বিশেষ প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম.
প্রান্তিক অঞ্চলে মানুষের সুবিচার নিশ্চিতে ‘অনলাইন আইনি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু করল উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ। উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে ‘চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে এ সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং কুড়িগ্রাম জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মান্নান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গণমানুষের জন্য আদালতে আইনি সেবা এবং সুবিচার প্রাপ্তি সহজ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। কুড়িগ্রামে ‘অনলাইন আইনি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু হওয়ায় প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিতদের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করা যাবে বলে আশা করেন তিনি। আদালতে আইনি সেবা প্রাপ্তিতে ফ্রেন্ডশিপের এমন উদ্যোগের প্রশংসাও করেন ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক।
বিচারক, আইনজীবি এবং জেলা আইনি সহায়তা সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত অনলাইন উদ্বোধনী আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান। তিনি জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের মাধ্যমে মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজিবপুর এবং চিলমারী উপজেলাধীন চরের কয়েক লাখ মানুষ। এসব মানুষের পক্ষে জেলা আদালতে এসে আইনি সেবা নেয়া বাস্তবে খুবই কঠিন। বেশিরভাগ চরে লিগ্যাল বুথ স্থাপনের মাধ্যেমে অনেক আগ থেকেই আইনি সেবা দিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ। এখন চরের মানুষের পাশাপাশি কুড়িগ্রামের জনগনের সেবায় জেলা আদলত ভবনে চালু হচ্ছে ফ্রেন্ডশিপের ‘অনলাইন আইনি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র। ফলে অনলাইন বা অফলাইনে সব ধরণের আইনি সেবা পাবেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কুড়িগ্রাম আদালতে ‘অনলাইন আইনি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ সাইফুল ইসলাম। আরও যোগ দেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল বিচারক এবং জেলা ও দায়রা জজ আমলান কুসুম জিসনু, কুড়িগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর কবির শিপন, কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা এবং সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ কুদরত-ই-খুদা এবং আইন সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনেরা।
কুড়িগ্রামের মত প্রান্তিক জেলায় ‘অনলাইন আইনি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু করার কাজে সহযোগিতার জন্য বিদেশি সংস্থা, এরিকস ডেভেলপমেন্ট পার্টনার এবং ফ্রেন্ডশিপ লক্সেমবার্গকে ধন্যবাদ জানান বক্তারা।
বাংলাদেশের যেখানে জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে, সে সব প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে স্বালম্বীকরণ এবং স্থানীয় জনগনের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ। ২০০২ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিবছর ৬০ লাখ মানুষকে সহযোগিতা করে আসছে সংস্থাটি। দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকার পাশাপাশি যেখানকার বাসিন্দারা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার, এমন জনগোষ্ঠিকে স্বাবলম্বী করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ। এক্ষেত্রে দেশে এবং দেশের বাইরে সফলতার মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশে এই সংস্থার রয়েছে ৩ হাজারের বেশি কর্মী, কর্মচারী ও কর্মকর্তা। ফ্রেন্ডশিপে কর্মরত শতকরা ৫০ভাগ জনশক্তিই স্থানীয় বাসিন্দা।