শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলেজ ফাঁকি দিয়ে প্রেম! স্বর্ণদীপে প্রেমিক যুগলের বিয়ে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৮৬ Time View

গুরুদাসপুর(নাটোর)প্রতিনিধি. কলেজ ফাঁকি দিয়ে কোয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া পারি দিয়ে দুর্গম এলাকার চলনবিলে অবস্থিত স্বর্ণদীপ কফি হাউজে এসে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার অভিযোগে স্থানীয়রা আটক করে প্রেমিক যুগলকে।

পরে স্থানীয়রা উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে কাবিন ধার্য করে কাজী ডেকে বিয়ে দেয়। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের চলনবিল বিলশা এলাকার ‘স্বর্ণ দ্বীপ’ কফি হাউসে আনুমানিক দুপুর ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। আটকৃত প্রেমিক যুগলের বাড়ি উপজেলার ঝাউপাড়া এলাকায়। দুই জনই কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, প্রেমিক যুগল জুয়েল আহম্মেদ (২০) উপজেলার ঝাউপাড়া গ্রামের মোঃ মহাতাব আলীর ছেলে ও    একই এলাকার মেয়ে। দুজনই স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন যাবৎ দুই পরিবারের অজান্তেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। রোববার সকালে চলনবিলের স্বর্ণ দ্বীপ কফি হাউসে ঘুরতে আসেন প্রেমিক-প্রেমিকা। গল্পের এক পর্যায়ে আপত্তিকর অবস্থায় জড়িয়ে পড়ে দুজন। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেলে তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এরপর উভয় পরিবারের সম্মতিতে দুজনের বিয়ে দেওয়া হয়।

বিলশা এলাকার যুবক সৈয়কত ইসলাম সুমন জানান, চলনবিলে বর্ষায় নৌকা আর শুকনোয় শরিষা ফুলের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা আসেন। বিলশায় কিছু কফি হাউস রয়েছে। তার মধ্যে স্বর্ণ দ্বীপ নামের একটি কফি হাউজে দীর্ঘদিন যাবৎ স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা অসামাজিক কার্যকালাপ করে আসছিলো। আমরা এলাকার প্রায় ৩০-৪০ জন যুবক অশ্লিল কার্যক্রম বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে সকালে গোপনে স্বর্ণ দ্বীপ কফি হাউসের একটি কক্ষে গিয়ে দেখি দুই জন ছেলে মেয়ে অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হয়েছে। তৎখনাত তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে উভয় পক্ষের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে দুই জন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় দুই পরিবারের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে কাজী ডেকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই চলনবিলের পরিবেশ সকল সময় ভাল থাকুক।
স্থানীয় কাজী সুইট হোসেন জানান, এলাকাবাসী ডাকার পরে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় ৫ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য দোয়া করবেন।

প্রেমিক জুয়েল আহম্মেদ ও নুপুর খাতুন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের প্রেমের সম্পর্ক। আজকের কার্যক্রমের জন্য আমরা ক্ষমা চাই। আমাদের ভূল হয়েছে।

তবে স্বর্ণ দ্বীপ কফি হাউসের সত্তাধীকারি রমিজুল করিম জানান, এমন ধরনের ঘটনা ঘটার কথা না। দুর-দুরান্ত থেকে ছেলে-মেয়েরা আসে চা-কফি খেয়ে চলে যায়। তারপরও পরবর্তীতে সাবধানতা অবলম্বন করা হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন জানান, ঘটনাটি শোনার পরপরই তাদের দুজনকে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পরবর্তীতে যেন এ  ধরনের অসামাজিক কার্যক্রম না হয় তার বিষয়ে সতর্ক থাকা হবে।

Tag :

কলেজ ফাঁকি দিয়ে প্রেম! স্বর্ণদীপে প্রেমিক যুগলের বিয়ে

Update Time : ০৬:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

গুরুদাসপুর(নাটোর)প্রতিনিধি. কলেজ ফাঁকি দিয়ে কোয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া পারি দিয়ে দুর্গম এলাকার চলনবিলে অবস্থিত স্বর্ণদীপ কফি হাউজে এসে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার অভিযোগে স্থানীয়রা আটক করে প্রেমিক যুগলকে।

পরে স্থানীয়রা উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে কাবিন ধার্য করে কাজী ডেকে বিয়ে দেয়। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের চলনবিল বিলশা এলাকার ‘স্বর্ণ দ্বীপ’ কফি হাউসে আনুমানিক দুপুর ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। আটকৃত প্রেমিক যুগলের বাড়ি উপজেলার ঝাউপাড়া এলাকায়। দুই জনই কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, প্রেমিক যুগল জুয়েল আহম্মেদ (২০) উপজেলার ঝাউপাড়া গ্রামের মোঃ মহাতাব আলীর ছেলে ও    একই এলাকার মেয়ে। দুজনই স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন যাবৎ দুই পরিবারের অজান্তেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। রোববার সকালে চলনবিলের স্বর্ণ দ্বীপ কফি হাউসে ঘুরতে আসেন প্রেমিক-প্রেমিকা। গল্পের এক পর্যায়ে আপত্তিকর অবস্থায় জড়িয়ে পড়ে দুজন। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেলে তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এরপর উভয় পরিবারের সম্মতিতে দুজনের বিয়ে দেওয়া হয়।

বিলশা এলাকার যুবক সৈয়কত ইসলাম সুমন জানান, চলনবিলে বর্ষায় নৌকা আর শুকনোয় শরিষা ফুলের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা আসেন। বিলশায় কিছু কফি হাউস রয়েছে। তার মধ্যে স্বর্ণ দ্বীপ নামের একটি কফি হাউজে দীর্ঘদিন যাবৎ স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা অসামাজিক কার্যকালাপ করে আসছিলো। আমরা এলাকার প্রায় ৩০-৪০ জন যুবক অশ্লিল কার্যক্রম বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে সকালে গোপনে স্বর্ণ দ্বীপ কফি হাউসের একটি কক্ষে গিয়ে দেখি দুই জন ছেলে মেয়ে অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হয়েছে। তৎখনাত তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে উভয় পক্ষের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে দুই জন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় দুই পরিবারের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে কাজী ডেকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই চলনবিলের পরিবেশ সকল সময় ভাল থাকুক।
স্থানীয় কাজী সুইট হোসেন জানান, এলাকাবাসী ডাকার পরে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় ৫ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য দোয়া করবেন।

প্রেমিক জুয়েল আহম্মেদ ও নুপুর খাতুন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের প্রেমের সম্পর্ক। আজকের কার্যক্রমের জন্য আমরা ক্ষমা চাই। আমাদের ভূল হয়েছে।

তবে স্বর্ণ দ্বীপ কফি হাউসের সত্তাধীকারি রমিজুল করিম জানান, এমন ধরনের ঘটনা ঘটার কথা না। দুর-দুরান্ত থেকে ছেলে-মেয়েরা আসে চা-কফি খেয়ে চলে যায়। তারপরও পরবর্তীতে সাবধানতা অবলম্বন করা হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন জানান, ঘটনাটি শোনার পরপরই তাদের দুজনকে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পরবর্তীতে যেন এ  ধরনের অসামাজিক কার্যক্রম না হয় তার বিষয়ে সতর্ক থাকা হবে।