শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়ীতে প্রতিমা ভাঙচুর ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২
  • ৪০ Time View

তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম. কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে শিব ও মনসা প্রতিমা ভাংচুর করে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের দল। মঙ্গলবার (৯ আগষ্ট) আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও প্রতীমা ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফুলবাড়ী থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা গ্রামে রতিকান্ত রায়ের বাড়ির উঠানের মন্দিরে দীর্ঘ দিন ধরে শিব ও মনসা মূর্তি রক্ষিত ছিল। মঙ্গলবার মধ্যরাতের কোনো এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ঐ মন্দিরে রক্ষিত প্রতিমা ভাংচুর করে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়। মন্দিরটির প্রায় অর্ধেক পুড়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশি গোলবার রহমান, মাইদুল ইসলাম ও বাদল চন্দ্র রায় আগুন দেখে গৃহকর্তা রতিকান্তকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মন্দির পুরে যাওয়ার ঘটনা জানান। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মন্দিরের আগুন নেভান। তবে কারা প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তা জানাতে পারেনি রতিকান্ত। দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে রতিকান্ত বলেন, আমার বাবা ও দাদু এই মন্দিরে পূজা করতেন। আমার বাবার মৃত্যুর পর আমি এই মন্দিরে পুজার্চনা অব্যাহত রাখি।

প্রতিবেশি গোলবার রহমান সাংবাদিকদের জানান, রাত আড়াইটার দিকে মন্দিরে আগুন জ্বলতে দেখে রতিকান্তকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন তিনি। পরে সবাই মিলে মন্দিরের আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়।

ফুলবাড়ী উপজেলার পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, প্রতিমা ভাংচুর করে মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তারা আতংকিত হয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক রতন রায় বলেন, প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরের আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা তাদের জন্য এক ধরনের হুমকি। দুর্বৃত্তরা হিন্দুদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠ্য বিচার না পেলে প্রয়োজনে আন্দোলন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, ঘটনাটি দুঃখ জনক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Tag :

ফুলবাড়ীতে প্রতিমা ভাঙচুর ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগ

Update Time : ০৬:২১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২

তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম. কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে শিব ও মনসা প্রতিমা ভাংচুর করে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের দল। মঙ্গলবার (৯ আগষ্ট) আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও প্রতীমা ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফুলবাড়ী থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা গ্রামে রতিকান্ত রায়ের বাড়ির উঠানের মন্দিরে দীর্ঘ দিন ধরে শিব ও মনসা মূর্তি রক্ষিত ছিল। মঙ্গলবার মধ্যরাতের কোনো এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ঐ মন্দিরে রক্ষিত প্রতিমা ভাংচুর করে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়। মন্দিরটির প্রায় অর্ধেক পুড়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশি গোলবার রহমান, মাইদুল ইসলাম ও বাদল চন্দ্র রায় আগুন দেখে গৃহকর্তা রতিকান্তকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মন্দির পুরে যাওয়ার ঘটনা জানান। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মন্দিরের আগুন নেভান। তবে কারা প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তা জানাতে পারেনি রতিকান্ত। দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে রতিকান্ত বলেন, আমার বাবা ও দাদু এই মন্দিরে পূজা করতেন। আমার বাবার মৃত্যুর পর আমি এই মন্দিরে পুজার্চনা অব্যাহত রাখি।

প্রতিবেশি গোলবার রহমান সাংবাদিকদের জানান, রাত আড়াইটার দিকে মন্দিরে আগুন জ্বলতে দেখে রতিকান্তকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন তিনি। পরে সবাই মিলে মন্দিরের আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়।

ফুলবাড়ী উপজেলার পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, প্রতিমা ভাংচুর করে মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তারা আতংকিত হয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক রতন রায় বলেন, প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরের আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা তাদের জন্য এক ধরনের হুমকি। দুর্বৃত্তরা হিন্দুদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠ্য বিচার না পেলে প্রয়োজনে আন্দোলন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, ঘটনাটি দুঃখ জনক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।