এ্যডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি. বিএনপি-জামায়াতের অপশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সাবেক ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়ে ২০০২ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠা করা নতুন রক্তের স্রোতধারা বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ। অনেক সংগ্রাম ও বন্ধুর পথ পরিক্রম করে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ তাঁর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে।
তখন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসে আতঙ্কিত সমস্ত বাংলাদেশ। প্রতিদিন খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজী, নারী নির্যাতন, জঙ্গিবাদে পর্যদুস্ত বাংলাদেশ। দেশের ঠিক সেই ক্রান্তিলগ্নে জন্ম নেয় জননেত্রী শেখ হাসিনার মস্তিস্কপ্রসূত যুব মহিলা লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘু পরিবারের নারীদের উপর নির্যাতন ছিলো নিত্য-নৈমত্তিক ঘটনা। ২০০১ সালে নির্বাচনে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসার পরেই বিএনপি-জামায়াত জোট এদেশের নারীদের উপর টার্গেট করে। তাদের মূল লক্ষ্যই ছিলো নারীদের ঘরবন্দি করে এদেশকে মধ্যযুগীয় কায়দায় শাসন করার। জননেত্রী শেখ হাসিনা তখন বুঝতে পারেন এদের মোকাবেলায় প্রয়োজন নারীদের আরো বেশি রাজনীতিতে সক্রিয় করা। সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রীদের নিয়ে যুব মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এদেশে জঙ্গিবাদের লালন-পালন শুরু করা হয়। বিএনপি-জামায়াতের দমনপীড়নের রাজনীতি মোকাবিলা করতে যুব মহিলা লীগ সবসময় ছিলো সক্রিয়। মিছিল-মিটিং-হরতাল সফল করতে যুব মহিলা লীগের কর্মীরা সকল সময়ে রাজপথে ছিলো অগ্রগামী। হামলা-মামলা উপেক্ষা করে যুব মহিলা লীগ রাজপথে ছিলো।
১/১১ সরকার ষড়যন্ত্র করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টাকালে রাজপথে সবার সাথে সমান ভূমিকা রেখেছিলো যুব মহিলা লীগ। সংগ্রাম-রাজনীতিতে পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরাও। এদেশের নারীরা প্রীতিলতার রক্ত বহন করে চলেছে। ‘৬৬ এর ছয় দফা, ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ‘৭০ এর নির্বাচন, ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিলো অগ্রগণ্য।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমনাকে স্বপরিবারে হত্যার পর ৬ বছরের প্রবাস জীবন কাটিয়ে একজন নারী আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলো। তিনি আজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বহু লড়াই সংগ্রাম শেষে, বহু নির্যাতন সহ্য করে তিনি তাঁর দল আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছেন। এদেশের নারীরা কখনোই পিছিয়ে ছিলো না তার প্রমাণ সকল ক্ষেত্রে নারীরা দিয়েছে। আজকে বাংলাদেশের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তির জায়গা গার্মেন্টস সেক্টরের অধিকাংশ কর্মচারী নারী। আজকের নারীরা শুধু ঘর না, দেশও সামলাচ্ছে সমান ভাবে। রাজনীতিতে বাংলাদেশের নারীদের প্রতিনিধিত্বকারী যুব মহিলা লীগও সেই প্রমাণ রাখছে।
“শিক্ষা-সাম্য-প্রগতি” – এই তিন মূলমন্ত্র নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যুব মহিলা লীগ অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পতাকাবহন করে চলছে গত ২০ বছর। বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ এদেশের জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে রাজনীতি করে চলেছে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ এবং জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনীতি গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশমত বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ কাজ করে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নে এই সংগঠনটির ভূমিকা অগ্রগণ্য। প্রগতিশীল রাজনীতিতে নারীরা যে কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই তা যুব মহিলা লীগ বারংবার প্রমাণ করেছে। সামনের দিনে নারী অধিকার ও নারী শিক্ষায় যুব মহিলা লীগ পূর্বের মতোই সোচ্চার থাকবে বলে বিশ্বাস করি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে সংগঠনটির ভূমিকা থাকবে শক্তিশালী। ২০ বছরে পা দেয়া বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের উত্তোরত্তর মঙ্গল কামনা করি।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয় শেখ হাসিনা।
লেখক: সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ যুব-মহিলা লীগ।
সুত্র-বি.বার্তা ২৪.নেট