সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চির নিদ্রায় শায়িত হলেন অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা আকবর বল্টু

‘অভিমান করে জাতিয় দিবসগুলোতে আসতেন না মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ওরফে বল্টু আকবর’(৭৪)। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন যেমন জিদি তেমন সাহসী। অন্যায়ের সাথে আপোস করেননি কোন দিন। ৭১ এ যুদ্ধের পর থেকেই সংসার নামক শব্দটা ভুলে যান তিনি। ঘুড়ে বেড়াতেন দেশের নানা প্রান্তে। বিনা বেতনে শিশুদের শিক্ষা দেওয়াই ছিলো তাঁর কাজ।


অত্যান্ত অভিমানী মানুষ হলেও তার সার্বক্ষণিক হাসিমাখা মুখটাই বলে দিতো তাঁর মায়া আর ভালোবাসাটা কতটা প্রবল। দেশের প্রতি যেমন প্রচন্ড ভালোবাসা ছিলো তেমনি মানুষের প্রতিও ছিলো ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ যা বাস্তবে না দেখলে বিশ্বাস করার উপায় ছিলো না। সংসার বিমুখ অভিমানী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সমপ্রতি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার নিজ এলাকায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামে মারা যান। রোবার রাত ১টার দিকে মারা যান তিনি। সোমবার ২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তারের উপস্থিতিতে থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে জানাজা শেষে স্থানীয় করবস্থানে বাবা মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্য কালে তিনি এক ছেলে দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের আকবর হোসেন (৭৪) বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশকে শত্রু মুক্ত করতে ৭ নং সেক্টরে ট্রেনিং প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার নুরুজ্জামানের অধিনে ৩৫০জন যোদ্ধা ট্রেনিং নেন পলাশডাঙ্গা ও মানকের চর (ইন্ডিয়ায়)। তিনি ঐ দল থেকে , বগুড়া, রংপুর,কুড়িগ্রাম ও সর্বশেষ আমজাদ হোসেন মিলনের অধিনে ৮-১০ জনের দলে বিভক্ত হয়ে নওগাঁ জেলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় যুদ্ধ করে মাতৃভুমিকে শত্রুমুক্ত করেন। তাঁর গেজেট নং-১২৩৩,লাল বার্তা ০৩০৪০৫০০৬৪। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই চাকুরীর চিন্তা না করে দেশের প্রত্যান্ত এলাকায় শিশুদের বিনা বেতনে শিক্ষা কার্যক্রমে জড়িয়ে পরেন। পরিবার স্বজনদের কথা না ভেবে এভাবেই পার করেন পুরো জীবন।

Tag :
About Author Information

Daily Banalata

চির নিদ্রায় শায়িত হলেন অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা আকবর বল্টু

Update Time : ০১:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

‘অভিমান করে জাতিয় দিবসগুলোতে আসতেন না মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ওরফে বল্টু আকবর’(৭৪)। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন যেমন জিদি তেমন সাহসী। অন্যায়ের সাথে আপোস করেননি কোন দিন। ৭১ এ যুদ্ধের পর থেকেই সংসার নামক শব্দটা ভুলে যান তিনি। ঘুড়ে বেড়াতেন দেশের নানা প্রান্তে। বিনা বেতনে শিশুদের শিক্ষা দেওয়াই ছিলো তাঁর কাজ।


অত্যান্ত অভিমানী মানুষ হলেও তার সার্বক্ষণিক হাসিমাখা মুখটাই বলে দিতো তাঁর মায়া আর ভালোবাসাটা কতটা প্রবল। দেশের প্রতি যেমন প্রচন্ড ভালোবাসা ছিলো তেমনি মানুষের প্রতিও ছিলো ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ যা বাস্তবে না দেখলে বিশ্বাস করার উপায় ছিলো না। সংসার বিমুখ অভিমানী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সমপ্রতি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার নিজ এলাকায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামে মারা যান। রোবার রাত ১টার দিকে মারা যান তিনি। সোমবার ২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তারের উপস্থিতিতে থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে জানাজা শেষে স্থানীয় করবস্থানে বাবা মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্য কালে তিনি এক ছেলে দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের আকবর হোসেন (৭৪) বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশকে শত্রু মুক্ত করতে ৭ নং সেক্টরে ট্রেনিং প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার নুরুজ্জামানের অধিনে ৩৫০জন যোদ্ধা ট্রেনিং নেন পলাশডাঙ্গা ও মানকের চর (ইন্ডিয়ায়)। তিনি ঐ দল থেকে , বগুড়া, রংপুর,কুড়িগ্রাম ও সর্বশেষ আমজাদ হোসেন মিলনের অধিনে ৮-১০ জনের দলে বিভক্ত হয়ে নওগাঁ জেলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় যুদ্ধ করে মাতৃভুমিকে শত্রুমুক্ত করেন। তাঁর গেজেট নং-১২৩৩,লাল বার্তা ০৩০৪০৫০০৬৪। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই চাকুরীর চিন্তা না করে দেশের প্রত্যান্ত এলাকায় শিশুদের বিনা বেতনে শিক্ষা কার্যক্রমে জড়িয়ে পরেন। পরিবার স্বজনদের কথা না ভেবে এভাবেই পার করেন পুরো জীবন।