বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সজীব ওয়াজেদ জয়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৯৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক. ভারত সফরে যাওয়ার আগের দিন রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইর সম্পাদক স্মীতা প্রকাশকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাক্ষাৎকারে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কী ভাবছেন সেই বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের বর্তমান সরকারের অনেক ডিজিটাল উদ্যোগের নেপথ্যের মূল কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত তার (সজীব ওয়াজেদ জয়) এবং দেশের জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়াই উত্তম।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেখুন… সে এখন বড় হয়ে গেছে। তাই এটা এখন তার বিষয়, কিন্তু সে দেশের জন্য কাজ করছে। আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, এই সমস্ত স্যাটেলাইট বা সাবমেরিন ক্যাবল বা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, এসব ডিজিটাল সিস্টেমের ধারণা তার এবং আপনি জানেন… সে আমাকে সহায়তা করছে এবং সে এটা করছে। কিন্তু সে কখনই মন্ত্রণালয় অথবা দলে কোনও পদ-পদবি নেওয়ার কথা ভাবেনি। না, সে ভাবেনি।’

তবে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দলের একটি পদে জায়গা দেওয়ার জন্য একবার কর্মীদের মাঝ থেকে প্রচণ্ড দাবি উঠেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এমনকি আমাদের দলীয় সম্মেলনেও তাকে পদ দেওয়ার জন্য ব্যাপক দাবি উঠেছিল। পরে আমি তাকে মাইক্রোফোনের কাছে গিয়ে নিজের ভাবনার কথা জানাতে বললাম। আমি তাকে বললাম, তুমি কী করতে চাও তা লোকজনকে জানাও। সে আমার কথা শুনে মাইক্রোফোন নিয়েছিল। সে বলেছিল, ‘না, আমি এই মুহূর্তে দলে কোনও পদ চাই না। বরং যারা এখানে কাজ করছেন তাদের এই পদ পাওয়া উচিত। কেন আমি একটি পদ দখল করবো? আমি আমার মায়ের সাথে আছি, আমি দেশের জন্য কাজ করছি এবং আমি তাকে সহায়তা করছি, আর আমি এই কাজই করবো।’

ছেলের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সে এভাবেই চিন্তা করে। তাই আমাকে তাকে তৈরি করতে হবে অথবা আমাকে করতে হবে, বিষয়টি এরকম নয়।

তবে ছেলেকে রাজনীতিতে যোগদানে ডাক দেওয়ার বিষয়ে কিছু ভাবছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নির্ভর করে আপনি দেশের যে জনগণকে দেখছেন তাদের ওপর।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই সন্তান রয়েছে। দু’জনের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় বড় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ছোট। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বংশীয় রাজনীতি কোনো ইস্যু নয়।’ এএনআইয়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি একেবারে পরিষ্কার। সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরীতা নয়। আমার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে এই কথাটি উচ্চারণ করেছিলেন। এবং আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করি। আমার প্রধান কথা হলো দেশের জনগণের দিকে আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। কীভাবে তাদের একটি উন্নত জীবন দিতে পারি? কীভাবে তাদের জীবন উন্নত করতে পারি? এবং আমি সবসময় বলছি, আমাদের একমাত্র শত্রু আছে। সেটা হলো দারিদ্র্য। তাই চলুন একসাথে কাজ করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সবসময় মনে করেন, বিশ্বের প্রধান প্রধান দেশগুলোর উচিত সর্বদা সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ ও মতভেদ দূর করা। আমি সবসময় ভাবি, হ্যাঁ, যদি চীন ও ভারতের মধ্যে কোনও সমস্যা থাকে তাহলে আমি তাতে নাক গলাতে চাই না। আমি আমার দেশের উন্নয়ন চাই এবং যেহেতু ভারত আমাদের পাশের প্রতিবেশী, তাই তাদের সাথে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অনেক দ্বিপাক্ষিক সমস্যা আছে, এটা সত্য। কিন্তু আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করেছি… আপনি সেটা জানেন।

শ্রীলঙ্কার মতো সংকটের মুখোমুখি হবে না বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা

শ্রীলঙ্কার পথে যেতে পারে বাংলাদেশ এমন শঙ্কা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং ইউক্রেনে সংঘাত সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী গতিতে এগিয়ে চলছে। এছাড়া যেকোনও ঋণ নেওয়ার সময় সরকার উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা করে।

এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে পুরো বিশ্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। আর এই চ্যালেঞ্জ কেবল বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অর্থনীতি এখনও অত্যন্ত শক্তিশালী রয়েছে। যদিও আমরা কোভিড-১৯ মহামারির মুখোমুখি হয়েছি এবং এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এখানে তার প্রভাব রয়েছে। কিন্তু ঋণের হারে বাংলাদেশ সর্বদা সময়মতো সব ঋণ পরিশোধ করছে। আর আমাদের ঋণের হার খুবই কম। শ্রীলঙ্কার তুলনায় আমাদের অর্থনীতির গতিপথ এবং উন্নয়ন, (পরিকল্পিত) খুব, খুব হিসেব করে নেওয়া হয়।’

এ ধরনের সুবিবেচিত পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিরাপদ রয়েছে বলে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, গৃহীত প্রকল্প থেকে লাভের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ কোনও ঋণ নেয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। আমরাও হয়েছি। তবে হ্যাঁ, কিছু লোক আছেন যারা এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। ওহ, শ্রীলঙ্কার মতো হবে বাংলাদেশ, এই হবে, সেই হবে। তবে আমি নিশ্চিত করতে পারি, সেটা (বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো) ঘটবে না। কারণ আমরা… আমাদের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা, আমরা যা প্রস্তুত এবং বাস্তবায়ন করি, সর্বদাই আমরা দেখি যে এর রিটার্ন কী হবে? জনগণ কীভাবে সুবিধাভোগী হবে? অন্যথায় আমি শুধু টাকা খরচ করে কোনও প্রকল্প গ্রহণ করি না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যখনই সরকার কোনও ঋণ নেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করে, তখন প্রকল্পটি শেষ হলে দেশের জন্য কী পরিমাণ রিটার্ন আসবে তার পূর্বানুমাণ করার জন্য একটি সুস্পষ্ট নীতি রয়েছে। আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন কীভাবে হবে? জনগণ সুবিধাভোগী হবে, এটাই আমাদের অগ্রাধিকার। তাই আমরা সব পরিকল্পনা, কর্মসূচি সেভাবেই নিচ্ছি। আমরা অপ্রয়োজনীয় কোনও টাকা খরচ করি না।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং অনেক বিশেষজ্ঞের বিশ্বাস, দেশটির উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোতে চীনের মতো বিভিন্ন দেশের ঋণের কারণে বর্তমান সংকট তৈরি হয়েছে। ঋণের অর্থে গ্রহণ করা প্রকল্পগুলো থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ রিটার্ন পায়নি দেশটি। যে কারণে দেশটির অর্থনীতির ভঙ্গুর দশা তৈরি হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ এ ধরনের ঋণকে ফাঁদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যে ফাঁদে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য বাংলাদেশ যেভাবে অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, তার সরকার একেবারে নিয়মনিষ্ঠ পদ্ধতি বিবেচনার পর পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

‘এবং আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করি, অত্যন্ত হিসেব-নিকেশের মাধ্যমে, আমি মনে করি, আমরা শ্রীলঙ্কার মতো একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হব না… শুধু তাই নয়, নীতিগত বিষয়েও, যে মুহূর্তে মহামারি শুরু হয়েছিল, কোভিড-১৯, আমি আমাদের জনগণকে আরও বেশি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম, যতটা তারা খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে পারে। এ জন্য আমরা গ্রাম পর্যায়ে সব ধরনের সহায়তা ও সেবা দিয়েছি এবং লোকজনকে উৎসাহিত করেছি।’

তিনি বলেন, আমি সবসময় তাদের সমর্থন করেছি। জনগণের কী করা উচিত সেবিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছি। আমি বলেছি, আপনার খাদ্য আপনাকেই উৎপাদন করতে হবে, যাতে আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হই।

তবে ইউক্রেন সংঘাত বাংলাদেশের জন্য কিছু সমস্যা তৈরি করেছে বলে স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, এই সংঘাতের খারাপ প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে আমরা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করি।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের মুখ্য ভূমিকা চান শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য ‘বড় বোঝা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একইসঙ্গে ভারত এ সমস্যা সমাধানে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। এএনআইয়ের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে স্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আচ্ছা আপনি জানেন… আমাদের জন্য এটি একটি বড় বোঝা। ভারত একটা বিশাল দেশ; তারা রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হলেও সেখানে খুব বেশি শরণার্থী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে… আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। তাই… আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করছি, যে তাদেরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার মানবিক দিকটি মাথায় রেখে বাস্তুচ্যুত এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভালো রাখার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ… মানবিক কারণে আমরা এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এমনকি এই কোভিডের সময়, আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবাইকে টিকা দিয়েছি। কিন্তু তারা কতদিন এখানে থাকবে? তারা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। এটা আমাদের পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। তার ওপর সেখানে কিছু লোক মাদক পাচার বা নারী পাচারের বা অস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে জড়িত। দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি তারা দেশে ফিরতে পারে, তা আমাদের দেশের জন্য এবং মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক। তাই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তাদের সঙ্গে এবং আসিয়ান বা ইউএনও-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলোচনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘এখন তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত এই কাজে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।’

তিস্তায় ভারতের আরও উদারতা দরকার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে চার দিনের ভারত সফর শুরু করতে যাচ্ছেন। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে নদীর পানি বণ্টনে বিশেষ করে তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয় যা পারস্পরিকভাবে সমাধান করা যায় না।

তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমরা একটি… আপনি জানেন… এটি ঝুলে আছে। (আমাদের এখানে) ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনো কখনো পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় (পানি না পেয়ে) আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য, হ্যাঁ আমরা দেখেছি- প্রধানমন্ত্রী (মোদি) …আপনি জানেন… এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য অনেক আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনার দেশেই। তাই… আমরা আশা করি এটি (সমাধান) হবে, আপনি জানেন… এটি সমাধান করা উচিত।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ… এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এটি সমাধান করা উচিত।’

Tag :

সজীব ওয়াজেদ জয়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৮:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক. ভারত সফরে যাওয়ার আগের দিন রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইর সম্পাদক স্মীতা প্রকাশকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাক্ষাৎকারে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কী ভাবছেন সেই বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের বর্তমান সরকারের অনেক ডিজিটাল উদ্যোগের নেপথ্যের মূল কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত তার (সজীব ওয়াজেদ জয়) এবং দেশের জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়াই উত্তম।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেখুন… সে এখন বড় হয়ে গেছে। তাই এটা এখন তার বিষয়, কিন্তু সে দেশের জন্য কাজ করছে। আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, এই সমস্ত স্যাটেলাইট বা সাবমেরিন ক্যাবল বা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, এসব ডিজিটাল সিস্টেমের ধারণা তার এবং আপনি জানেন… সে আমাকে সহায়তা করছে এবং সে এটা করছে। কিন্তু সে কখনই মন্ত্রণালয় অথবা দলে কোনও পদ-পদবি নেওয়ার কথা ভাবেনি। না, সে ভাবেনি।’

তবে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দলের একটি পদে জায়গা দেওয়ার জন্য একবার কর্মীদের মাঝ থেকে প্রচণ্ড দাবি উঠেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এমনকি আমাদের দলীয় সম্মেলনেও তাকে পদ দেওয়ার জন্য ব্যাপক দাবি উঠেছিল। পরে আমি তাকে মাইক্রোফোনের কাছে গিয়ে নিজের ভাবনার কথা জানাতে বললাম। আমি তাকে বললাম, তুমি কী করতে চাও তা লোকজনকে জানাও। সে আমার কথা শুনে মাইক্রোফোন নিয়েছিল। সে বলেছিল, ‘না, আমি এই মুহূর্তে দলে কোনও পদ চাই না। বরং যারা এখানে কাজ করছেন তাদের এই পদ পাওয়া উচিত। কেন আমি একটি পদ দখল করবো? আমি আমার মায়ের সাথে আছি, আমি দেশের জন্য কাজ করছি এবং আমি তাকে সহায়তা করছি, আর আমি এই কাজই করবো।’

ছেলের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সে এভাবেই চিন্তা করে। তাই আমাকে তাকে তৈরি করতে হবে অথবা আমাকে করতে হবে, বিষয়টি এরকম নয়।

তবে ছেলেকে রাজনীতিতে যোগদানে ডাক দেওয়ার বিষয়ে কিছু ভাবছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নির্ভর করে আপনি দেশের যে জনগণকে দেখছেন তাদের ওপর।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই সন্তান রয়েছে। দু’জনের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় বড় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ছোট। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বংশীয় রাজনীতি কোনো ইস্যু নয়।’ এএনআইয়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি একেবারে পরিষ্কার। সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরীতা নয়। আমার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে এই কথাটি উচ্চারণ করেছিলেন। এবং আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করি। আমার প্রধান কথা হলো দেশের জনগণের দিকে আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। কীভাবে তাদের একটি উন্নত জীবন দিতে পারি? কীভাবে তাদের জীবন উন্নত করতে পারি? এবং আমি সবসময় বলছি, আমাদের একমাত্র শত্রু আছে। সেটা হলো দারিদ্র্য। তাই চলুন একসাথে কাজ করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সবসময় মনে করেন, বিশ্বের প্রধান প্রধান দেশগুলোর উচিত সর্বদা সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ ও মতভেদ দূর করা। আমি সবসময় ভাবি, হ্যাঁ, যদি চীন ও ভারতের মধ্যে কোনও সমস্যা থাকে তাহলে আমি তাতে নাক গলাতে চাই না। আমি আমার দেশের উন্নয়ন চাই এবং যেহেতু ভারত আমাদের পাশের প্রতিবেশী, তাই তাদের সাথে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অনেক দ্বিপাক্ষিক সমস্যা আছে, এটা সত্য। কিন্তু আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করেছি… আপনি সেটা জানেন।

শ্রীলঙ্কার মতো সংকটের মুখোমুখি হবে না বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা

শ্রীলঙ্কার পথে যেতে পারে বাংলাদেশ এমন শঙ্কা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং ইউক্রেনে সংঘাত সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী গতিতে এগিয়ে চলছে। এছাড়া যেকোনও ঋণ নেওয়ার সময় সরকার উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা করে।

এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে পুরো বিশ্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। আর এই চ্যালেঞ্জ কেবল বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অর্থনীতি এখনও অত্যন্ত শক্তিশালী রয়েছে। যদিও আমরা কোভিড-১৯ মহামারির মুখোমুখি হয়েছি এবং এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এখানে তার প্রভাব রয়েছে। কিন্তু ঋণের হারে বাংলাদেশ সর্বদা সময়মতো সব ঋণ পরিশোধ করছে। আর আমাদের ঋণের হার খুবই কম। শ্রীলঙ্কার তুলনায় আমাদের অর্থনীতির গতিপথ এবং উন্নয়ন, (পরিকল্পিত) খুব, খুব হিসেব করে নেওয়া হয়।’

এ ধরনের সুবিবেচিত পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিরাপদ রয়েছে বলে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, গৃহীত প্রকল্প থেকে লাভের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ কোনও ঋণ নেয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। আমরাও হয়েছি। তবে হ্যাঁ, কিছু লোক আছেন যারা এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। ওহ, শ্রীলঙ্কার মতো হবে বাংলাদেশ, এই হবে, সেই হবে। তবে আমি নিশ্চিত করতে পারি, সেটা (বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো) ঘটবে না। কারণ আমরা… আমাদের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা, আমরা যা প্রস্তুত এবং বাস্তবায়ন করি, সর্বদাই আমরা দেখি যে এর রিটার্ন কী হবে? জনগণ কীভাবে সুবিধাভোগী হবে? অন্যথায় আমি শুধু টাকা খরচ করে কোনও প্রকল্প গ্রহণ করি না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যখনই সরকার কোনও ঋণ নেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করে, তখন প্রকল্পটি শেষ হলে দেশের জন্য কী পরিমাণ রিটার্ন আসবে তার পূর্বানুমাণ করার জন্য একটি সুস্পষ্ট নীতি রয়েছে। আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন কীভাবে হবে? জনগণ সুবিধাভোগী হবে, এটাই আমাদের অগ্রাধিকার। তাই আমরা সব পরিকল্পনা, কর্মসূচি সেভাবেই নিচ্ছি। আমরা অপ্রয়োজনীয় কোনও টাকা খরচ করি না।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং অনেক বিশেষজ্ঞের বিশ্বাস, দেশটির উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোতে চীনের মতো বিভিন্ন দেশের ঋণের কারণে বর্তমান সংকট তৈরি হয়েছে। ঋণের অর্থে গ্রহণ করা প্রকল্পগুলো থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ রিটার্ন পায়নি দেশটি। যে কারণে দেশটির অর্থনীতির ভঙ্গুর দশা তৈরি হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ এ ধরনের ঋণকে ফাঁদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যে ফাঁদে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য বাংলাদেশ যেভাবে অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, তার সরকার একেবারে নিয়মনিষ্ঠ পদ্ধতি বিবেচনার পর পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

‘এবং আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করি, অত্যন্ত হিসেব-নিকেশের মাধ্যমে, আমি মনে করি, আমরা শ্রীলঙ্কার মতো একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হব না… শুধু তাই নয়, নীতিগত বিষয়েও, যে মুহূর্তে মহামারি শুরু হয়েছিল, কোভিড-১৯, আমি আমাদের জনগণকে আরও বেশি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম, যতটা তারা খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে পারে। এ জন্য আমরা গ্রাম পর্যায়ে সব ধরনের সহায়তা ও সেবা দিয়েছি এবং লোকজনকে উৎসাহিত করেছি।’

তিনি বলেন, আমি সবসময় তাদের সমর্থন করেছি। জনগণের কী করা উচিত সেবিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছি। আমি বলেছি, আপনার খাদ্য আপনাকেই উৎপাদন করতে হবে, যাতে আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হই।

তবে ইউক্রেন সংঘাত বাংলাদেশের জন্য কিছু সমস্যা তৈরি করেছে বলে স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, এই সংঘাতের খারাপ প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে আমরা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করি।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের মুখ্য ভূমিকা চান শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য ‘বড় বোঝা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একইসঙ্গে ভারত এ সমস্যা সমাধানে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। এএনআইয়ের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে স্বীকার করেছেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আচ্ছা আপনি জানেন… আমাদের জন্য এটি একটি বড় বোঝা। ভারত একটা বিশাল দেশ; তারা রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হলেও সেখানে খুব বেশি শরণার্থী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে… আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। তাই… আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করছি, যে তাদেরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার মানবিক দিকটি মাথায় রেখে বাস্তুচ্যুত এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভালো রাখার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ… মানবিক কারণে আমরা এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এমনকি এই কোভিডের সময়, আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবাইকে টিকা দিয়েছি। কিন্তু তারা কতদিন এখানে থাকবে? তারা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। এটা আমাদের পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। তার ওপর সেখানে কিছু লোক মাদক পাচার বা নারী পাচারের বা অস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে জড়িত। দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি তারা দেশে ফিরতে পারে, তা আমাদের দেশের জন্য এবং মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক। তাই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তাদের সঙ্গে এবং আসিয়ান বা ইউএনও-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলোচনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘এখন তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত এই কাজে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।’

তিস্তায় ভারতের আরও উদারতা দরকার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে চার দিনের ভারত সফর শুরু করতে যাচ্ছেন। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে নদীর পানি বণ্টনে বিশেষ করে তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয় যা পারস্পরিকভাবে সমাধান করা যায় না।

তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমরা একটি… আপনি জানেন… এটি ঝুলে আছে। (আমাদের এখানে) ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনো কখনো পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় (পানি না পেয়ে) আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য, হ্যাঁ আমরা দেখেছি- প্রধানমন্ত্রী (মোদি) …আপনি জানেন… এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য অনেক আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনার দেশেই। তাই… আমরা আশা করি এটি (সমাধান) হবে, আপনি জানেন… এটি সমাধান করা উচিত।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ… এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এটি সমাধান করা উচিত।’