শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাকা না পেয়ে পাওনাদারকে গাছে বেঁধে পেটালেন যুবলীগ নেতা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:২৪:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২০
  • ২১০ Time View
বিশেষ প্রতিবেদক.

সুনামগজের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় পাওনা টাকা না পেয়ে স্কুলের দপ্তরীকে গাছে বেঁধে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহনুর মিয়া (৩৫) উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি গত রোববার দুপুরে মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের গাছের গোড়ায় বেঁধে স্কুলের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে (৩২) মারধর করেন। আজ মঙ্গলবার এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার নির্যাতনের শিকার তোফায়েল আহমদ বাদী হয়ে শাহনুর মিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তোফায়েল আহমদ শিমুলবাঁক ইউনিয়নের মুক্তাখাই গ্রামের ফজর আলীর ছেলে। অভিযুক্ত তোফায়েল আহমদ একই গ্রামের মনোয়ার আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিন দোলন বলেন, ‘নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরপরই শাহনুর মিয়াকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী তোফায়েল আহমদ জামিনদার হিসেবে শাহানুর মিয়ার কাছ থেকে এক লাখ টাকা ধার নিয়ে তার চাচাতো ভাই শাহজাহানকে দেন। ঋণ গ্রহিতা শাহজাহান মিয়া নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেওয়ায় শাহানুর মিয়া বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার শালিস হলেও জামিনদার তোফায়েল আহমদ ও তার চাচাতো ভাই শাহজাহান ঋণের টাকা পরিশোধ করেননি।

এরপর ঋণগ্রহিতা শাহজাহান মিয়া গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। দীর্ঘ দুই বছরেও পাওনা টাকা না পেয়ে গত রোববার দুপুরে মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে বিদ্যালয়ের সামনে পেয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গাছের গোড়ায় বেধে মারধর করেন পাওনাদার শাহনুর মিয়া। এসময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন তিনি। মারপিটে তোফায়েলের শরীরের বিভিন্ন জায়গা জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তোফায়েল আহমদকে উদ্ধার করেন।

মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য তাজ উদ্দিন বলেন, ‘টাকা পয়সা লেনদেনের কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। শাহানুর মিয়া তার পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে জামিনদার মুক্তাখাই প্রাইমারি স্কুলের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে মারপিট করেছে।’

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘দপ্তরীকে মারধরের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। শাহনুর মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Tag :

টাকা না পেয়ে পাওনাদারকে গাছে বেঁধে পেটালেন যুবলীগ নেতা

Update Time : ০৪:২৪:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২০
বিশেষ প্রতিবেদক.

সুনামগজের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় পাওনা টাকা না পেয়ে স্কুলের দপ্তরীকে গাছে বেঁধে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহনুর মিয়া (৩৫) উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি গত রোববার দুপুরে মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের গাছের গোড়ায় বেঁধে স্কুলের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে (৩২) মারধর করেন। আজ মঙ্গলবার এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার নির্যাতনের শিকার তোফায়েল আহমদ বাদী হয়ে শাহনুর মিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তোফায়েল আহমদ শিমুলবাঁক ইউনিয়নের মুক্তাখাই গ্রামের ফজর আলীর ছেলে। অভিযুক্ত তোফায়েল আহমদ একই গ্রামের মনোয়ার আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিন দোলন বলেন, ‘নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরপরই শাহনুর মিয়াকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী তোফায়েল আহমদ জামিনদার হিসেবে শাহানুর মিয়ার কাছ থেকে এক লাখ টাকা ধার নিয়ে তার চাচাতো ভাই শাহজাহানকে দেন। ঋণ গ্রহিতা শাহজাহান মিয়া নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেওয়ায় শাহানুর মিয়া বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার শালিস হলেও জামিনদার তোফায়েল আহমদ ও তার চাচাতো ভাই শাহজাহান ঋণের টাকা পরিশোধ করেননি।

এরপর ঋণগ্রহিতা শাহজাহান মিয়া গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। দীর্ঘ দুই বছরেও পাওনা টাকা না পেয়ে গত রোববার দুপুরে মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে বিদ্যালয়ের সামনে পেয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গাছের গোড়ায় বেধে মারধর করেন পাওনাদার শাহনুর মিয়া। এসময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন তিনি। মারপিটে তোফায়েলের শরীরের বিভিন্ন জায়গা জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তোফায়েল আহমদকে উদ্ধার করেন।

মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য তাজ উদ্দিন বলেন, ‘টাকা পয়সা লেনদেনের কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। শাহানুর মিয়া তার পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে জামিনদার মুক্তাখাই প্রাইমারি স্কুলের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে মারপিট করেছে।’

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘দপ্তরীকে মারধরের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। শাহনুর মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’