বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গুরুদাসপুরে ডিঙি নৌকার কদর চলনবিল জুড়ে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:০২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২
  • ৮৬ Time View

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি. নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও নন্দকুজা নদীর পানি বাড়তে শুরু করছে।  এসব পানি চলনবিলে প্রবেশ করায় প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে চলনবিলের মানুষের পারাপার ও মাছ ধরার প্রধান মাধ্যম ডিঙি নৌকা তৈরী ও কেনা বেচায় ধুম পরেছে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সরেজমিন গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় নৌকার হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষাকে ঘিরে নৌকা তৈরির কারিগররা ব্যস্তসময় পার করছেন। হাটের দক্ষিনাংশে ২৫-৩০টি কারখানায় চলছে ডিঙি নৌকা তৈরীর কাজ। কারখানার সামনে একটির পর একটি নৌকা উঠিয়ে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

সপ্তাহের দইুদিন শনিবার ও মঙ্গলবার বসে এই নৌকার হাট। হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা। নৌকা কেনা বেচায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী,মিস্ত্রি ও ক্রেতার হাকডাকে মুখরিত নৌকা হাট। নৌকা ক্রয়ে সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষরা। বর্ষা মৌসুমে কর্মহীন কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরার প্রধান উপকরন এ নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি। অন্যদিকে মহাজনরা আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহ করে বর্ষাকে ঘিরে অপেক্ষায় থাকে নৌকা বিক্রির পসড়া সাজিয়ে।

ডিঙি নৌকা কিনতে আসা চলনবিল অধ্যাসিত তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও নাদোসৈয়দপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, তারা বিলপাড়ের কৃষক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়ত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় ও পারাপারের জন্যই তারা ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। তবে গত বছরে তুলনায় এবার নৌকার দাম একটু বেশি।

চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি নৌকা তৈরির কারিগর মইনুল মৃধা, রবিউল ও আলাউদ্দিন বলেন,বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকার কদর থাকায় নৌকা তৈরী করে চলে তাদের সংসার। কাঠ ও প্লেনসিটের নৌকার দাম আকার ভেদে কম-বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তারা। ১০-১২ হাত নৌকা প্রতিটি তৈরি করতে খরচ হয় ২ হাজার ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা এবং ১২-১৫ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা।  নৌকা প্রতি ৫শ থেকে ৮শ টাকা লাভ হয় বলে জানান তারা।

চাঁচকৈড় হাটের নৌকা ব্যবসায়ী শিবলু ফকির জানান, এবছর বন্যার প্রাদুর্ভাব বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চলনবিলেও আগাম পানি ঢুকেছে। এতে নৌকার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুন। গত বছরের তুলনায় শ্রমিক,কাঠ ও নৌকা তৈরীর প্লেনশীটের দাম বেশি। এ কারনে নৌকাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

Tag :

গুরুদাসপুরে ডিঙি নৌকার কদর চলনবিল জুড়ে

Update Time : ০৭:০২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি. নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও নন্দকুজা নদীর পানি বাড়তে শুরু করছে।  এসব পানি চলনবিলে প্রবেশ করায় প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে চলনবিলের মানুষের পারাপার ও মাছ ধরার প্রধান মাধ্যম ডিঙি নৌকা তৈরী ও কেনা বেচায় ধুম পরেছে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সরেজমিন গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় নৌকার হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষাকে ঘিরে নৌকা তৈরির কারিগররা ব্যস্তসময় পার করছেন। হাটের দক্ষিনাংশে ২৫-৩০টি কারখানায় চলছে ডিঙি নৌকা তৈরীর কাজ। কারখানার সামনে একটির পর একটি নৌকা উঠিয়ে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

সপ্তাহের দইুদিন শনিবার ও মঙ্গলবার বসে এই নৌকার হাট। হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা। নৌকা কেনা বেচায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী,মিস্ত্রি ও ক্রেতার হাকডাকে মুখরিত নৌকা হাট। নৌকা ক্রয়ে সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষরা। বর্ষা মৌসুমে কর্মহীন কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরার প্রধান উপকরন এ নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি। অন্যদিকে মহাজনরা আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহ করে বর্ষাকে ঘিরে অপেক্ষায় থাকে নৌকা বিক্রির পসড়া সাজিয়ে।

ডিঙি নৌকা কিনতে আসা চলনবিল অধ্যাসিত তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও নাদোসৈয়দপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, তারা বিলপাড়ের কৃষক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়ত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় ও পারাপারের জন্যই তারা ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। তবে গত বছরে তুলনায় এবার নৌকার দাম একটু বেশি।

চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি নৌকা তৈরির কারিগর মইনুল মৃধা, রবিউল ও আলাউদ্দিন বলেন,বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকার কদর থাকায় নৌকা তৈরী করে চলে তাদের সংসার। কাঠ ও প্লেনসিটের নৌকার দাম আকার ভেদে কম-বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তারা। ১০-১২ হাত নৌকা প্রতিটি তৈরি করতে খরচ হয় ২ হাজার ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা এবং ১২-১৫ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা।  নৌকা প্রতি ৫শ থেকে ৮শ টাকা লাভ হয় বলে জানান তারা।

চাঁচকৈড় হাটের নৌকা ব্যবসায়ী শিবলু ফকির জানান, এবছর বন্যার প্রাদুর্ভাব বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চলনবিলেও আগাম পানি ঢুকেছে। এতে নৌকার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুন। গত বছরের তুলনায় শ্রমিক,কাঠ ও নৌকা তৈরীর প্লেনশীটের দাম বেশি। এ কারনে নৌকাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।