বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্যের দাম শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি !

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৮২ Time View

বনলতা ডেস্ক.

গ্রাম ও শহরে মূল্যস্ফীতির তারতম্য বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি নিয়ে তৈরি মাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন নিত্যপণ্যের মূল্য শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। এতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। 

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে জানা গেছে। বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে খাদ্য খাতে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ; অন্যদিকে শহরে ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ একই পণ্য গ্রাম থেকে কিনতে হলে শহরের তুলনায় বেশি দাম দিতে হচ্ছে। ওই হিসাবে দেখা গেছে গ্রামের তুলনায় শহরে নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম কম।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে উঠে আসা তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ; অন্যদিকে শহরে এ হার মাত্র ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূতসহ সব খাতেই শহরের চেয়ে গ্রামে নিত্যপণ্যের দাম বেশি।

জানুয়ারিতে শহরের চেয়ে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে। এ মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। জানুয়ারিতে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ডিসেম্বরে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

বিবিএসের হিসাবে দেখা যায়, গত জানুয়ারি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। হিসাব অনুযায়ী জাতীয়ভাবে ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি কমেছে।

চাল, আটা-ময়দা, চিনি, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, সবজিসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দামই বেড়েছে। বিবিএস এও বলছে, ডিসেম্বর মাসে এক লিটার তেল কিনতে ভোক্তার খরচ হয়েছে গড়ে ১৫৬ টাকা ২৫ পয়সা, জানুয়ারি মাসে যা ছিল ১৬০ টাকা ১০ পয়সা।

অন্যদিকে, ডিসেম্বরে এক হালি ফার্মের ডিম কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ৩৬ টাকা, যা গত মাসে ছিল ৩৮ টাকা। আবার এক কেজি গরুর মাংস কিনতে খরচ ছিল ৫৭২ টাকা, গত মাসে কেজি প্রতি গরুর মাংসের দাম ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৭৭ টাকা।

বিবিএসের মূল্যস্ফীতির হার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে এ খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ শতাংশ। প্রসাধনসামগ্রী, জুতা, পরিধেয় বস্ত্র, বাড়ি ভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি পণ্য, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ ও বিবিধ সেবা খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। যার ফলে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিবিএসের স্যাম্পল এরিয়া থেকে তথ্য এনে মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। সুতরাং এখানে যে তথ্য আসবে সেটাই রিপোর্টে উঠে আসে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরে নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম কম হওয়াটা অস্বাভাবিক। কারণ গ্রাম থেকে উৎপাদন হয়েই সবকিছু শহরে আসে। ফলে শহরে দাম কিছুটা বেশি হতে পারে, কিন্তু গ্রামে তো কম থাকার কথা।

তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দামের ক্ষেত্রে শহরের সঙ্গে গ্রামের বৈষম্য কমাতে আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ, আমাদের সরকার গ্রাম-শহরের বৈষম্য কমাতে কাজ করছে। সুতরাং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শিগগিরই নিম্নমুখী হবে বলে প্রত্যাশা করছি। সুত্রঃ ঢাকা পোষ্ট.

Tag :

নিত্যপণ্যের দাম শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি !

Update Time : ০৬:২৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বনলতা ডেস্ক.

গ্রাম ও শহরে মূল্যস্ফীতির তারতম্য বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি নিয়ে তৈরি মাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন নিত্যপণ্যের মূল্য শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। এতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। 

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে জানা গেছে। বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে খাদ্য খাতে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ; অন্যদিকে শহরে ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ একই পণ্য গ্রাম থেকে কিনতে হলে শহরের তুলনায় বেশি দাম দিতে হচ্ছে। ওই হিসাবে দেখা গেছে গ্রামের তুলনায় শহরে নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম কম।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে উঠে আসা তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ; অন্যদিকে শহরে এ হার মাত্র ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূতসহ সব খাতেই শহরের চেয়ে গ্রামে নিত্যপণ্যের দাম বেশি।

জানুয়ারিতে শহরের চেয়ে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেশি হয়েছে। এ মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। জানুয়ারিতে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ডিসেম্বরে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

বিবিএসের হিসাবে দেখা যায়, গত জানুয়ারি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। হিসাব অনুযায়ী জাতীয়ভাবে ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি কমেছে।

চাল, আটা-ময়দা, চিনি, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, সবজিসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দামই বেড়েছে। বিবিএস এও বলছে, ডিসেম্বর মাসে এক লিটার তেল কিনতে ভোক্তার খরচ হয়েছে গড়ে ১৫৬ টাকা ২৫ পয়সা, জানুয়ারি মাসে যা ছিল ১৬০ টাকা ১০ পয়সা।

অন্যদিকে, ডিসেম্বরে এক হালি ফার্মের ডিম কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ৩৬ টাকা, যা গত মাসে ছিল ৩৮ টাকা। আবার এক কেজি গরুর মাংস কিনতে খরচ ছিল ৫৭২ টাকা, গত মাসে কেজি প্রতি গরুর মাংসের দাম ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৭৭ টাকা।

বিবিএসের মূল্যস্ফীতির হার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে এ খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ শতাংশ। প্রসাধনসামগ্রী, জুতা, পরিধেয় বস্ত্র, বাড়ি ভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি পণ্য, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ ও বিবিধ সেবা খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। যার ফলে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিবিএসের স্যাম্পল এরিয়া থেকে তথ্য এনে মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। সুতরাং এখানে যে তথ্য আসবে সেটাই রিপোর্টে উঠে আসে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরে নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম কম হওয়াটা অস্বাভাবিক। কারণ গ্রাম থেকে উৎপাদন হয়েই সবকিছু শহরে আসে। ফলে শহরে দাম কিছুটা বেশি হতে পারে, কিন্তু গ্রামে তো কম থাকার কথা।

তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দামের ক্ষেত্রে শহরের সঙ্গে গ্রামের বৈষম্য কমাতে আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ, আমাদের সরকার গ্রাম-শহরের বৈষম্য কমাতে কাজ করছে। সুতরাং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শিগগিরই নিম্নমুখী হবে বলে প্রত্যাশা করছি। সুত্রঃ ঢাকা পোষ্ট.