এম মামুন হুসাইন তাড়াশ থেকে : “অভিশপ্ত বুলেট হয়তো জানে না, ভালবাসায় যারা বেঁচে থাকে, মৃত্যু তাদের স্পর্শ করে না”। অবশেষে তাড়াশে আজ ৫১বছর পর পাকহানাদার বাহিনীর ৩জন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যাকারী অকুতভয় বীর সৈনিক শহীদ হীরালাল গোস্বামীর ম্যুরাল স্থাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তাড়াশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। আজ (১৯ আগস্ট) শুক্রবার সকালে তার ম্যুরালের ফলক উন্মোচন করবেন সিরাজগঞ্জ-৩ তাড়াশ রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ আব্দুল আজিজ এমপি। ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তাড়াশ থানা পুলিশ, হীরালাল গোস্বামীর বড় মেয়ে দীপ্তি গোস্বামী ও গোস্বামী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। ম্যুরালটি স্থাপন করা হয়েছে গোস্বামীর পৈতৃক বাড়ির সামনে। মৃত্যু কালে তিনি ২ছেলে ২মেয়ে, ভাতিজাসহ অনেকেই রয়েছেন।
উল্লেখ্য: ১৯৭১ সালে ২০শে মে পাকহানাদার বাহিনী ভোরে গোস্বামী পরিবারের উপর হামলা চালায়। ইতিমধ্যে ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অন্যত্র আশ্রয় নেয়। তাড়াশ সদরের যখন নাটকীয় তান্ডব চালিয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট শুরু করে তখন তাদের তান্ডবে তাড়াশ সদর জনশূন্য হয়ে পরে। পাকিস্তানি পাকহানাদার বাহিনীর বর্বরচিত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হীরালাল গোস্বামী জীবন বাজি রেখে তার মাটির তৈরি ঘরের চাতালে উপর উঠে হাসুয়া ও মরিচের গুঁড়া নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। পাকবাহিনীর আক্রমন করলে তিনি তাদের উপর মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করে। তারা উপরে উঠার সময় হীরালাল গোস্বামী এক পর্যায়ে এঁকে এঁকে ৩জন পাক সেনা সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় পাকবাহিনী পিছু হটে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করলে ধোঁয়ায় চারিদিক আচ্ছন্ন হয়ে পরে। ওই সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পর চেতনা ফিরে এলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার সময় কতিপয় দেশীয় রাজাকার আলবদর তাকে ঘোলচরা নামক স্থান থেকে ধরে এনে পাক বাহিনীর নিকটে সোর্পদ করে। ওই দিনই তাকে হত্যা করা হয়। সেদিন ছিল ১৯৭১সাল ২০মে।