শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নলডাঙ্গায় ড্রামে পাওয়া লাশের পরিচয় মিলেছে, স্ত্রী-সন্তানেরা উধাও

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১১৮ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক নলডাঙ্গা. নাটোরের নলডাঙ্গায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা ড্রাম থেকে উদ্ধার করা লাশটির পরিচয় পাওয়া গেছে। লাশটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নখোপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে কৃষক মোজাহার আলীর। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা বাড়িতে তালা দিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। লাশসহ ড্রাম বহনকারী ভ্যানের চালক জহুরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় আজ শুক্রবার।

নলডাঙ্গা থানা-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সেনভাগ গ্রামে নলডাঙ্গা সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি ড্রাম থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাতে লাশের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। লাশটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নখোপাড়া গ্রামের কৃষক মোজাহার আলীর। তাঁর মামা আবদুল আজিজ ও মামাতো ভাই মোতালেব হোসেন লাশটি শনাক্ত করেন। তবে লাশ শনাক্তের আগেই পুলিশ বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। লাশের পরিচয় পাওয়ার পর পুলিশ রাতেই নখোপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়িতে যায়। কিন্তু তার আগেই তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেন। পুলিশ তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। নমুনা দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়, লাশ রাখা ড্রামটি ওই বাড়িতে ছিল।

নিহত মোজাহারের মামা আবদুল আজিজ বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মোজাহার ১০ বছর আগে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার দীঘিপাড়া গ্রামে নিজের মায়ের সঙ্গে বসবাস করতেন। দুই বছর আগে মা মারা গেলে স্ত্রী-সন্তানেরা তাঁকে বাগমারার নখোপাড়ায় নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে আসার পর জমিজমা লিখে নেওয়ার জন্য তাঁকে নির্যাতন শুরু করেন স্ত্রী-সন্তানেরা। বাধ্য হয়ে ২০ বিঘা জমির মধ্যে দুই ছেলের নামে ৬ বিঘা জমি লিখেও দেন। বাকি জমি লিখে না দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাই জমিজমার জন্য তাঁকে হত্যা করতে পারেন। তবে অন্য ঘটনাও থাকতে পারে। তাঁরা তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে কে বা কারা কেন তাঁকে হত্যা করেছেন।

ওসি আবুল কালাম আরও বলেন, আজ বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তাঁর মামা ও মামাতো ভাইদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাগমারা থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তিনি তাঁর পরিচয় জানাননি।

Tag :

নলডাঙ্গায় ড্রামে পাওয়া লাশের পরিচয় মিলেছে, স্ত্রী-সন্তানেরা উধাও

Update Time : ০৮:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২

বিশেষ প্রতিবেদক নলডাঙ্গা. নাটোরের নলডাঙ্গায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা ড্রাম থেকে উদ্ধার করা লাশটির পরিচয় পাওয়া গেছে। লাশটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নখোপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে কৃষক মোজাহার আলীর। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা বাড়িতে তালা দিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। লাশসহ ড্রাম বহনকারী ভ্যানের চালক জহুরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় আজ শুক্রবার।

নলডাঙ্গা থানা-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সেনভাগ গ্রামে নলডাঙ্গা সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি ড্রাম থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাতে লাশের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। লাশটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নখোপাড়া গ্রামের কৃষক মোজাহার আলীর। তাঁর মামা আবদুল আজিজ ও মামাতো ভাই মোতালেব হোসেন লাশটি শনাক্ত করেন। তবে লাশ শনাক্তের আগেই পুলিশ বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। লাশের পরিচয় পাওয়ার পর পুলিশ রাতেই নখোপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়িতে যায়। কিন্তু তার আগেই তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেন। পুলিশ তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। নমুনা দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়, লাশ রাখা ড্রামটি ওই বাড়িতে ছিল।

নিহত মোজাহারের মামা আবদুল আজিজ বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মোজাহার ১০ বছর আগে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার দীঘিপাড়া গ্রামে নিজের মায়ের সঙ্গে বসবাস করতেন। দুই বছর আগে মা মারা গেলে স্ত্রী-সন্তানেরা তাঁকে বাগমারার নখোপাড়ায় নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে আসার পর জমিজমা লিখে নেওয়ার জন্য তাঁকে নির্যাতন শুরু করেন স্ত্রী-সন্তানেরা। বাধ্য হয়ে ২০ বিঘা জমির মধ্যে দুই ছেলের নামে ৬ বিঘা জমি লিখেও দেন। বাকি জমি লিখে না দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাই জমিজমার জন্য তাঁকে হত্যা করতে পারেন। তবে অন্য ঘটনাও থাকতে পারে। তাঁরা তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে কে বা কারা কেন তাঁকে হত্যা করেছেন।

ওসি আবুল কালাম আরও বলেন, আজ বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তাঁর মামা ও মামাতো ভাইদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাগমারা থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তিনি তাঁর পরিচয় জানাননি।