন্য লেবার খরচ বাবদ ১০ টাকা দিবেন। তাহলে চামড়া নিতে পারি।’ এ কথা শুনে জসিম উদ্দিন চামড়া নিয়ে চলে যান।

মৌসুমী ব্যবসায়ী সোবাহান হোসেন জানান, তিনি কিছু গরু ও ছাগলের চামড়া কিনেছিলেন। বুধবার রাতে তিনি রামনগর চামড়ার আড়তে গরুর চামড়া বিক্রি করতে পারলেও ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। তাই তিনি চামড়াগুলো সেখানেই রাস্তার ওপর রেখে চলে এসেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ছাগলের চামড়া কিনে প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকায় ট্যানারিতে পৌঁছানো পর্যন্ত বর্তমান অবস্থায় কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ টাকা খরচ হয়। আর সেই ছাগলের চামড়া ট্যানারিতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয় ১০-১৫ টাকায়। তাই ব্যবসায়ীরা ছাগলের চামড়া কিনছে না।তবে এবার গুরুর চামড়া গত বারের চেয়ে ভালো দামে বিক্রি হয়েছে।’

Tag :
About Author Information

Daily Banalata

রাস্তার ওপর পড়েছিল অবিক্রীত কয়েক হাজার ছাগলের চামড়া

Update Time : ০৪:৫৪:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই ২০২১

বিশেষ প্রতিবেদক.

দিনাজপুরে ঈদের দিন পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ব্যাপারীরা ছাগলের চামড়া না নেয়া বিপাকে পড়েন তারা। উপায় না পেয়ে রাস্তার ওপরই কয়েক হাজার ছাগলের চামড়া ফেলে চলে যান। ফলে প্রচণ্ড রোদে চামড়াগুলোতে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চামড়ার আড়ত দিনাজপুরের রামনগর এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের অফিসের সামনে রাস্তায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।পরে দুপুর ১টার দিকে দিনাজপুর পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা ফেলা গাড়ি নিয়ে গিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে থাকা চামড়াগুলো তুলে নিয়ে যায়।

পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জানান, চামড়াগুলো মাতাসাগর ময়লা গাড্ডায় নিয়ে গিয়ে মাটিতে পুতে দেয়া হবে। গত বারের তুলনায় দিনাজপুরে এবার গরুর চামড়া দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়েছে। গত বছর যে গরুর চামড়া ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এ বছর ৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়। কিন্তু এবার ছাগলের চামড়া কিনছেন না পাইকার ব্যবসায়ীরা। এমনকি বিনামূল্যেও ছাগলের চামড়া নিচ্ছে না তারা। যদিও বা বেছে বেছে কিছু ছাগলের চামড়া কিনেছেন তার মূল্য ৫ টাকা।

এ অবস্থা দেখে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কয়েক হাজার হাজার ছাগলের চামড়া রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে গেছেন। তবে অনেক মাদরাসায় ছাগলের চামড়া লবণ দিয়ে রাখা হচ্ছে, যদি পরে দাম পাওয়া যায় সেই আশায়।

রামনগর চামড়ার আড়তে গিয়ে দেখা হয় জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি চেহেলগাজী এলাকা থেকে একটি খাসির চামড়া বিক্রি করতে এসেছেন। এ সময় তাকে এক চামড়া ব্যবসায়ী বলছিলেন, ‘ভাই চামড়া দিবেন, সঙ্গে এক কেজি লবণের দাম দিবেন এবং চামড়ায় লবণ লাগানোর জন্য লেবার খরচ বাবদ ১০ টাকা দিবেন। তাহলে চামড়া নিতে পারি।’ এ কথা শুনে জসিম উদ্দিন চামড়া নিয়ে চলে যান।

মৌসুমী ব্যবসায়ী সোবাহান হোসেন জানান, তিনি কিছু গরু ও ছাগলের চামড়া কিনেছিলেন। বুধবার রাতে তিনি রামনগর চামড়ার আড়তে গরুর চামড়া বিক্রি করতে পারলেও ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। তাই তিনি চামড়াগুলো সেখানেই রাস্তার ওপর রেখে চলে এসেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ছাগলের চামড়া কিনে প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকায় ট্যানারিতে পৌঁছানো পর্যন্ত বর্তমান অবস্থায় কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ টাকা খরচ হয়। আর সেই ছাগলের চামড়া ট্যানারিতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয় ১০-১৫ টাকায়। তাই ব্যবসায়ীরা ছাগলের চামড়া কিনছে না।তবে এবার গুরুর চামড়া গত বারের চেয়ে ভালো দামে বিক্রি হয়েছে।’