শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বড়াইগ্রামে চার শতাধিক  পরীক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:১০:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৭৭ Time View

বিশেষ প্রতিবেদক নাটোর.চার শতাধিক পরীক্ষার্থীকে বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

কিছু শিক্ষার্থীর বেতন বকেয়া থাকার কারণে তিনি সব পরীক্ষার্থীর খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে হল থেকে বের করে দেন। তিন-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থীর বেতন পরিশোধ করা থাকলেও কেউই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী সকাল ১০টায় ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয়। এর পর আকস্মিক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান পরীক্ষার হলে এসে কে কে বেতন পরিশোধ করেনি জানতে চান। এ সময় বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী বিদ্যালয়ের বেতন বকেয়া আছে বলে স্বীকার করে। এতে রাগান্বিত হয়ে প্রধান শিক্ষক খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে সব পরীক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেন। অনেকেই এ ঘটনাকে অপমানকর, মানহানিকর এবং লজ্জাজনক দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন।

অভিভাবক মোসলেমউদ্দিন মন্ডল, রঞ্জিত কুমার কুন্ডু, মুকুল হোসেনসহ অনেকেই জানান, যেসব পরীক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের বেতন বকেয়া রয়েছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এ ক্ষেত্রে যাদের বেতন পরিশোধ করা রয়েছে তাদের কাছ থেকে খাতা-প্রশ্ন কেড়ে হল থেকে বের করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এ ছাড়া বেতন আদায় করার জন্য এ রকম আচরণ রীতিমতো স্বেচ্ছাচারিতা ও আপত্তিকর।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নাটোর জেলা আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা জানান, যে সকল দরিদ্র শিক্ষার্থী বেতন দিতে পারেনি এবং যাদের বকেয়া নেই তাদের কাছ থেকে খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণই শিশু সুরক্ষা নীতিমালা ও আচরণবিধি পরিপন্থী হয়েছে। কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীদের মনে আঘাত দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি।

ওই বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক লাভলী বেগম জানান, খাতা ও প্রশ্ন বিতরণের আগে যদি প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা না নিতে নির্দেশ দিতেন তাহলে হয়তো ঠিক হতো। এখন প্রশ্ন বাইরে চলে গেছে এবং আমাদেরকে সারাদিন পরিশ্রম করে আবার প্রশ্ন তৈরী করতে হচ্ছে। এতে অর্থের অপচয় হলো।

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি যা করেছি, ঠিকই করেছি। আপনি পত্রিকার পাতায় বড় করে আমার বিরুদ্ধে খবর ছাপিয়ে দিন।

Tag :

বড়াইগ্রামে চার শতাধিক  পরীক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক

Update Time : ১০:১০:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২

বিশেষ প্রতিবেদক নাটোর.চার শতাধিক পরীক্ষার্থীকে বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

কিছু শিক্ষার্থীর বেতন বকেয়া থাকার কারণে তিনি সব পরীক্ষার্থীর খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে হল থেকে বের করে দেন। তিন-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থীর বেতন পরিশোধ করা থাকলেও কেউই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী সকাল ১০টায় ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয়। এর পর আকস্মিক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান পরীক্ষার হলে এসে কে কে বেতন পরিশোধ করেনি জানতে চান। এ সময় বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী বিদ্যালয়ের বেতন বকেয়া আছে বলে স্বীকার করে। এতে রাগান্বিত হয়ে প্রধান শিক্ষক খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে সব পরীক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেন। অনেকেই এ ঘটনাকে অপমানকর, মানহানিকর এবং লজ্জাজনক দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন।

অভিভাবক মোসলেমউদ্দিন মন্ডল, রঞ্জিত কুমার কুন্ডু, মুকুল হোসেনসহ অনেকেই জানান, যেসব পরীক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের বেতন বকেয়া রয়েছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এ ক্ষেত্রে যাদের বেতন পরিশোধ করা রয়েছে তাদের কাছ থেকে খাতা-প্রশ্ন কেড়ে হল থেকে বের করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এ ছাড়া বেতন আদায় করার জন্য এ রকম আচরণ রীতিমতো স্বেচ্ছাচারিতা ও আপত্তিকর।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নাটোর জেলা আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা জানান, যে সকল দরিদ্র শিক্ষার্থী বেতন দিতে পারেনি এবং যাদের বকেয়া নেই তাদের কাছ থেকে খাতা ও প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণই শিশু সুরক্ষা নীতিমালা ও আচরণবিধি পরিপন্থী হয়েছে। কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীদের মনে আঘাত দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি।

ওই বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক লাভলী বেগম জানান, খাতা ও প্রশ্ন বিতরণের আগে যদি প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা না নিতে নির্দেশ দিতেন তাহলে হয়তো ঠিক হতো। এখন প্রশ্ন বাইরে চলে গেছে এবং আমাদেরকে সারাদিন পরিশ্রম করে আবার প্রশ্ন তৈরী করতে হচ্ছে। এতে অর্থের অপচয় হলো।

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি যা করেছি, ঠিকই করেছি। আপনি পত্রিকার পাতায় বড় করে আমার বিরুদ্ধে খবর ছাপিয়ে দিন।