বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা সাংবাদিক স্ত্রী জনি আক্তার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২
  • ৩৭ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক সিংড়া.

পরিবারের কর্মক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা জনি আক্তার (২৮)। ১০ ও ৪ বছরের দুই শিশুসন্তান নিয়ে তিনি এখন পরেছেন অথৈ সাগরে। সংসার ও ছোট দুই শিশুকে নিয়ে পরেছেন মহা বিপদে।

তাঁর স্বামী সোহেল আহমেদ (৩৬) গতকাল সোমবার সকালে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ির নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।

জনি আক্তার কাঁন্না জড়িত কন্ঠে জানান, তাঁর শ্বশুর আবদুল জলিল আগেই মারা গেছেন। বৃদ্ধ শাশুড়িসহ পাঁচজনের সংসারে তাঁর স্বামী সোহেল আহমেদই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বড় ছেলে সিয়াম হোসেন স্থানীয় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। ছোট মেয়ে সামিয়া খাতুন প্রাক্‌-প্রাথমিকে পড়ে। তাঁর স্বামী সিংড়ার শেরকোল আগপাড়া বন্দর উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। এ ছাড়া বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদ পত্রিকার সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সোহেল আহমেদের লাশ তাঁর বালুয়া বাসুয়ার বাড়িতে নেওয়া হয়। বাবার লাশ থেকে কিছুটা দূরে সিয়াম ও সামিয়া ফুফুর কোলে বসে ছিল নির্বাক দৃষ্টিতে। স্বামী হারানোর শোকের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ঘিরে ছিল জনি আক্তারকে।

এদিকে নলডাঙ্গার ইউএনওর গাড়িচাপায় সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে নাটোর জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন নাটোরের বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রাশেদুজ্জামান ও সিংড়ার ইউএনও সামিরুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কেন সেখানে সরকারি গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, গাড়ির চালক কে ছিলেন, তিনি বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচ্ছিল কি না, এসব দেখা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা সাংবাদিক স্ত্রী জনি আক্তার

Update Time : ০১:৫১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২

বিশেষ প্রতিবেদক সিংড়া.

পরিবারের কর্মক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা জনি আক্তার (২৮)। ১০ ও ৪ বছরের দুই শিশুসন্তান নিয়ে তিনি এখন পরেছেন অথৈ সাগরে। সংসার ও ছোট দুই শিশুকে নিয়ে পরেছেন মহা বিপদে।

তাঁর স্বামী সোহেল আহমেদ (৩৬) গতকাল সোমবার সকালে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ির নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।

জনি আক্তার কাঁন্না জড়িত কন্ঠে জানান, তাঁর শ্বশুর আবদুল জলিল আগেই মারা গেছেন। বৃদ্ধ শাশুড়িসহ পাঁচজনের সংসারে তাঁর স্বামী সোহেল আহমেদই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বড় ছেলে সিয়াম হোসেন স্থানীয় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। ছোট মেয়ে সামিয়া খাতুন প্রাক্‌-প্রাথমিকে পড়ে। তাঁর স্বামী সিংড়ার শেরকোল আগপাড়া বন্দর উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। এ ছাড়া বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদ পত্রিকার সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সোহেল আহমেদের লাশ তাঁর বালুয়া বাসুয়ার বাড়িতে নেওয়া হয়। বাবার লাশ থেকে কিছুটা দূরে সিয়াম ও সামিয়া ফুফুর কোলে বসে ছিল নির্বাক দৃষ্টিতে। স্বামী হারানোর শোকের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ঘিরে ছিল জনি আক্তারকে।

এদিকে নলডাঙ্গার ইউএনওর গাড়িচাপায় সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে নাটোর জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন নাটোরের বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রাশেদুজ্জামান ও সিংড়ার ইউএনও সামিরুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কেন সেখানে সরকারি গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, গাড়ির চালক কে ছিলেন, তিনি বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচ্ছিল কি না, এসব দেখা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।