বিশেষ প্রতিবেদক.
স্বামীকে হারিয়ে অথৈ সাগরে পড়েছেন জামিউল আলীমের স্ত্রী রুপা খাতুন। তাঁর কোলে চার মাসের সন্তান জাফরান।
জামিউল আলীম ওরফে জীবন (২২) নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে মেয়ের নাম রেখেছিলেন জাফরান জীবন। জন্মের চার মাস না পেরোতেই জাফরান তার বাবাকে হারিয়েছে। নাটোরের নলডাঙ্গায় মসজিদের মাইক চুরির সালিসকে কেন্দ্র করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তাঁর সমর্থকদের পিটুনিতে আহত জামিউল গতকাল শুক্রবার মারা যান।
নিহত জামিউল আলীম নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজীপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেনের ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চার দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
উপজেলা চেয়ারম্যানের পিটুনিতে আহত সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জামিউলের লাশ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর বাড়িতে শত শত মানুষের ভিড় জমে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা ফরহাদ শাহ ও মা জাহানারা বেগম শোকাহত। জামিউলের চাচা নাটোর স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফিরোজ বলেন, জামিউল নলডাঙ্গা নজমুল হক সরকারি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন। বছর দুয়েক আগে জামিউল স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী রুপা খাতুনকে বিয়ে করেন। মাত্র চার মাস আগে তাঁদের কোলজুড়ে আসে প্রথম সন্তান।
গতকাল রাতে জামিউলের বাড়ি যান নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগ নেতা জামিউল প্রতিবাদী তরুণ ছিলেন। তিনি প্রতিবেশী উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন। সর্বশেষ তিনি আমতলি বাজারের মাইক চুরির কথিত সালিসের সমালোচনা করে ফেসবুক লাইভ করেছিলেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের হামলায় জামিউল আহত হন। পরে গত শুক্রবার রামেক হাসপাতালে জীবন লাইফ সাপোর্ট এ মারা যায়।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা কে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য দের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।