শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরিষা ফুলে স্বপ্ন দেখছেন চলনবিলের কৃষক আর মৌচাষিরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৭৪ Time View

মোঃ মাজেম আলী মলিন .

চলছে অগ্রহায়ন মাস । প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। সরিষা ফুল আর মৌ মাছির গুণ গুণ শব্দে মুখরিত চলনবিলাঞ্চলের পুরো মাঠ। নয়নাভিরাম দৃশ্য বিড়াজ করছে গোটা চলনবিল জুড়ে। নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, সিরাজ গঞ্জের তাড়াশ ও পাবনার চাটমোহর আর ভাঙ্গুড়াসহ চলনবিলাঞ্চলের বিস্তীণর্ মাঠজুড়ে এখন দেখা যাচ্ছে সরিষা ফুলের সমারোহ।

দুচোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর সবুজ ধানের সমারোহ। এ যেন এক টুকরো মিনি বাংলাদেশ। গাড়ো সবুজের বুকে হলুদের ছিঁটা। সোনার ফসল ঘরে তুলতে আশায় বুক বেধেঁ আছেন চলনবিলের কৃষক। চলনবিলের বিভিন্ন মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, চলনবিলের মাঠজুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। যে দিকে তাকানো যায় চারদিকে শুধুই সবুজ আর হলুদের সমারোহ। দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতির এ মনোরম দৃশ্য দেখে যে কোন মানুষই মুগ্ধ না হয়ে পারবেনা। হলুদ ফুলের সুসজ্জিত মাঠে ভ্রমর ও মৌ মাছিরা পাখা মেলে উড়ছে। ভ্রমর আর মৌ মাছির গুঞ্জনে পর্যটক আর কৃষকের মনে আনন্দের যেন কমতি নেই।

একদিকে সরিষার এই ফুল থেকে প্রতি বছর মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ মৌচাষীরা। অন্যদিকে ফলনও বেশী হচ্ছে পরাগায়ণের ফলে। সেই অপরুপ দৃশ্য দেখে আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরাও। প্রতি বছর এই চলনবিলের সরিষা ফুলকে ঘিরে ১৫০ থেকে ২শ ভ্রাম্যমান মৌ চাষিরা অস্থায়ী ভাবে মধু সংগ্রহ করে। ওই মধু দেশ ও দেশের বাহিরেও বিক্রি করে থাকে।
নাটোর কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাযায়,এবার চলনবিলে বোরো ধানের পাশাপাশি মোট ১৩ হাজার ৩৭শ হেক্টর জমিতে সরিষা বপন করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে এবং ফসলের ন্যায্য মুল্য পেলে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন।

শুধু তাই নয় সরিষা ফুলের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসু অসংখ্য মানুষ। প্রতিদিনই বাড়ছে পর্যটদের ভীড়। বর্ষায় পানিতে ডুবে টইটুম্বুর থাকে এই চলনবিল, আর শুকনো মৌসুমে মাঠজুড়ে ভরপুর থাকে ফসলের সমারোহ। ঋতু বৈচিত্রে চলনবিল একেক সময় একেক রুপ ধারণ করে। এই সৌন্দর্য খুব কাছ থেকে দেখার জন্য দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসে ছোট বড় নানা বয়সের ভ্রমন পিঁপাসুরা। কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দুর করতে ছুটে আসেন এশিয়ার এই সর্ব বৃহৎ বিলে ।

চলনবিলের সরিষা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ¯েœহা ,অরিতা,সিঁথি, ও রুম্পা মনি জানায়, বর্ষা মৌসুমে একবার বাবার সাথে এসেছিলেন পানির সৌন্দর্য্য দেখতে। শুকনো মৌসুমে হলুদ সরিষা ফুল আর সবুজ ধানের সমিরনে দোল খাওয়া সৌন্দর্য্যরে মিতালী দেখতেই আবার চলে আসলাম চলনবিলে। তবে অনেক ভাল লেগেছে। সময় পেলে পুরো চলনবিলটাই ঘুড়ে দেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মন না চাইলেও সময়ের টানে ফিরে যেতে হচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, চলনবিল বছর জুড়েই তার চিরোচেনা নানা রুপ আর সৌর্ন্দয্য দিয়ে পর্যটকদের কাছে টানে। চলনবিলের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য না দেখলে চলনবিলের অপার সৌন্দয্যটাই যেন অধরা থেকে যায়।

স্থানীয় সাংসদ নাটোর জেলা আ.লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, চলনবিলে ফসল,রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ কার্লভাট,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব কিছুতেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছি এবং জীবন । জীবনের শেষ ইচ্ছা চলনবিলে একটা পর্যটন কেন্দ্র এবং কৃষকদের জন্য কৃষি গবেশনা গার গড়ে তোলা। দুরদুরান্ত থেকে ভ্রমন পিঁপাসু পর্যটকরা আরাম আয়েশ ও বিশ্রাম করে ভাল ভাবে চলনবিলের অবারিত সৌন্দর্য্যকে খুব কাছ থেকে দুচোখ ভরে উপভোগ করতে পারে এবং কৃষকরা উন্নত জাতের ধান চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারে।

Tag :

সরিষা ফুলে স্বপ্ন দেখছেন চলনবিলের কৃষক আর মৌচাষিরা

Update Time : ০৪:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২১

মোঃ মাজেম আলী মলিন .

চলছে অগ্রহায়ন মাস । প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। সরিষা ফুল আর মৌ মাছির গুণ গুণ শব্দে মুখরিত চলনবিলাঞ্চলের পুরো মাঠ। নয়নাভিরাম দৃশ্য বিড়াজ করছে গোটা চলনবিল জুড়ে। নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, সিরাজ গঞ্জের তাড়াশ ও পাবনার চাটমোহর আর ভাঙ্গুড়াসহ চলনবিলাঞ্চলের বিস্তীণর্ মাঠজুড়ে এখন দেখা যাচ্ছে সরিষা ফুলের সমারোহ।

দুচোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর সবুজ ধানের সমারোহ। এ যেন এক টুকরো মিনি বাংলাদেশ। গাড়ো সবুজের বুকে হলুদের ছিঁটা। সোনার ফসল ঘরে তুলতে আশায় বুক বেধেঁ আছেন চলনবিলের কৃষক। চলনবিলের বিভিন্ন মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, চলনবিলের মাঠজুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। যে দিকে তাকানো যায় চারদিকে শুধুই সবুজ আর হলুদের সমারোহ। দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতির এ মনোরম দৃশ্য দেখে যে কোন মানুষই মুগ্ধ না হয়ে পারবেনা। হলুদ ফুলের সুসজ্জিত মাঠে ভ্রমর ও মৌ মাছিরা পাখা মেলে উড়ছে। ভ্রমর আর মৌ মাছির গুঞ্জনে পর্যটক আর কৃষকের মনে আনন্দের যেন কমতি নেই।

একদিকে সরিষার এই ফুল থেকে প্রতি বছর মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ মৌচাষীরা। অন্যদিকে ফলনও বেশী হচ্ছে পরাগায়ণের ফলে। সেই অপরুপ দৃশ্য দেখে আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরাও। প্রতি বছর এই চলনবিলের সরিষা ফুলকে ঘিরে ১৫০ থেকে ২শ ভ্রাম্যমান মৌ চাষিরা অস্থায়ী ভাবে মধু সংগ্রহ করে। ওই মধু দেশ ও দেশের বাহিরেও বিক্রি করে থাকে।
নাটোর কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাযায়,এবার চলনবিলে বোরো ধানের পাশাপাশি মোট ১৩ হাজার ৩৭শ হেক্টর জমিতে সরিষা বপন করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে এবং ফসলের ন্যায্য মুল্য পেলে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন।

শুধু তাই নয় সরিষা ফুলের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসু অসংখ্য মানুষ। প্রতিদিনই বাড়ছে পর্যটদের ভীড়। বর্ষায় পানিতে ডুবে টইটুম্বুর থাকে এই চলনবিল, আর শুকনো মৌসুমে মাঠজুড়ে ভরপুর থাকে ফসলের সমারোহ। ঋতু বৈচিত্রে চলনবিল একেক সময় একেক রুপ ধারণ করে। এই সৌন্দর্য খুব কাছ থেকে দেখার জন্য দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসে ছোট বড় নানা বয়সের ভ্রমন পিঁপাসুরা। কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দুর করতে ছুটে আসেন এশিয়ার এই সর্ব বৃহৎ বিলে ।

চলনবিলের সরিষা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ¯েœহা ,অরিতা,সিঁথি, ও রুম্পা মনি জানায়, বর্ষা মৌসুমে একবার বাবার সাথে এসেছিলেন পানির সৌন্দর্য্য দেখতে। শুকনো মৌসুমে হলুদ সরিষা ফুল আর সবুজ ধানের সমিরনে দোল খাওয়া সৌন্দর্য্যরে মিতালী দেখতেই আবার চলে আসলাম চলনবিলে। তবে অনেক ভাল লেগেছে। সময় পেলে পুরো চলনবিলটাই ঘুড়ে দেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মন না চাইলেও সময়ের টানে ফিরে যেতে হচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, চলনবিল বছর জুড়েই তার চিরোচেনা নানা রুপ আর সৌর্ন্দয্য দিয়ে পর্যটকদের কাছে টানে। চলনবিলের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য না দেখলে চলনবিলের অপার সৌন্দয্যটাই যেন অধরা থেকে যায়।

স্থানীয় সাংসদ নাটোর জেলা আ.লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, চলনবিলে ফসল,রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ কার্লভাট,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব কিছুতেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছি এবং জীবন । জীবনের শেষ ইচ্ছা চলনবিলে একটা পর্যটন কেন্দ্র এবং কৃষকদের জন্য কৃষি গবেশনা গার গড়ে তোলা। দুরদুরান্ত থেকে ভ্রমন পিঁপাসু পর্যটকরা আরাম আয়েশ ও বিশ্রাম করে ভাল ভাবে চলনবিলের অবারিত সৌন্দর্য্যকে খুব কাছ থেকে দুচোখ ভরে উপভোগ করতে পারে এবং কৃষকরা উন্নত জাতের ধান চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারে।